Site icon টেলিগ্রাফ বাংলাদেশ

শ্যামনগরে অস্ত্রসহ সুন্দরবনের দুই জলদস্যু আটক

শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) থেকে নিজস্ব প্রতিনিধি।
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে অস্ত্রসহ সুন্দরবনের দুই জলদস্যুকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়েছে স্থানীয় জনতা। সুন্দরবন সংলগ্ন যতীন্দ্রনগর ও মীরগাং একালা থেকে সোমবার রাত সাড়ে ৯টার সময় একজনকে ও রাত ১১টার সময় অপরজনকে আটক করে। দুই জলদস্যুর দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের ব্যবহৃত নৌকা তল্লাশি করে একটি একনলা বন্দুক উদ্ধার করে পুলিশ।

আটককৃত জলদস্যুরা হলেন, শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ কদমতলা গ্রামের নওশাদ গাজীর ছেলে নজির গাজী (৬৫) ও কয়রা থানার গোবরা গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে দিদারুল ইসলাম (৪০)।

স্থানীয়রা জানায় রাত সাড়ে আটটার দিকে অপরিচিত ব্যক্তি সুন্দরবন এলাকার যতীন্দ্রনগর বাজারে এসে পৌঁছায়। নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার জন্য মাইক্রো বা ভাড়ায় চালিত মটর সাইকেলের খোঁজ করছিল। একপর্যায়ে তাদের সন্দেহ হলে নাম-পরিচয়সহ সুন্দরবন এলাকায় আসার কারণ জানতে চাইলে তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বাজারে উপস্থিত লোকজন ধাওয়া করলে অন্যরা পালিয়ে যায় এবং দিদারুলকে আটকের পর পুলিশকে খবর দেয়। দিদারুল জিজ্ঞাসাবাদে নজিরের নাম করে। পরবর্তীতে সুন্দরবন সংলগ্ন নদীর চরে রাখা তাদের ব্যবহারিত নৌকার পাশ থেকে নজিরকে আটক করে গ্রামবাসী। কিন্তু নজিরের ছেলে পালিয়ে যায়।

পরবর্তীতে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির মোল্লা ঘটনাস্থলে পৌছে নজিরকে আটকের পাশাপাশি তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের ব্যবহৃত মাছ শিকারের নৌকার মধ্যে থেকে একটি একনলা বন্দুক ও একটি দা উদ্ধার করে।

আটক নজির গাজী বলেন, ১০ হাজার টাকার চুক্তিতে সুন্দরবনের জোনাব বাহিনীর দুই সদস্যকে যতীন্দ্রনগর বাজার পর্যন্ত পৌছে দেয়ার দায়িত্বে ছিলেন।

আটক দিদারুল বলেন, তিনি নজির গাজীর শ্রমিক হিসেবে সুন্দরবনে কাজ করেন। নজিরের ছেলে আব্দুর রহিমের সাথে পরিচয় হওয়ার পর থেকে সুন্দরবন কাজ করতে শুরু করেন। সে আরও বলেন সুন্দরবন থেকে তারা মীরগাঙ এলাকায় মনি নামের একজনের বাড়িতে এসে ওঠেন। তারপর বাড়ি যাওয়ার জন্য গাড়ি খোঁজ করছিলেন

এদিকে শাহাজান ও আতিয়ারসহ একাধিক গ্রামবাসী জানিয়েছে জোনাব বাহিনী এখন সুন্দরবনে খুব বেশী তৎপর না। বরং নজির ও তার ছেলে আব্দুর রহিম দিদারুলসহ মুন্সিগঞ্জ আটিরউপর এলাকার কয়েকজনকে নিয়ে জোনাব নামে সুন্দরবনে দস্যুতা করে। পরিবহন ব্যবসার সাথে জড়িত মুন্সিগঞ্জের এক ব্যক্তির নৌকার জেলে হিসেবে দিদারুল সুন্দরবনে প্রবেশ করে বলেও তাদের দাবি। এসব ব্যক্তি আরও জানান প্রায় প্রতিটি জেলে নৌকা একাধিকবার জলদস্যুদের কবলে পড়লেও অজ্ঞাত কারণে উক্ত পরিবহন ব্যবসায়ীর কোন নৌকা থেকে জেলে উঠিয়ে নেয়ার ঘটনা কখনো শোনা যায়নি।

শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির মোল্লা বলেন, নজির ও দিদারুলকে আটকের পর থানায় নেয়া হয়েছে। এবং নজিরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের ব্যবহারিত নৌকা থেকে একটি বন্দুক ও একটি দা উদ্ধার করা হয়েছে। তারা মাছ শিকারীর ছদ্মবেশে সুন্দরবনে প্রবেশ করতেন বলে প্রাথমিক তথ্য মিলেছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাহিনীর নাম-পরিচয়সহ বিস্তারিত তথ্য জানাযাবে।

Exit mobile version