Site icon টেলিগ্রাফ বাংলাদেশ

সূর্যের বিশাল বিস্ফোরণ: বিশ্বজুড়ে রেডিও সংকেত বিচ্ছিন্ন, বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা

ডেস্ক নিউজ।

বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে সূর্যের একাধিক শক্তিশালী বিস্ফোরণের কারণে। ১৩ ও ১৪ মে সূর্য থেকে নির্গত ‘এক্স-শ্রেণির সৌরশিখা’র ফলে আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে রেডিও সংকেত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, এই ধরনের সৌরঝড় পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রে আঘাত হানলে বিশ্বব্যাপী যোগাযোগ ও প্রযুক্তি ব্যবস্থায় চরম বিপর্যয় ঘটতে পারে।

সূর্যের অভ্যন্তরীণ তাপীয় বিক্রিয়া বর্তমানে অতিমাত্রায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এর উৎস একটি বৃহৎ সানস্পট বা কালো দাগ, যা বর্তমানে সরাসরি পৃথিবীর দিকে মুখ করে আছে। এখান থেকেই ১৩ মে বেলা ১১টা ৩৮ মিনিটে X-1.2 মাত্রার একটি সৌরশিখা নির্গত হয়। পরদিন, ১৪ মে আরও শক্তিশালী X-2.7 মাত্রার শিখা ছড়িয়ে পড়ে।

এ ধরনের সৌর অগ্ন্যুৎপাতকে ‘করোনাল মাস ইজেকশন’ বলা হয়। এটি যদি পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রকে আঘাত করে, তবে সম্ভাব্য ক্ষতির মধ্যে রয়েছে কৃত্রিম উপগ্রহের বিকল হয়ে যাওয়া, বিদ্যুৎ সরবরাহে বিপর্যয়, মোবাইল ও ইন্টারনেট যোগাযোগে সমস্যা এবং পরিবহণ ও ডিজিটাল সেবায় বিঘ্ন। ট্রেন, মেট্রো ও বিমানের চলাচল এবং জ্বালানি সরবরাহেও পড়তে পারে এর বিরূপ প্রভাব।

এই ঝুঁকি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র সরকার ৮ মে কলোরাডোতে ‘মহাকাশ আবহাওয়া প্রস্তুতি মহড়া’ চালায়। মহড়ায় অংশ নেয় দেশটির বিমান রক্ষী বাহিনী, জাতীয় সমুদ্র ও বায়ুমণ্ডল সংস্থা (NOAA) এবং স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা বিভাগসহ একাধিক সংস্থা। মহড়ায় ২০২৮ সালে একটি ভয়াবহ সৌরঝড়ের কাল্পনিক পরিস্থিতি অনুশীলন করা হয়, যার ফলে পুরো দেশের বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি বাস্তবেই এই ধরনের সৌরঝড় পৃথিবীতে আঘাত হানে, তবে ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে শুরু করে উত্তর মেরু পর্যন্ত রেডিও যোগাযোগ বিপর্যস্ত হতে পারে। পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা উপগ্রহের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যার ফলে জিপিএস, ভূপর্যবেক্ষণ ও মোবাইল নেটওয়ার্কেও বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটতে পারে।

Exit mobile version