২০২৪ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সূচনালগ্ন থেকেই ছিলেন রাজপথে। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের শিক্ষা ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক এনামুল হাসান অনয়—যার মুখ থেকে উচ্চারিত স্লোগান আন্দোলনের ইতিহাসে বিশেষ স্থান করে নেয় এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়: ‘কথায় কথায় বাংলা ছাড়, বাংলা কি তোর বাপ-দাদার?’
অনয় স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘প্রথমে বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করি। ১৬ জুলাইয়ের পর আন্দোলন আর কেবল সংস্কারের দাবিতে সীমাবদ্ধ থাকেনি—রূপ নেয় গণঅভ্যুত্থানে। আমরা জানতাম, ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী শাসনের পতন ঘটানো ছাড়া মুক্তি নেই।’
অনয়ের কণ্ঠেই প্রথম ধ্বনিত হয়েছিল সেই প্রতীকী স্লোগান: ‘কথায় কথায় বাংলা ছাড়, বাংলা কি তোর বাপ-দাদার?’ তিনি বলেন—‘‘১৫ জুলাই আমি প্রথম এই স্লোগানটি দিই। যদিও ২৩ আগস্টের ফুটেজ ভাইরাল হয়। আসলে বিগত শাসকগোষ্ঠী আমাদের ‘বাংলা ছাড়ার’ হুমকি দিত। তারই জবাবে আমি এই স্লোগান দিয়েছিলাম। এটি ছিল শোষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে ক্ষোভ, ভাইবোন হারানোর বেদনা এবং রাষ্ট্রীয় জুলুমের প্রতিবাদের প্রতিধ্বনি। শুধু এই স্লোগান নয়—‘বুক পেতেছি গুলি কর, বুকের ভেতর দারুণ ঝড়’, ‘লাঠির বাড়ি মারবি না, সামাল দিতে পারবি না’, ‘সারা বাংলা কারাগার, খুনি হাসিনা স্বৈরাচার’—এমন অসংখ্য স্লোগানেই আন্দোলন জেগে উঠেছিল।”
দ্বিতীয় ঘটনার কথা বলতে গিয়েই অনয়ের চোখে জল টলমল করে ওঠে। আবেগভরা কণ্ঠে তিনি বলেন—, ‘সেই একই দিন বিকেলে, শহীদ মিনারে লাখো জনতার ঢল নেমেছিল।’ স্লোগানে মুখরিত পরিবেশে অনয় সামান্য বিরতি নিতে দাঁড়াতেই ভিড় ঠেলে এগিয়ে আসেন এক প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধা। কাঁপা হাতে তিনি নিজের উত্তরীয় খুলে অনয়ের কাঁধে তুলে দেন এবং বলেন—‘আজ থেকে এটি তুমি আগলে রেখো।’- কালবেলা
নিউজটি পাঠকদের জন্য কালবেলা থেকে তুলে ধরা হলো