1. bdtelegraph24@gmail.com : বিডিটেলিগ্রাফ ডেস্ক :
  2. suma59630@gmail.com : ফাতেমা আকতার তোয়া : ফাতেমা আকতার তোয়া
  3. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  4. tarim7866@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
  5. wasifur716@gmail.com : Wasifur Rahaman : Wasifur Rahaman
বরেণ্য সাংবাদিক শহীদ সিরাজুদ্দিন হোসেন নিজেকে উদাহরণস্বরূপ অনুকরণযোগ্য করেন - বিডিটেলিগ্রাফ | Bangla News Portal, Latest Bangla News, Breaking, Stories and Videos
বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:৪৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ঢাবিতে শিবিরের ৩৬ জুলাই ফেস্ট নিয়ে বামদের বিশৃঙ্খলা ও শিবিরের প্রতিবাদ শেরপুর সীমান্তে ১ কোটি ৩১ লাখ টাকার ভারতীয় মোবাইল ডিসপ্লে জব্দ এই ঘোষণা নব্য ফ্যাসিস্টদের জন্মচিৎকার : মোমিন মেহেদী মসজিদে কোন রাজনৈতিক দলের মিটিং করতে দেবেন না-বাচ্চু মোল্লা বুটেক্সে জুলাই আন্দোলন ও মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত   অভয়নগরে এক বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার ঈশ্বরদীতে মারামারি ঘটনার জেরে ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ কিশোরগঞ্জে হোসেনপুরে পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু কিশোরগঞ্জে রাস্তার পাশ থেকে অটোচালকের লাশ উদ্ধার! নির্বাচনই একমাত্র পথ: প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় বিএনপির সমর্থন

বরেণ্য সাংবাদিক শহীদ সিরাজুদ্দিন হোসেন নিজেকে উদাহরণস্বরূপ অনুকরণযোগ্য করেন

  • সর্বশেষ আপডেট : মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১৩৮ জন খবরটি পড়েছেন

। । লক্ষ্মণ চন্দ্র মন্ডল।।
শহীদ সিরাজুদ্দীন হোসেন ছিলেন এ দেশের লব্ধপ্রতিষ্ঠা সাংবাদিক। বাংলার এই কৃতী সন্তানের জীবনী বহু ঘাত-প্রতিঘাতের এক সমন্বিত কাহিনী। অতি সাধারণ অবস্থা থেকে তিনি নিজেকে আদর্শ স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত করেন। প্রকৃতপক্ষে তিনি স্বীয় অধ্যবসায় বলে একটি উদাহরণস্বরূপ অনুকরণযোগ্য জীবন গড়ে তুলেছিলেন।

সিরাজুদ্দীন হোসেনের সোনার চামচ মুখে করে জন্ম গ্রহণ করার সৌভাগ্য হয়নি। সাবেক যশোর জেলার অধুনা মাগুরার শালিখা থানাধীন শরুশুনা গ্রামের এক সাধারণ শিক্ষিত পরিবারে ১৯২৯ সালের মার্চে তিনি জন্মগ্রহণ করেন এবং মাত্র সাড়ে তিন বছর বয়সে পিতৃহারা হন। এই সময় জনাব হোসেনের বড় চাচা মরহুম মৌলবী মোহম্মদ ইসহাক পিতৃহারা ভাইপো-ভাইঝিদের সাহায্যে এগিয়ে আসেন। চাচার কাছে থাকাকালে জনাব হোসেন মুর্শিদাবাদের নবাব বাহাদুর স্কুল, যশোর জিলা স্কুল প্রভৃতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি যশোরের ঝিকরগাছার নিকটবর্তী মিছরিদিয়াড়া গ্রামের এক বৃদ্ধা বিধবার বাড়ীতে জায়গীর থেকে ঝিকরগাছা স্কুলে পড়াশুনা করে ম্যাট্রিক এবং যশোর মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয় থেকে আইএ পাশ করেন।

