জন্ম থেকেই দুইজনই কথা বলতে পারেনা। ছিলোনা কোন পরিচয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে দুই বাকপ্রতিবন্ধীর চেনা-জানা অতঃপর বিয়ে। দেখে বুঝার উপায় নেই যে বর কনে বাকপ্রতিবন্ধী। বৃহষ্পতিবার এমনই এক যুগলের বিয়ে সম্পন্ন হলো যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার সদুল্লাপুর গ্রামে কনের মামা বাড়িতে।
বর-কনে হলেন,ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারি উপজেলার চরবর্ণী গ্রামের রেজাউল করিমের জেষ্ঠ্য বাকপ্রতিবন্ধী সন্তান শামীমুর রহমান সৌরভ এবং বাঘারপাড়া উপজেলার সদুল্লাপুর গ্রামের মৃত সৈয়দ কেরামত হোসেনের মেয়ে বাকপ্রতিবন্ধী তামান্না খাতুন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বর শামীমুরের বাকপ্রতিবন্ধী বন্ধুরাই এ বিয়ের ঘটক। তঁারাই কনের ছবি শামীমুরকে দেয়। পছন্দ হওয়ায় পারিবারিক দেখাদেখি পরে সামাজিকতা সম্পন্ন হয়। এই বিয়ে নিয়ে এলাকাবাসীর কৌতুহলের শেষ ছিলো না। তবে সবার আগ্রহ বরকে দেখা ও বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। কারন দুইজনইতো কথা বলতে পারে না। বিয়ের প্যাণ্ডেলও ছিলো জমকালো। দাওয়াতীরাও সংখ্যায় কম না। বরযাত্রীদেরও বেশীরভাগ ছিলেন বাকপ্রতিবন্ধী। বর ৫ মাইক্রো ১টি বাস যোগে কনের বাড়িতে বরযাত্রী পৌছে যায়। শতাধিক বরযাত্রীদের স্বাদরে গ্রহণ শেষে বরের নির্ধারিত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর যথাযথ সম্মানের সহিত অতিথিদের আপ্যায়নের পর বিবাহের দেনমহর হিসেবে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা ধার্য করিয়া বিয়ে কার্য সম্পন্ন করা হয়। বর-কনে বাকপ্রতিবন্ধী হলেও বিয়ের রেজিষ্ট্রারী বহিতে বর-কনে কলম দিয়ে স্বাক্ষর করেছে। বর-কনে মাথা ঝুঁকিয়ে ঝুঁকিয়ে বিয়ের কবুল সম্মতি প্রকাশ করেছেন । অন্যান্য বিয়ের মতো স্বাক্ষীর উপস্থিতিতে বিবাহ সম্পন্ন করেন স্থানীয় বিবাহ রেজিষ্টার।
ঘটা করে এ অনুষ্ঠানে বরযাত্রী ও কন্যযাত্রীদের খাবারের আয়োজনও কমছিলোনা। বাকপ্রতিবন্ধী ভাগনির বিবাহের আয়োজনের কমতি রাখেনি মামা বাঘারপাড়া বাজারে কসমেটিক্স ব্যবসায়ী এনামুল কবির।
কনে তামান্নার মা পারভীনা খাতুন জানান, “আমার বিয়ে হয় নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বাবলা গ্রামে। দীর্ঘদিন আমি বাবার বাড়ি সদুল্লাপুরেই আছি। একমাত্র মেয়ে তামান্না স্থানীয় ইন্দ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়া শেষ করে খুলনার গোয়ালখালি প্রতিবন্ধী স্কুলে ভর্তি হয়। সেখানে এসএসসি এ গ্রেডে পাশ করে বর্তমানে সেখানেই এইচএসসি পরীক্ষার্থী”। তিনি আরও বলেন, জামাইও এইচএসসি পরীক্ষার্থী। তবে সে ঢাকায় কেয়া কসমেটিক্স লিমিটেডে চাকরি করেন। তিনি মেয়ে-জামাই’র জন্য সকলের কাছে দোয়া কামনা করেছেন।