ইসলামি ডেস্ক।
عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم *اَلسَّلاَمُ قَبلَ السَّؤَالِ؛* فَمَنْ بَدَأَكُمْ بِالسَّؤَالِ قَبْلَ السَّلاَمِ فَلاَ تُجِيْبُوْهُ.
ইবনু উমর (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, *জিজ্ঞাসা বা কথপোকথনের পূর্বে সালাম হতে হবে।* অতএব যে ব্যক্তি সালামের পূর্বেই জিজ্ঞাসা বা কথপোকথন শুরু করবে তোমরা তার কথার উত্তর দিয়ো না (সিলসিলা ছহীহাহ হা/৮১৬)। অত্র হাদীছ প্রমাণ করে যে, বক্তব্য বা যে কোন কথার পূর্বে সালাম হতে হবে।
عَنْ جَابِرِ بنِ عَبدِ اللهِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم السَّلاَمُ قَبْلَ الْكَلاَمِ.
জাবের ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, *কথার পূর্বে সালাম হতে হবে* (তিরমিযী হা/২৬৯৯)।
عَنْ أَنَسٍ قَالَ كَانَ أَصحَابُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِذَا تَلاَقُوْا تَصَافَحُوْا وَإِذَا قَدِمُوْا مِنْ سَفَرٍ تَعَانَقُوْا.
আনাস (রাঃ) বলেন, নবী কারীম (ছাঃ)-এর ছাহাবীগণ পরস্পরে সাক্ষাৎ করলে মুছাফাহা করতেন এবং কোন সফর থেকে আসলে কাঁধে কাঁধ মিলাতেন (সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৬৪৭)।
عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْكَامَ قَالَ كُنَّا إِذَا سَلَّمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه و سلم عَلَيْنَا قُلْنَا : وَعَلَيْكَ السَّلاَمُ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ وَمَغْفِرَتُهُ.
যায়েদ ইবনু আরকাম (রাঃ) বলেন, যখন নবী কারীম (ছাঃ) আমাদেরকে সালাম দিতেন, তখন আমরা বলতাম, وَعَلَيْكَ السَّلاَمُ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ وَمَغْفِرَتُهُ ‘আপনার উপরে আল্লাহর শামিত্ম, রহমত, বরকত ও ক্ষমা অবতীর্ণ হোক (সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৪৪৯)।
عَنْ جَابِرٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم *لاَ تَأْذِنُوْا لِمَنْ لَمْ يَبْدَأْ بِالسَّلاَمِ.*
জাবের (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, *যে ব্যক্তি প্রথমে সালাম প্রদান না করে, তাকে তোমরা কথা বলার বা প্রবেশের অনুমতি দিয়ো না* (সিলসিলা ছহীহাহ হা/৮১৭)।
অত্র হাদীছগুলি দ্বারা স্পষ্টরূপে প্রমাণিত হয় যে, কথা বলার পূর্বে অথবা কোন স্থানে বা বাড়ীতে প্রবেশের পূর্বে সালাম প্রদান করা যরূরী।
بِسْــــــــــــــــــمِ اﷲِالرَّحْمَنِ اارَّحِيم
السلام عليكم ورحمة الله وبركاته
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমতুল্লাহ ওয়াবারাকতুহু ।সকল প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর জন্য ।
দুরুদ সালাম বর্ষিত হোক শান্তি ও মানবতা মুক্তি দূত রাসূল( ﷺ ) এর জন্য !!!
