ফরিদপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। আজ সোমবার (০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪) সকাল সাড়ে আটটার দিকে সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের ফুসরা গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে অন্তত ৩০টি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। উভয় পক্ষের সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত আটজন। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত তিনজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফুসরা গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আক্কাস মাতুব্বর এবং বিএনপি নেতা হাশেম খানের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। আক্কাস মাতুব্বর ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং হাশেম খান ওই ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি।
গতকাল রোববার বিকেলে এলাকার একটি পুকুরে মাছ ধরা নিয়ে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে রাতে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে। উভয় পক্ষই সংঘর্ষে না জড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও আজ সকালে হাশেম খানের সমর্থকেরা আক্কাস মাতুব্বরের সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা চালায়। এ সময় বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং গরু-ছাগল লুটপাট করা হয়। পরে আক্কাস মাতুব্বরের সমর্থকেরা পাল্টা হামলা চালালে আরও কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা-পুলিশ, সেনাসদস্য ও র্যাবের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন জানান, আক্কাস মাতুব্বর ও হাশেম খানের মধ্যে এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। তারই জের ধরে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
আক্কাস মাতুব্বর অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা পুলিশের কাছে সংঘর্ষে না জড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। কিন্তু হাশেম খান সেই কথা রাখেননি। তার সমর্থকেরা অতর্কিত হামলা চালিয়েছে।’
তবে হাশেম খান এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আক্কাসের সমর্থকেরাই আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে।’
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদ উজ্জামান জানান, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে থানায় এখনো কোনো পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেনি।