ডেস্ক নিউজ।
গাজার নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরে পানির জন্য জড়ো হওয়া শিশু ও বাসিন্দাদের ওপর ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত আটজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ছয়জনই শিশু বলে জানিয়েছেন স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। হামলায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৭ জন।
রবিবারের এই হামলার ঘটনাটি ঘটেছে একটি পানির বিতরণকেন্দ্রে, যেখানে চরম জলসংকটে ভোগা বাসিন্দারা বোতল ও পাত্র হাতে পানি সংগ্রহে এসেছিলেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ইসলামিক জিহাদের একজন যোদ্ধাকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। তবে ‘কারিগরি ত্রুটির’ কারণে ক্ষেপণাস্ত্র নির্ধারিত লক্ষ্য থেকে কয়েক মিটার দূরে পড়ে। এতে বেসামরিক হতাহতের ঘটনায় তারা দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
গাজায় জ্বালানির ঘাটতির কারণে পরিশোধন ও পয়ঃনিষ্কাশন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় পানির জন্য মানুষের নির্ভরতা এখন কিছু বিতরণকেন্দ্রের ওপরই সীমাবদ্ধ।
একই দিনে গাজা শহরের একটি ব্যস্ত বাজারে ইসরায়েলি আরেকটি হামলায় ১২ জন নিহত হন। ফিলিস্তিনি সূত্র জানায়, নিহতদের মধ্যে একজন খ্যাতিমান হাসপাতাল পরামর্শকও ছিলেন।
রবিবার ভোররাতে গাজার একটি বাড়িতে আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় একই পরিবারের বহু সদস্য প্রাণ হারান। ওই পরিবারটি দক্ষিণাঞ্চল থেকে সরে এসে ওই বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল। ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে নিহতদের একজন আত্মীয় বলেন, “শিশুরা কী অপরাধ করেছিল? গাজায় আর কোনো জায়গাই নিরাপদ নয়।”
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৮ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। শুধুমাত্র গত ২৪ ঘণ্টায়ই মৃত্যু হয়েছে আরও ১৩৯ জনের। নিহতদের অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু।
এদিকে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে দোহায় মার্কিন প্রস্তাবিত ৬০ দিনের এক প্রস্তাব নিয়ে পরোক্ষ আলোচনা চললেও তা অচলাবস্থায় পড়েছে। উভয় পক্ষই আলোচনার ব্যর্থতার জন্য একে অপরকে দায়ী করছে। মূল বিরোধ দেখা দিয়েছে গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার সংক্রান্ত ইস্যুতে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস নেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ১,২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫১ জনকে গাজায় নিয়ে যায়। বর্তমানে ধারণা করা হয়, সেখানে থাকা ৫০ জন জিম্মির মধ্যে অন্তত ২০ জন এখনও জীবিত রয়েছেন।