কথা বলার আগেই সালাম দেওয়া মুস্তাহাব। রাসূল (ছাঃ) বলেন, إِنَّ أَوْلَى النَّاسِ بِاللهِ مَنْ بَدَأَهُمْ بِالسَّلاَمِ ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকটে উত্তম সেই ব্যক্তি, যে প্রথমে সালাম দেয়’।
[আবূদাঊদ হা/৫১৯৭; ছহীহাহ হা/৩৩৮২; ছহীহুল জামে হা/৬১২১।]
ইসলামে সালামের গুরুত্ব অপরিসীম। সালাম শান্তির প্রতীক। সালামে রয়েছে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। সালাম এভাবে দিতে হয়, ‘আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।’ সালাম মুসলমানদের পরস্পরে ভালোবাসা, হৃদ্যতা সৃষ্টি করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা ইমানদার না হওয়া পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, আর ইমানদার হতে পারবে না পরস্পরে ভালোবাসা না হলে। তোমাদের কি এমন একটি বিষয়ের কথা বলব, যা করলে তোমাদের পরস্পরে ভালোবাসা সৃষ্টি হবে? তোমরা পরস্পরের মধ্যে সালামের ব্যাপক প্রসার ঘটাও।’ (মুসলিম : ৫৪)
এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে প্রশ্ন করলেন, ইসলামের কোন কাজ সবচেয়ে ভালো? রাসুল (সা.) বললেন, ‘খাবার খাওয়ানো এবং পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে সালাম দেওয়া।’ (বোখারি : ১২)
সালামের প্রতিটি বাক্যে দশ নেকি। সালামে মোট তিনটি বাক্য আছে। সুতরাং যে পূর্ণ সালাম দেবে তার ত্রিশটি নেকি অর্জন হবে। একবার এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বলল, ‘আস্সালামু আলাইকুম’, রাসুল তার উত্তর দিলেন, তারপর সে বসল। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘দশ নেকি।’ অতঃপর অন্য এক ব্যক্তি এলো। সে বলল, ‘আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।’ রাসুল (সা.) উত্তর দিলেন। পরে ওই ব্যক্তি বসে পড়ল। রাসুল (সা.) বললেন, ‘বিশ নেকি।’ অতঃপর অন্য একজন এলো। সে বলল, ‘আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু।’ রাসুল (সা.) উত্তর দিলেন। সেও বসে পড়ল। রাসুল (সা.) বললেন, ‘ত্রিশ নেকি।’ (তিরমিজি : ২৬৮৯)
সালামের বিধান ও তার পদ্ধতি : প্রথমে সালাম দেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত, উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। যদি সালামের দ্বারা কোনো দলকে উদ্দেশ্য করা হয়, তাহলে তার উত্তর দেওয়া ওয়াজিবে কেফায়া। অর্থাৎ একজন উত্তর দিলে সবার পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে, তবে সবারই উত্তর দেওয়া উত্তম।
উত্তর দেওয়ার সময় সালামের চেয়ে বাড়িয়ে উত্তর দেওয়া সুন্নাত। যেমন কেউ ‘আস্সালামু আলাইকুম’ বললে উত্তরে ‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’ বলবে। কেউ ‘আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’ বললে উত্তরে ‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু’ বলবে।
