যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নের ক্ষেত্রপালা গ্রামের স্বপ্নবাজ তরুণ পিয়াল হাসান ২০১৭ সালে গ্রামের কিছু তরুণকে সাথে নিয়ে গড়ে তুলেছেন ‘সমৃদ্ধিরপথে, একসাথে’ স্লোগানে ‘ইচ্ছেহাট’ (icchehaat) নামের এক সামাজিক সংগঠন। বর্তমানে সারাদেশে রয়েছে সংগঠনটির ৩৮ জন প্রতিনিধি। গ্রামের সীমানা পেরিয়ে ইচ্ছেহাট এখন সারাদেশের একটি গর্বিত নাম। বর্তমানে ইচ্ছেহাটের কার্য্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে যশোর শেখ হাসিনা সফটওয়ার টেকনোলোজি পার্ক থেকে।
ইচ্ছেহাটের প্রতিষ্ঠাতা পিয়াল হাসান তার সেদিনের কথা নিজের লেখনীতে বিডিটেলিগ্রাফ পাঠকদের জন্য এভাবেই তুলে ধরেছেন–
২০১৭ সালে একটি সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে যাত্রা শুরু আমাদের।একটি পার্কের মাঠের ঘাসের উপরে বসে কত্তগুলা ইচ্ছে পূরণ করতে চাওয়া স্বপ্নবাজ তরূনের হাত ধরে শুরু করি আমরা।আমরা দীর্ঘদীন সামাজিক সংঠন হিসাবে কাজ করি। তারপর করোনার সময় দেখি গ্রামের কিছু মানুষ টেকনোলজির কারনে পেশা হারাচ্ছে।তারা যেহেতু টেকনোলজি সম্পর্কে অজ্ঞ ও বেশি পড়াশোনা যানে না সেহেতু করোনার মধ্যে তারা চাইলেই অনলাইনে প্রডাক্ট সেল বা অন্য কিছু করার সুযোগ পায় নাই। তাছাড়া গ্রামের মানুষের নিজেস্ব কিছু পেশা আছে যেগুলা দেশের ঐতিহ্য বহন করে আমরা সেগুলা থেকেও দূরে সরে আসছি। তো এই সমস্যা সামাধানে আমাদের একটি প্রজেক্ট লন্স করি।
সমৃদ্ধির পথে, এক সাথে…. স্লোগানে “ইচ্ছে হাট” নামে প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয়। এর মাধ্যমে গ্রামের মানুষ সহজেই টেকনোলজির ব্যাবহার করতে পারবে।ঘরে বসে আয়ের সুযোগ পাবে।এটির জন্য আমাদের এ্যাপস এর ডিজাইন শেষ হয়েছে। আশাকরা যায় ফেব্রুয়ারি মাসেই এপ্যাস লন্স করব। এই এ্যাপসটি যে পড়ালেখা জানে না কিংবা প্রতিবন্ধি সেও ব্যাবহার করতে পারবে।মূলত নিরক্ষ ও পিছিয়ে পড়া মানুষকে টেকনোলজির মাধ্যমে এনে আয়ের সুযোগ করতেই এই ভাবনা।
ইতোমধ্যে অলরেডি আমাদের মাধ্যমে ৭ জন মানুষ সাবলম্বি হয়েছেন। তাছাড়া ছাত্রছাত্রীকে প্রযুক্তি নির্ভর ও আয়ের সুযোগ করতে আমাদের রয়েছে “ইচ্ছে স্কুল”। আমাদের ইচ্ছে পূরণ হলেই আমরা সমৃদ্ধ হবো। এজন্য মানুষের শখ ও ইচ্ছেকে প্রোফেশনে নিতে কাজ করছে ইচ্ছে স্কুল। ক্ষুদ্র উদ্দোক্তাদের সাপোর্ট ও টেক প্রিয় মানুষকে টেকনোলজির সহজ তর করতে কাজ করছে ” ইচ্ছে টেক”।
এটি মূলত মানুষের সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন সফটওয়্যার তৈরি করে। ইচ্ছে সকুল, ইচ্ছে হাট,ইচ্ছে টেক। এই সব গুলোকে আমরা “ইচ্ছে ইনিসিয়েটিভ “ নাম দিয়েছি।
সারাবাংলাদেশের ৩৮ আমাদের প্রতিনিধি রয়েছে। তাছাড়া আমাদের প্রায় ৫০০+ মেম্বর রয়েছে।যারা ফ্রি ল্যান্সার হিসাবে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে। ২০২০ সালে আমরা “নবীন উদ্দোক্তা সম্মাননা স্বারক পেয়েছি”। এছাড়া ব্যাটেল অফ স্টার্টাপ সহ কয়েকটি প্রোগ্রামে জিতেছি।
আমাদের শুধু মাত্র একটি আইডিয়া ছিল। বসার মতো যায়গা ছিল না। আজ আমাদের মত তরূনদের বড় শক্তি এখন হাইটেক পার্ক। এখানে আমরা মেন্টরশীপ প্রোগ্রামে দারূন কিছু শেখার সুযোগ পেয়েছি। তাছাড়া পুরো হাইটেক পার্কে বড় বড় কোম্পানি ও টেক রিলেটেড মানুষের সাথে কমিউনিকেশন বিল্ডাপ হয়েছে। ফলে যে কোন সমস্যা সমাধান করতে পারি খুব সহজে। আমাদের ইচ্ছে পূরণে হাইটেক পার্ক বড় একটি কারখানা।
স্বপ্নবাজ তরূনদের স্বপ্ন দেখায় না তারা স্বপ্ন পূরনেও কাজ করছে হাইটেক পার্ক। ভবিষ্যতে মানুষ পেশা হারাবে।যত টেকনোলজি বাড়বে ততো বেশি জব কমবে।এজন্য আমরা মানুষকে টেকনোলজির মাধ্যমের পেশাতে ফিরিয়ে আনতে চাই।সেটা অবশ্যই পরিবেশের কোন ক্ষতি না করে পরিবেশ বান্ধপ উপায়ে।শুধু তাই নই।টেকনোলজি হবে পানির মত সহজ ও সবার ব্যাবহার যোগ্য। টেকনজির কারনে যেন আমরা দেশের ঐতিহ্য ও সাংস্কৃ্তিকে ভুলে না যায় সেটাও মাথায় রাখতে চাই।