Site icon টেলিগ্রাফ বাংলাদেশ

সুন্দরবনে বনদস্যুদের সাথে ঘন্টাব্যাপী গুলি বিনিময়ের পরে জিম্মি ১০ জেলে উদ্ধার

প্রতিনিধি, শ্যামনগর (সাতক্ষীরা)।  সুন্দরবনে বনদস্যু বাহিনীর সঙ্গে ঘন্টাব্যাপী গুলি বিনিময়ের পর জিম্মি ১০ জন জেলেকে উদ্ধার করেছে বন বিভাগের সদস্যরা। রোববার (৩রা অক্টোবর) দুপুরের দিকে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের চুনকুড়ি নদীর তকতাখানি খালের মধ্যে ঘটনাটি ঘটে। পরবর্তীতে বনের মধ্যে তল্লাশি চালিয়ে জিম্মি কৃত ১০ জন জেলেকে উদ্ধারসহ বনদস্যুদের ব্যবহৃত তিনটি নৌকা, সোলার প্যানেল ও তাজা গুলি উদ্ধার করে রাত আটটার দিকে লোকালয়ে ফেরে বন বিভাগের সদস্যরা।

উদ্ধারকৃত জেলেরা হলেন- শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের হরিনগর চুনকুড়ি এলাকার দাউদ গাজীর ছেলে আব্দুল আলিম (৬২), একই এলাকা মৃত বাহার আলী সরদারের ছেলে নুর ইসলাম (৪৫), আব্দুল আলিম গাজীর ছেলে রবিউল ইসলাম (২৮), ছোট ভেটখালী এলাকার ফজলু সানার ছেলে হাফিজুর রহমান (৪৫), একই এলাকার মৃত নজরুল ফকিরের ছেলে রাজু ফকির (৪৭), মৃত মজিদ গাজীর ছেলে শফিকুল ইসলাম (৪৫), নূরনগর ইউনিয়নের দুরমুজখালী এলাকার মৃত লিয়াকত মল্লিকের ছেলে রফিকুল ইসলাম (৪৫), মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের হরিনগর এলাকার খলিলুর রহমান গাজীর ছেলে মফিজুর (৩৮), একই এলাকার মৃত ইমান আলী সানার ছেলে মুছাক সানা ও মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের বড় ভেটখালী এলাকার মৃত জয়নাল গাজীর ছেলে নজরুল ইসলাম (৫৭)।

সাতক্ষীরা রেঞ্জের রেঞ্জ সহকারী হাবিবুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি পশ্চিম সুন্দরবনে বনদস্যুরা বেশকিছু জেলেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করে। বনদস্যুদের কাছে আরও ১৬ বা ১৭ জেলে জিম্মি রয়েছে বলে ফিরে আসা জেলেদের মাধ্যমে তথ্য পেয়ে বনবিভাগের পক্ষ থেকে অভিযানের সিদ্ধান্ত হয়। একপর্যায়ে বিভাগীয় ও সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তার নির্দেশনা মতে সকাল থেকে কদমতলা স্টেশন কর্মকর্তা সোলায়মানের নেতৃত্বে পশ্চিম সুন্দরবনের গুরুত্বপূর্ণ এলাকসমূহে সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়।

অভিযানে অংশ নেওয়া এ বনকর্মকর্তা আরও বলেন, রোববার দুপুরের দিকে তাড়া চুনকুড়ি নদীর তকতাখালী খালে পৌঁছায়। এ সময় শুরুতে বনদস্যুরা গুলি ছুঁড়তে শুরু করলে তারাও পাল্টা গুলি ছুড়ে। একপর্যায়ে বনদস্যুরা বনের মধ্যে পালিয়ে গেলে জিম্মি ১০জন জেলেকে উদ্ধার করা হয়। অভিযানে কৈখালী, বুড়িগোয়ালীনি স্টেশনসহ মুন্সিগঞ্জ, দোবেকী ও কাছিকাটা টহলফাঁড়ির সদস্যরা অংশ নেয়। উদ্ধারকৃত গুলি সোমবার শ্যামনগর থানায় জমা দেওয়া হবে। পায়ের চিহ্ন দেখে বনের মধ্যে যাওয়ার পরও বনদস্যুদের আটক করা যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, সন্দেহজনক এলাকাগুলোতে টহল জোরদার করা হবে।

উদ্ধার হওয়া জেলে মুছা সানা বলেন, নৌকাপ্রতি ৩০ থেকে ৫০ হাজার করে দাবি করেছিল চার সদস্যের বনদস্যু দলটি। প্রতিটি নৌকা থেকে তারা একজনকে মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করে নিজেদের কাছে জিম্মি করেছিল। ইতিমধ্যে জিম্মি জেলেদের পরিবারের কাছ থেকে বিকাশে মুক্তিপণের টাকা নিয়ে ২০ থেকে ২২ জন জেলেকে বনদস্যু দলটি ছেড়ে দিয়েছে। তার পরিবারের টাকা সংগ্রহ করতে দেরি হওয়ায় তাকে পাঁচদিন ধরে আটক রাখা হয়।

Exit mobile version