চিঠি বা মেসেজ ইত্যাদির শুরুতে সালাম দেওয়া সুন্নাত। এর মৌখিক বা লিখিত উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। (তিরমিজি ২/১০১)
সালামের আদবসমূহ : মানুষের মধ্যে সালামের ব্যাপক প্রসার ঘটানো প্রয়োজন, যাতে তা মুসলমানদের প্রতীকে পরিণত হয়। বিশেষ কোনো দলকে সালাম দেওয়া বা শুধু বড়দের দেওয়া কিংবা ছোটদের না দেওয়া উচিত নয়। অনুরূপভাবে অপরিচিতকে বাদ দিয়ে শুধু পরিচিতকে সালাম দেওয়াও কাম্য নয়। (বুখারি : ১২)
উত্তম হলো- ছোট বড়কে প্রথমে সালাম দেবে। পথচারী উপবিষ্টকে সালাম দেবে। আরোহণকারী পথচারীকে সালাম দেবে। কম লোক বেশি লোককে সালাম দেবে। (বুখারি : ৬২৩১)
উচ্চ স্বরে সালাম দেওয়া ও উত্তর দেওয়া সুন্নাত। কেননা সালাম উচ্চারণ করতে হয়। হাত বা মাথার ইশারা ইত্যাদি সালাম বলে বিবেচিত হবে না। হ্যাঁ, দূরে হলে বা উত্তর শুনতে কোনো কিছু বাধা হলে মুখে উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে হাত বা মাথার ইশারায় উত্তর দেওয়ার কথা জানিয়ে দেবে। কাছে হলে সালামে হাত ওঠানো অপ্রয়োজনীয় ও সুন্নাতের খেলাফ। (তিরমিজি ২/৯৯)
সুন্নাত হলো দুজন আলাদা হওয়ার পর পুনরায় সাক্ষাৎ হলে আবার সালাম দেওয়া। সাহাবায়ে কেরাম যখন হাঁটতেন, তখন তাঁদের সামনে কোনো গাছ অথবা স্তূপ পড়ত, তাঁরা ডানে-বাঁয়ে আলাদা হয়ে যেতেন। অতঃপর আবার সাক্ষাৎ হলে একে অন্যকে সালাম দিতেন।
সালাম শুধু মুমিনদের অভিবাদন, কাফেরদের সালাম দেওয়া বৈধ নয়। হ্যাঁ, যদি এমন জায়গায় উপস্থিত হয় যেখানে কাফের-মুসলমান একত্রে থাকে, সেখানে সালাম দেওয়ার সময় মুসলমানের নিয়ত করবে। (সুনানে আবি দাউদ : ৫২০৫) যদি কোনো অমুসলিম সালাম দেয় তাহলে তার জবাবে ‘আস্সালামু আলা মানিত্তাবাআল হুদা’ বলবে। (মুসনাদে আহমাদ : ২৪৩০৪) কিংবা ‘ওয়ালাইকা’ বা ওয়ালাইকুম’ বলবে। অমুসলিমদের বিশেষ প্রয়োজনে সালাম ছাড়া অন্য কোনোভাবে অভিবাদন জানানো বৈধ। যেমন শুভ সকাল বা শুভ রাত্রি ইত্যাদি।
তবে এমন বাক্য ব্যবহার করা যাবে না, যা অন্য ধর্মের জন্য নির্ধারিত। অন্যের মাধ্যমে কারো কাছে সালাম পৌঁছানোও সুন্নাত। যার কাছে সালাম পৌঁছানো হবে উত্তর দেওয়া তার দায়িত্ব। (তিরমিজি ২/৯৯)
মাহরাম (যাদের দেখা বৈধ) নারীদের বা স্ত্রীদেরও সালাম দেওয়া সুন্নাত। আর ফেতনা থেকে নিরাপদ হলে পরনারীদেরও সালাম দেওয়া জায়েজ। অনুরূপ নারীরাও পরপুরুষদের ফেতনার আশঙ্কা না হলে সালাম দিতে পারবে। (রদ্দুল মুহতার ৬/৩৬৯)
কাউকে ঝুঁকে সালাম দেওয়া জায়েজ নেই। (তিরমিজি : ২৭২৮)
যেসব অবস্থায় সালাম দেওয়া মাকরুহ : যে ব্যক্তি সালামের উত্তর দিতে অক্ষম তাকে সালাম দেওয়া মাকরুহ। যথা : নামাজ, আজান-ইকামত, জিকির, তিলাওয়াত, ধর্মীয় জ্ঞানচর্চা, খানাপিনা ও ইস্তিঞ্জারত ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া, গুনাহের কাজে লিপ্ত ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া, স্ত্রী সহবাস ইত্যাদি অবস্থায় সালাম দেওয়া মাকরুহ। (রদ্দুল মুহতার ১/৪১৪)
অন্য বর্ণনায় এসেছে, আবূ উমামাহ্ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হ’ল, হে আল্লাহর রাসূল! দু’জন লোকের মধ্যে সাক্ষাৎ হ’লে কে প্রথম সালাম দিবে? তিনি বললেন, তাদের মধ্যে যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলার বেশী নিকটবর্তী’।[তিরমিযী হা/২৬৯৪; মিশকাত হা/৪৬৪৬।]
প্রথমে সালাম না দিলে রাসূল (ছাঃ) কথা বলার অনুমতি দিতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন,لاَ تَأْذَنُوْا لِمَنْ لَمْ يَبْدَأْ بِالسَّلاَمِ ‘যে ব্যক্তি আগে সালাম দেয় না তোমরা তাকে (কথা বলার) অনুমতি দিও না’।
[ছহীহাহ হা/৮১৭; ছহীহুল জামে হা/৭১৯০।]
সালাম দেওয়া ও উত্তর দেওয়া – বিভিন্ন জাতি-ধর্মে অভিবাদনের রীতি চালু আছে। ইসলামী অভিবাদন হচ্ছে সালাম বিনিময় করা। এতে উভয়ই নেকীর অধিকারী হয়। আর এর মাধ্যমে পারস্পরিক আন্তরিকতা বৃদ্ধি পায়। গড়ে ওঠে সম্প্রীতির সুদৃঢ় বন্ধন। তাই সালাম আদান-প্রদান করা ইসলামের নির্দেশ। আল্লাহ বলেন,يَاأَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا لاَ تَدْخُلُوْا بُيُوْتًا غَيْرَ بُيُوْتِكُمْ حَتَّى تَسْتَأْنِسُوْا وَتُسَلِّمُوْا عَلَى أَهْلِهَا ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُوْنَ- ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা নিজেদের গৃহ ব্যতীত অন্যদের গৃহে প্রবেশ করো না, যতক্ষণ না তোমরা তাদের অনুমতি নাও এবং গৃহবাসীদের প্রতি সালাম কর। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম। সম্ভবতঃ তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে (তা মেনে চলার মাধ্যমে)’ (নূর ২৪/২৭)। অন্যত্র তিনি আরো বলেন,فَإِذَا دَخَلْتُمْ بُيُوْتًا فَسَلِّمُوْا عَلَى أَنْفُسِكُمْ تَحِيَّةً مِنْ عِنْدِ اللهِ مُبَارَكَةً طَيِّبَةً كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللهُ لَكُمُ الْآيَاتِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُوْنَ- ‘অতঃপর যখন তোমরা গৃহে প্রবেশ করবে তখন তোমরা পরস্পরে সালাম করবে। এটি আল্লাহর নিকট হ’তে প্রাপ্ত বরকতমন্ডিত ও পবিত্র অভিবাদন। এমনিভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য আয়াত সমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করেন। যাতে তোমরা বুঝতে পার’ (নূর ২৪/৬১)।
সালামের উত্তর দেওয়া সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَإِذَا حُيِّيتُمْ بِتَحِيَّةٍ فَحَيُّوْا بِأَحْسَنَ مِنْهَا أَوْ رُدُّوْهَا إِنَّ اللهَ كَانَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ حَسِيْبًا- ‘আর যখন তোমরা সম্ভাষণ প্রাপ্ত হও, তখন তার চেয়ে উত্তম সম্ভাষণ প্রদান কর অথবা ওটাই প্রত্যুত্তর কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ সকল বিষয়ে হিসাব গ্রহণকারী’ (নিসা ৪/৮৬)।
