Site icon টেলিগ্রাফ বাংলাদেশ

বেনাপোলে দাম্পত্য মৃত্যু: আত্মহত্যা নাকি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড?

যশোর প্রতিনিধি।

যশোরের বেনাপোল সীমান্তের রঘুনাথপুর মাঠ থেকে এক দম্পতির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনাটি স্থানীয় জনমনে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। স্বামী মনিরুজ্জামানের মরদেহ বাড়ির পাশে একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় এবং স্ত্রীর মরদেহ কাছাকাছি মাঠে পাওয়া যায়। পরিবারের দাবি, এটি নিছক আত্মহত্যা নয়—বরং একটি পরিকল্পিত হত্যা।


❖ ঘটনাক্রম বিশ্লেষণ


❖ আত্মহত্যা না হত্যাকাণ্ড?

পুলিশ প্রথমিকভাবে আত্মহত্যা অথবা হত্যার সম্ভাবনা উভয়টিই উড়িয়ে দিচ্ছে না। তবে স্ত্রীর শরীরে আঘাতের চিহ্ন এবং স্বজনদের বক্তব্য অনুযায়ী পারিবারিক কোনো কলহের অনুপস্থিতি, আত্মহত্যার ব্যাখ্যাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

❖ পরিবারের অভিযোগ

মনিরুজ্জামানের বোন ফাতেমা অভিযোগ করেন:

এছাড়াও তারা বলছেন, ঘরের কেউ ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় দুইজন কিভাবে নিখোঁজ হলেন—তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।


❖ পুলিশের অবস্থান

বেনাপোল পোর্ট থানার উপপরিদর্শক রাশেদুজ্জামান বলেন:

“মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। নারীর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না।”

তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে এখনও পুলিশ আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো গ্রেফতারের ঘোষণা দেয়নি বা সন্দেহভাজনের পরিচয় প্রকাশ করেনি।


❖ সম্ভাব্য মোটিভ কী?

অনুসন্ধানে উঠে এসেছে কয়েকটি সম্ভাব্য মোটিভ:

  1. সম্পর্ক জনিত কারণে হত্যাকাণ্ড: পারিবারিক দ্বন্দ্বের বাইরেও দাম্পত্য বা বহিরাগত সম্পর্কের কারণ হতে পারে।
  2. সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদ: স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মনিরুজ্জামান সাম্প্রতিককালে জমিজমা নিয়ে একটি বিরোধে জড়িয়েছিলেন।
  3. সীমান্ত এলাকা হওয়ায় অপরাধচক্রের সম্পৃক্ততা: বেনাপোল সীমান্ত হওয়ায় এখানে বিভিন্ন চোরাচালান চক্র সক্রিয়—তাদের কেউ সম্পৃক্ত কি না, তাও তদন্তাধীন।

❖ এলাকার প্রতিক্রিয়া

ঘটনার পর এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। প্রতিবেশীরা জানান, দম্পতিকে কখনো ঝগড়া করতে দেখা যায়নি, তারা ছিলেন শান্ত প্রকৃতির মানুষ। অনেকেই এই মৃত্যুকে অস্বাভাবিক ও রহস্যজনক বলে আখ্যা দিয়েছেন।


❖ তদন্তে কী থাকতে হবে?

বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ঘটনার দ্রুত তদন্তে যেসব বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত:


❖ উপসংহার

এই দম্পতির মৃত্যু আত্মহত্যা না পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড—এ প্রশ্নের উত্তর এখনো ঝুলে আছে। তদন্তের ফলাফলের ওপরই নির্ভর করছে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন। তবে পরিবারের দাবি, প্রতিবেশীদের বক্তব্য এবং প্রাথমিক আলামত একে একটি সহিংস অপরাধ হিসেবে তুলে ধরছে। এখন দেখার বিষয়—আইনি তদন্ত কত দ্রুত এবং কতটা নিরপেক্ষভাবে সত্যের নাগাল পায়।

Exit mobile version