ডেস্ক রিপোর্ট।।
রাশিয়ার সৈন্যরা কৌশলগত-ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শহর মারিউপোলের দখল নিতে মরিয়া হয়ে পড়েছে । সারা বিশ্বের চোখ এখন ওই শহরটির দিকে।
গুরুত্বপূর্ণ এই শহরটি রাশিয়ার সৈন্যরা প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে অব্রোধ করে গোলাবর্ষনের পরে গতকাল রাতে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় লড়াইরত ইউক্রেনিয়ান সৈন্য এবং মাারিউপোল নগর সরকারকে সোমবার মস্কো সময় ভোর পাঁচটার মধ্যে আত্মসমর্পণ করলে শহরের বাসিন্দা এবং ইউক্রেনিয়ান সৈন্যদের দুটো নিরাপদ করিডোর দিয়ে চলে যাওয়ার সুযোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও ইউক্রেন সরকার এবং মারিউপোলের স্থানীয় প্রশাসন আত্মসমর্পণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ।
ইউক্রেনের উপ প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে সেদেশের সংবাদ মাধ্যম ইউক্রোনিস্কা প্রাভদা বলছে, “আত্মসমর্পণের বা অস্ত্র সমর্পণের কোনো প্রশ্নই ওঠেনা।”
মারিউপোল শহরের মেয়রের একজন উপদেষ্টা বিবিসিকে বলেছেন, নিরাপদে চলে যাওয়ার যে প্রতিশ্রুতি মস্কো দিয়েছে তার ওপর বিশ্বাস করা যায়না এবং শেষ সৈন্য বেঁচে থাকা পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে।
আত্মসমর্পণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের পর রাশিয়া এখন কী করবে, মারিউপোল শহর এবং সেখানে আটকে পড়া লাখ তিনেক বাসিন্দার কপালে কী করবে তা নিয়ে গভীর আশংকা তৈরি হয়েছে।
কারণ পানি, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন এবং বোমায় বিধ্বস্ত এই শহরে এখনো তিন লাখের মত লোক রয়েছে বলে বলা হচ্ছে।
আত্মসমর্পণ না করলে রুশ সৈন্যরা কী করবে তা এখনো স্পষ্ট করেনি মস্কো।
এদিকে রুশ সৈন্যরা পুরো শহরটি ঘিরে রাখায় সেখানে বিদ্যুৎ নেই, পানি সরবরাহ নেই। খাবার এবং ওষুধের মজুদ খুবই কম মানুষ খাবার কষ্টে ভুগছে এবং রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। পুরো শহরটি কার্যত একটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। রাস্তায়, রাস্তায় মরদেহ পড়ে রয়েছে, কিন্তু বোমা এবং গুলির ভয়ে সেগুলো সৎকারের ব্যবস্থা করা যাচ্ছেনা বলে জানা গেছে ।
স্থলপথ ছাড়াও আকাশ এবং সাগর থেকে দিনের পর পর রুশ ক্ষেপণাস্ত্র এবং গোলা এসে পড়ার কারণে অধিকাংশ মানুষ এখন ঠাণ্ডা-অন্ধকার বোম-শেল্টার এবং বেজমেন্টের মধ্যে আশ্রয় নিয়ে রয়েছে।
আর রুশ সৈন্যদের সাথে ইউক্রেনিয়ান যোদ্ধাদের মুখোমুখি লড়াই এখন মারিউপোল শহরের কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে। ফলে শহর থেকে পালানোর সুযোগও চলে যাচ্ছে।
সাবেক ব্রিটিশ সেনা কম্যান্ডার জেনারেল রিচার্ড ব্যারন বিবিসিকে বলেছেন মারিউপোলের নিয়ন্ত্রণ রাশিয়ার জন্য কৌশলগতভাবে বড় একটি বিজয় হবে।
কারণ, তিনি বলেন, এই এলাকার নিয়ন্ত্রণ পেলে স্থলপথে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের সাথে ক্রাইমিয়ার সরাসরি যোগাযোগ তৈরি হবে। ইউক্রেনে যুদ্ধরত রুশ সৈন্যদের সরবরাহ অনেক সহজ হবে রাশিয়ার জন্য। সূত্র- বিবিসি