ডেস্ক নিউজ।
ভারতের বিহারের পূর্ণিয়ার তেতগামা গ্রামে ডাইনিবিদ্যার অভিযোগ তুলে একই পরিবারের পাঁচজনকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার সকালে স্থানীয় এক জলাশয় থেকে তাদের দগ্ধ দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
স্থানীয় পুলিশ জানায়, নিহতদের মধ্যে বাবুলাল ওঁরাও ও তার স্ত্রীসহ পরিবারের মোট পাঁচজন সদস্য রয়েছেন। রোববার রাতের এ ঘটনায় পরিবারের একমাত্র জীবিত সদস্য, এক নাবালক ছেলে কোনোভাবে পালিয়ে গিয়ে পুলিশকে খবর দেয়।
ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন মূল অভিযুক্ত এবং একজন স্থানীয় ট্র্যাক্টরচালক, যার যানবাহন ব্যবহার করে হত্যার পর লাশ স্থানান্তর করা হয় বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, কয়েক দিন আগে ওই গ্রামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। এরপর থেকেই সন্দেহ করা হচ্ছিল যে, বাবুলাল ওঁরাওয়ের পরিবার ডাইনিবিদ্যার মাধ্যমে শিশুটিকে ক্ষতি করেছে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে রোববার রাতে ৪০-৫০ জনের একটি দল বাবুলালের বাড়িতে চড়াও হয়। তারা বাড়ির লোকজনকে বাইরে টেনে এনে বেধড়ক মারধর করে, পরে তাদের গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়।
পুলিশ জানিয়েছে, দগ্ধ লাশগুলো জলাশয়ে ফেলে দেওয়া হয়, যাতে হত্যার প্রমাণ মুছে ফেলা যায়। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নমুনা সংগ্রহ করেছে।
পূর্ণিয়ার ডিআইজি প্রমোদ কুমার মণ্ডল বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত বীভৎস এবং সমাজের জন্য লজ্জাজনক। এই যুগে দাঁড়িয়েও মানুষ ডাইনিবিদ্যার মতো কুসংস্কারে বিশ্বাস করছে।”
জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং এ ঘটনায় আরো যারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করতে তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে।
ঘটনাটি সামনে আসার পর বিহারের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যজুড়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। বিরোধী দলনেতা তেজস্বী ইয়াদভ বলেন, “পূর্ণিয়ার ঘটনায় পাঁচজনকে পুড়িয়ে মারা হলো, অথচ সরকার নির্বিকার। অপরাধীরা সজাগ, আর মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশ নেই।