বিশেষ প্রতিনিধি।
ফেনীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের সংস্কারকাজে পানি উন্নয়ন বোর্ড-পাউবোর নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তাদের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুদক।
বুধবার সকাল ১০টায় শহরের শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়ক রোডের কার্যালয়ে দুদকের নোয়াখালী কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল নোমানের নেতৃত্বে একটি দল এ অভিযান পরিচালনা করে।
আল নোমান বলেন, “বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডে সংশ্লিষ্ট নথিপত্র তদন্ত শেষে আমরা পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বিভিন্ন ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি।
“আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।”
জেলা প্রশাসন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে প্রতি বছরের ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও পশুরাম উপজেলার লাখো মানুষ। গত বছরের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার বছর না পেরোতেই এবারও দুই দফায় বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে লোকালয়। ২৪-এর ভয়াবহ বন্যায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৯ জন। বন্যায় সড়ক যোগাযোগ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মোটর যান, ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন খাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দাঁড়িয়েছিল ২ হাজার ৬৮৬ কোটি ২০ লাখ ৫০০ টাকা। এবারের বন্যায়ও বিভিন্ন খাতে ক্ষতির পরিমাণ ২৩৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বাঁধ সংস্কারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়সারা কাজ এবং অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে এমন দুর্ভোগের শিকার হতে হয় সাধারণ মানুষকে। টেকসই বাঁধ নির্মাণসহ বিভিন্ন দাবিতে গত ২৩ জুলাই ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ড অভিমুখে পদযাত্রা করেন ফেনীর নাগরিক সমাজ। এ সময় পানি উন্নয়ন বোর্ডে স্মারকলিপি ও জেলা প্রশাসকের কাছে বিভিন্ন দাবি উপস্থাপন করা হয়।
অভিযানের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, “দুদক কর্মকর্তারা ২০২৪ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মুহুরী, কহুয়া, সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধগুলোর সংস্কার কাজের তথ্য জানতে চেয়েছে। তারা নথিপত্রসহ বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করেছেন।
“অফিসের নথিপত্র তদন্ত শেষে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের মেরামতকৃত অংশগুলো পরিদর্শনে গিয়েছেন দুদক কর্মকর্তারা।”
পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে দুদককে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।