যুবদলের দুই নেতার নাম প্রত্যাহারের দাবিতে থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন
নওয়াপাড়া পৌর (যশোর) প্রতিনিধি।
অভয়নগরের নওয়াপাড়া পৌর কৃষকদলের সভাপতি মো.তরিকুল ইসলাম হত্যাকান্ডে সোমবার রাতে নিহতের বড় ভাই মো. রফিকুল ইসলাম টুলু বাদী হয়ে স্থানীয় দুই যুবদল নেতাসহ ১১জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা রুজু করেন। তাছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫জনকে মামলার আসামি করা হয়। যুবদলের দুই নেতা হলেন, জাকির কোরাইশীর ছেলে আকরাম আক্তার কোরাইশি পাপ্পু (৩৫) ও বেনজীর হোসেনের ছেলে মাসুদ পারভেজ সাথী (৪০)।
ইতোমধ্যে পুলিশ দুই আসামী উপজেলার ডহর মশিয়াহাটী গ্রামের সুজিত বিশ্বাসের ছেলে সাগর বিশ্বাস (২৭) এবং যশোর সদর উপজেলার রামনগর উপজেলার সিদ্দিক খানের ছেলে ফিরোজ খানকে (৩৫) আটক করেছে।
পুলিশসূত্রে জানা যায়, রাজনৈতিক ও পূর্ব শত্রুতা এবং মাছের ঘেরের ইজারা নিয়ে দ্বন্দের জেরে তরিকুল ইসলামকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন বাদী। মামলার বাকি সাত আসামি হলেন, হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়া বাড়িটির মালিক বিরেশ্বর বিশ্বাসের ছেলে পিন্টু বিশ্বাস (৪৫),মশিয়াহাটী গ্রামের দিলীশ্বর বিশ্বাসের ছেলে দীনেশ বিশ্বাস (৩৫), কার্তিক বিশ্বাসের ছেলে দুর্জয় বিশ্বাস (২৫), নিরঞ্জন বিশ্বাসের ছেলে অজিত বিশ্বাস (২৭), বিকাশ বিশ্বাসের ছেলে পল্লব বিশ্বাস (৩৫), বিনয়ের ছেলে গজো ওরফে পবন বিশ্বাস (২৮) ও নিরাপদ মণ্ডলের ছেলে অতীত মণ্ডল (৪০)।
অপরদিকে এ হত্যাকান্ডের পর উপজেলার ডহর মশিয়াহাটী গ্রামর আশপাশের বেশ কয়েকটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় থানায় পৃথকভাবে আরও একটি মামলা দায়ের হয়েছে। ডহর মশিয়াহাটী গ্রামের সুশান্ত বিশ্বাসের স্ত্রী কল্পনা বিশ্বাস বাদী হয়ে মামলাটি করেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা ১০০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে তরিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় যুবদদের দুই নেতার নাম থাকায় সোমবার রাতে নওয়াপাড়া শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও থানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের এক অংশের নেতা-কর্মীরা। সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নওয়াপাড়া বাজার থেকে পৌর বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান জনির নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। পরে তাঁরা থানার সামনে অবস্থান নিয়ে প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। তারা অবিলম্বে মামলার এজাহারে নাম থাকা দুই আসামি যুবদল নেতা আকরাম আক্তার কোরাইশ পাপ্পু ও মাসুদ পারভেজ সাথীর নাম প্রত্যাহার জোর দাবি জানান।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার ডহর মশিয়াহাটী গ্রামের একটি বাড়িতে জিম্মি কৃষকদল নেতা তরিকুল ইসলামকে কুপিয়ে এবং গুলি করে হত্যা করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে একদল লোক ওই এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করে।
অভয়নগর থানার ওসি আব্দুল আলিম জানান, কৃষকদল নেতা হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। আসামীদের মধ্যে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। অপরদিকে বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় এখনও কোনো আসামী আটক হয়নি। তবে আটকের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।