সালাম হল এক প্রকার দু‘আ। আর এই দু‘আ করা হয় আল্লাহর কাছে। সুতরাং যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলে বিশ্বাস রাখে না তারা এ দু‘আর হকদার নয়। তাই অমুসলিমদেরকে সালাম দেওয়া হারাম, বৈধ নয়। যেহেতু রসূল (ﷺ) বলেন, ‘‘ইয়াহুদ ও নাসাদেরকে প্রথমে সালাম দিও না। ওদের সাথে পথে সাক্ষাৎ হলে সংকীর্ণতার প্রতি বাধ্য কর।’’
তাছাড়া সালামে রয়েছে তাযীম ও সম্মান প্রদর্শন। সুতরাং কাফেরকে সালাম দিলে নিজেকে ছোট ও তাকে বড় গণ্য করা হয়। আর তা কোন মুমিনের জন্য বৈধ নয়।
অমুসলিমরা যদি আমাদেরকে প্রথমে সালাম দেয়, তাহলে তার উত্তর দেওয়া আমাদের জন্য ওয়াজেব হবে। যেহেতু সাধারণভাবেই আল্লাহ বলেন, ‘‘যখন তোমাদেরকে অভিবাদন করা হয়, তখন তোমরাও তা অপেক্ষা উত্তম অভিবাদন করবে অথবা ওরই অনুরূপ উত্তর দেবে। (সূরা নিসা-৪:৮৬)
ইয়াহুদীরা রাসুল (ﷺ) কে সালাম দিত; বলত, ‘আস্সা-মু আলাইকা ইয়া মুহাম্মাদ! (তোমার উপর মৃত্যু বর্ষণ হোক, হে মুহাম্মাদ!)’ ‘আসসা-ম’ এর অর্থ মৃত্যু। তারা রাসুল (ﷺ) কে মৃত্যুর বদ্দুআ দিত। তাই রাসুল (ﷺ) বললেন, ‘‘ইহুদীরা বলে, ‘আসসা-মু আলাইকুম।’ সুতরাং ওরা যখন তোমাদেরকে সালাম দেবে তখন তোমরা তার উত্তরে বল, ‘অ আলাইকুম।’’
অতএব কোন অমুসলিম যখন মুসলিমকে সালাম দিয়ে বলে, ‘আসসা-মু আলাইকুম,’ তখন আমরা তার উত্তরে বলব, ‘অ আলাইকুম।’ উপরন্তু তাঁর উক্তি ‘অ আলাইকুম’ এই কথার দলীল যে, যদি ওরা ‘তোমাদের উপর সালাম’ বলে, তাহলে তাদের উপরেও সালাম। সুতরাং ওরা যেমন বলবে আমরাও ওদেরকে তেমনি বলব। এই জন্য কতক উলামা বলেছেন যে, ইয়াহুদী, খ্রিষ্টান বা অন্য কোন অমুসলিম যখন স্পষ্ট শব্দে ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলবে তখন আমাদের জন্য ‘অ আলাইকুমুস সালাম’ বলে উত্তর দেওয়া বৈধ হবে।
পক্ষান্তরে যদি কোন কার্যক্ষেত্রে কোন অমুসলিমকে অভ্যর্থনা জানাতেই হয়, তাহলে সালাম দিয়ে নয়; বরং অন্য কোন শব্দ বলে; যেমন ‘সুপ্রভাত’ বা ‘গুডমর্নিং’ বা ‘কেমন আছেন’ ইত্যাদি বলা প্রয়োজনে অনেকে বৈধ বলেছেন।
কোন মজলিসে মুসলিম-অমুসলিম এক সাথে বসে থাকলে সেখানেও সালাম দেওয়া সুন্নাত। অবশ্য এখানে নিয়ত রাখতে হবে মুসলিমদের জন্য।
প্রকাশ থাকে যে, মুসলিম-অমুসলিম মিশ্র মজলিসকে লক্ষ্য করে ‘আস্-সালামু আলা মানিত্তাবাআল হুদা’ বলে সালাম দেওয়া বিধেয় নয়। পক্ষান্তরে অমুসলিমকে চিঠি লিখার সময় ঐ সালাম লিখা চলে।
কেউ কেউ বলেছেন, অমুসলিমদেরকে সালাম দিতে ‘আস্-সালামু আলা মানিত্তাবাআল হুদা’ বলা যায়।
অথবা ‘আস্সালামু আলাইনা অআলা ইবাদিল্লাহিস স্বালিহীন’ও ব্যবহার করা যায়।