প্রশাসনের বাধায় রক্ষা পেল মিজান হুজুরের আস্তানা
প্রতিনিধি, শ্যামনগর (সাতক্ষীরা)। শ্যামনগরে উপজেলার ধুমঘাট অন্তাখালী ভন্ড পীর মিজানের ভন্ডামির প্রতিবাদ ও গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি ও অপসারণের দাবিতে ভন্ড মিজানের আস্তানা অভিমুখে পদযাত্রা করেন বাতিল প্রতিরোধ কমিটি ও শ্যামনগরের সর্বস্তরের তৌহিদী জনতা।
১৪ই ফেব্রুয়ারি শুক্রবার জুমার পর কয়েকশ মুসল্লী উক্ত মাদ্রাসাকে ‘ভন্ড পীরের আস্তানা’ আখ্যায়িত করে গুড়িয়ে দিতে অগ্রসর হলে পথিমধ্যে তাদের আটকে দেয় পুলিশ ও সেনাবাহিনী। ফলে রক্ষা পেয়ে যায় শ্যামনগরের আলোচিত মিজান হুজুরের আস্থানা।
এসময় মিজানকে গ্রেপ্তারে সোমবার পর্যন্ত সময় বেধে দিয়ে কর্মসূচি স্থগিত করে মুসল্লিরা।
এর আগে ঘোষনা দিয়ে উক্ত আস্তানা গুড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে উপজেলার বংশীপুর থেকে সহস্রাধিক মুসল্লি উক্ত আস্তানার উদ্দেশ্যে পদযাত্রা শুরু করে। মাদ্রাসার নামে সেখানে অনৈসলামিক কর্মকান্ড পরিচালিত হওয়ার পাশাপাশি নিজেকে পীর দাবিকারী মিজানুর রহমান একজন ভন্ড বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
সমাবেশে উপজেলা বাতিল কমিটির সভাপতি মুফতি আব্দুল খালেকের সভাপতিত্বে বক্তারা ধুমঘাট অন্তাখালীর মিজানুর রহমানকে ‘ভন্ড’ অ্যাখা দিয়ে দ্রুত তাকে গ্রেপ্তারসহ তার ইসলাম বিরোধী কর্মকান্ড বন্ধে ৫ দফা দাবিতে ৩ দিনের আল্টিমেটাম দেন বিক্ষোভকারী তৌহিদী জনতা। পাঁচ দফা দাবি গুলো হলো- ভন্ড মিজানকে মাদরাসার দায়িত্ব থেকে অপসারণ করতে হবে, একটি কার্যকরি কমিটি গঠন করতে হবে, মাদ্রাসায় নতুন পরিচালক নিয়োগ দিতে হবে, আলেমদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে, ভন্ড মিজানকে গ্রেফতার পূর্বক যথাযথ বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
জানা যায় উপজেলার ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের ধুমঘাট অন্তখালী গ্রামে উক্ত মাদ্রাসা অবস্থিত। প্রায় ২০ বছর পূর্বে মাওলানা আব্দুস সবুরের প্রতিষ্ঠিত ঐ মাদ্রাসার দায়িত্ব পাওয়ার পর মিজানুর রহমান সেখানে নানা ধরনের কুফরী কার্যক্রম চালুসহ নিজেকে ‘পীর’ দাবি করে বসে। পরবর্তীতে আব্দুস সবুরসহ অন্যান্য ওলামা মাশায়েখরা মিজানকে ভন্ড ঘোষনা করলে তার আস্তানাকে গুড়িয়ে দিতে একে একে নানা কর্মসূচি দেয় স্থানীয় মুসল্লিরা।
এবিষয়ে মিজানুর জানান আল্লাহ তাকে বিশেষ ক্ষমতা দেয়ায় তিনি নিজের মত করে মাদ্রাসা চালাচ্ছেন। তাকে মাদ্রাসা থেকে তাড়াতে ষড়যন্ত করছে কিছু মানুষ।
উপজেলা বাতিল প্রতিরোধ কমিটির সম্পাদক হাফেজ মোখলেছুর রহমান জানান, নিজেকে পীর দাবি করে ভন্ড মিজান নিজের আস্তানায় নানান ইসলামবিরোধী কর্মকান্ড করছে। বাইতুল মোর্করমের খতিব আব্দুল মাকে মিজানকে ভ্রষ্ঠ আখ্যা দিয়েছে। সোমবারের মধ্যে আইনি পদক্ষেপ নেয়া না হলে তার আস্তানা ধ্বংস করা হবে বলেও তিনি ঘোষনা দেন।
শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হুমায়ুন কবির জানান মুসল্লিদের কাছে মিজানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ লিখিত আকারে প্রমানসহ দিতে বলা হয়েছে।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রনী খাতুন জানান, দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে প্রশাসন চেষ্টা করছে। আইনকে কারও নিজের হাতে তুলে না নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ মিমাংসায় দু’পক্ষকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।