আইএ পাশ করার পর জনাব হোসেন কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে বিএ পড়াশুনা করেন এবং ১৯৪৭ সালে ছাত্রাবস্থাতেই তিনি দৈনিক আজাদ-এ সাংবাদিকতা শুরু করেন এবং কালক্রমে তিনি আজাদ-এর বার্তা সম্পাদক পদে উন্নীত হন। ১৯৫৪ সালে আজাদের সাথে তাঁর সম্পর্ক ছিন্ন হয়। অতঃপর তিনি কিছুদিন ঢাকাস্থ ইউ.এস.আই.এস অফিসে জুনিয়র এডিটর হিসেবে কাজ করেন।

এর এক বছর পর তিনি ইত্তেফাকের বার্তা সম্পাদক হিসেবে যোগদান করেন এবং পরে ১৯৭০ সালে তিনি এই পত্রিকার কার্য-নির্বাহী সম্পাদক নিযুক্ত হন। সংবাদ রচনায় তাঁর লেখনী ছিল ক্ষুরধার। অন্তরস্পর্শী শিরোনাম ও সংবাদ-সার, সংবাদ নির্বাচন প্রভৃতির দিক দিয়ে দৈনিক ইত্তেফাকের সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে যে একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য পাঠকের চোখে ধরা পড়তো তার মূলে ছিল জনাব হোসেনের অবদান। পূর্ব বাংলার স্বার্থের জন্য ইত্তেফাকে স্বনামে ও কলামিস্ট পরিচয়ে তিনি যুক্তিপূর্ণ ও সাহসী নিবন্ধ রচনা করেছিলেন। পূর্ব-বাংলায় জাতীয়তাবাদী চেতনার বিকাশে তাঁর অবদান কখনো বিস্মৃত হবার নয়।

শুধু রাজনৈতিক চেতনা সুষ্টির উদ্দ্যেই নয়, মানবতার মূল্যবোধের ক্ষেত্রে জনাব হোসেনের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ছেলে ধরার বিরুদ্ধে শোষোক্ত কাগজের মাধ্যমে তিনি এক সময় অভিযান শুরু করেন। এই অভিযানের ফলশ্রুতিতে বহু অপহৃত ছেলে-মেয়ে উদ্ধারপ্রাপ্ত হয় এবং ছেলেধরা চক্রের সকল গোপন তথ্য ও কাহিনী উদঘাটিত হয়। এই সাংবদিক অভিযানকে অভিনন্দন জানিয়ে জেনেভাস্থ ইন্টারন্যাশনাল প্রেস ইনস্টিটিউটের মুখপাত্র একটি বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করে। উক্ত পত্রিকায় সিরাজুদ্দীন হোসেনের এই মানবিক তৎপরতার বহুমুখী প্রশংসা করা হয়। এই অভিযানের জন্য তিনি আন্তর্জাতিক পুরস্কারও লাভ করেন।

১৯৬৪ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার বিরুদ্ধে তিনি খুবই সক্রিয় ভুমিকা পালন করেন। ইত্তেফাক সে সময় সরকারি আদেশে বন্ধ ছিল, তখন তিনি ফ্রাঙ্কলিন পাবলিকেশন-এ যোগ দেন। এখানে থাকতে এবং এর আগে পরে অনেক বইয়ের অনুবাদ তিনি করেছিলেন। এগুলোর মধ্যে ডেভিড লিলিয়ানতলের টেনিস উপত্যকা: গণতন্ত্রের অগ্রগতি’, জেরান্ড জনসনের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, জীন গ্রম্বসের আন্তঃশ্রেণী সম্পর্ক অনুধাবনের উপায়, লরা ফরাসীর পারমানবিক শক্তির ব্যবহার’, এডওয়ার্ড মরোর ‘আমার জীবনদর্শন’ পলিন ইভান্সের ‘বীর ও বীরঙ্গনা’ প্রভৃতি অনুবাদ বিশেষ উল্লেখযোগ্য।

এ প্রসঙ্গে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে প্রিন্সিপ্যাল ইব্রাহিম খাঁ বলেন, “তাঁর তরজমায় মুনশীয়ানা, তাঁর ভাষার চমৎকারিত্ব, তাঁর মুক্তার মত হরফ মনে হলো সব দিকে বিবেচনায় তাঁর দক্ষ অনুবাদক তৎকালে বাংলা সাহিত্যে বিরল।”
ব্যক্তিগত জীবনে সিরাজুদ্দীন হোসেন ছিলেন মিষ্টভাষী, বন্ধুবাৎসল,পরোপকারী, দেশদরদী ও অমায়িক। সিরাজুদ্দীন হোসেন সুবক্তা ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, জনসভা, শ্রমিক সমাবেশ অনেক সময় তিনি সভাপতি অথবা প্রধান বক্তা হিসেবে আমন্ত্রিত হয়ে বক্তৃতা করেছেন। তিনি এক সময় পূর্ব পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়ন ও পাকিস্তান ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হন।

সাংবাদিক জীবনে তিনি বহুসংখ্যক পুস্তক অনুবাদ ছাড়াও ‘ছোট থেকে বড়’, ‘মহীয়সী নারী’, ‘ ঞযব উধুং উবপরংরাবস, ’খড়ড়শ রহঃড় সরৎৎড়ৎ,‘ইতিহাস কথা কও’ প্রভৃতি গ্রন্থ রচনা করেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় অধিকৃত ঢাকায় বসেও তিনি দেশবাসীর প্রতি তাঁর অঙ্গীকার ভোলেননি। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেছেন নানাভাবে। অবরুদ্ধ বাংলাদেশের সংবাদ সংগ্রহ করে পাঠিয়েছেন বিদেশী বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার কাছে। বাংলাদেশের পূর্ণ রাজনৈতিক ইতিহাস রচনার জন্য জনাব হোসেন অসংখ্য নোট লিপিবদ্ধ করেছিলেন। স্বাধীনতাকামী বাঙ্গালী বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকসা অনুযায়ী বিজয়ের ঊষালগ্নে ১৯৭১ সালের ১০
ডিসেম্বর পাকিস্তানী সামরিক জান্তার দোসর আল-বদর বাহিনী তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর তিনি আর ফিরে আসেননি। ঘাতকেরা সিরাজুদ্দীন হোসেনকে চিনতে ভুল করেনি।
জীবনযুদ্ধে জয়ী সিরাজুদ্দীন হোসেন মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন মাত্র ৪২ বছর বয়সে, জীবনের মধ্যপর্বে। তিনি কখনও আপোষ করেননি। সত্য ও শ্রেয় বলে যা জানতেন, তিনি তার পক্ষে কাজ করেছেন নিঃশঙ্কচিত্তে। দেশকে ভালবেসেছেন, ভালবেসেছেন দেশের মানুষকে। দেশের মানুষ সেই ভালবাসার বাঁধনে তাঁর স্মৃতি ধরে রাখবেন। তার স্মৃতি রক্ষার জন্য ১৯৭২ সালে এলাকার
শিক্ষানুরাগী লোকজন নিয়ে যশোরের বাঘারপাড়ার খাজুরায় কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। কলেজেরনামকরণ করা হয় শহীদ সিরাজুদ্দীন হোসেন মহাবিদ্যালয়।
২০১২ সালের৯,১০ও ১১ই মার্চ খাজুরা এম এন মিত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে “গাইদঘাট কৃষি প্রযুক্তি বাস্তবায়ন কেন্দ্র“ আয়োজিত গ্রামীন জীবনযাত্রা ও কৃষি প্রযুক্তি তথ্য,বীজ মেলার অনুষ্ঠান হয়। এই অনুষ্ঠানে দেশ তথা অত্র অঞ্চলের ৩০ জন গুনীজনের সম্মাননা প্রদান করা হয়। মরনোত্তর গুনীজন সম্মাননার মধ্যে এই বরেণ্য সাংবাদিক,শহীদ সিরাজুদ্দিন হোসেন ছিলেন
অন্যতম একজন। আমরা বরেণ্য সাংবাদিক : শহীদ সিরাজুদ্দিন হোসেন এর আত্মার শান্তি কামনা করি।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2025
Theme Customized By BreakingNews