চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী মহাসড়কে বেআইনিভাবে চলাচলকারী সিএনজি থ্রি হুইসলার ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দৌরাত্ম্যে বাড়ছে দুর্ঘটনা। জেলায় সড়ক দুর্ঘটনা দিনদিন আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার প্রধান কারণ হিসেবে অদক্ষ ও অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানোকে দায়ী করছেন সচেতন স্থানীয়রা।বিশ্বরোড মোড় থেকে শুরু করে শান্তি মোর, পুরাতন বাজার, হাসপাতাল মোড়, শিব তলা, নিউমার্কেট সেন্টু মার্কেট মোড়, বটতলা হাট, বারঘরিয়া পৌরসভা গেট ও নয়াগোলা, হাট নতুন ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এসব ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার বেশিরভাগ চালকই অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪-১৮ বছরের কিশোর, যাদের ড্রাইভিং সম্পর্কিত কোনো প্রশিক্ষণ নেই। অধিকাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকের বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই, এমনকি অনেকে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালান বলেও অভিযোগ রয়েছে।
মহাসড়কের একাধিক স্থানে, বিশেষত বাজার এলাকা ও গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে, এইসব ছোট আকারের যানবাহনের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ট্রাক-বাসের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ায় শিল্প এলাকা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্থল বন্দরমুখী পরিবহন ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। গত এক মাসে অন্তত ৮টি দুর্ঘটনায় ৪ জন নিহত এবং ২০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে, যার বেশিরভাগই এ ধরনের যানবাহনের বেপরোয়া চলাচলের ফলে।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষিতে সরকার পরিবর্তনের পর প্রশাসনিক শৃঙ্খলার ভেঙে পড়া পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে মহাসড়কে এই যানবাহনের সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে যায়। ট্রাফিক পুলিশ একপর্যায়ে কার্যত অনুপস্থিত থাকায় অবৈধ পরিবহন চালকরা আইনের তোয়াক্কা না করেই রাস্তায় নামে।বর্তমানে পুলিশের টহল বেড়েছে, তবে স্থানীয়দের অভিযোগ- অভিযান পরিচালনা হলেও তা নিয়মিত নয় এবং অনেক ক্ষেত্রেই প্রভাবশালী মহলের হস্তক্ষেপে আটক যানবাহন ছেড়ে দেওয়া হয়।অনুসন্ধানে জানা যায়, বিগত সরকারের আমলে এসব যানবাহনের মালিকরা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় প্রশাসনের ওপর প্রভাব খাটিয়ে নির্বিঘ্নে চলাচল করেছে। মাসোহারার বিনিময়ে অনেক ক্ষেত্রেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো নিরব থেকেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিআরটি এ সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিঃ) শাহজামান হক বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে সিএনজি স্টেশন না থাকায় এখানে সিএনজি চালিত থ্রি হুইলার রিকশা অনুমোদন দেওয়ার কোনো অনুমতি নেই। সিএনজি থ্রি হুইলার অনুমোদন বিআরটিএ দিয়ে থাকে, সিএনজি স্টেশন থাকলে অনুমোদন দেওয়া যেত। অনুমোদন ছাড়া থ্রি হুইলারগুলো অবৈধভাবেই চলছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ টি আই ( ১) সফিকুল আলম প্রতিবেদককে জানান, আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছি অবৈধভাবে যেন সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে না পারে।কিন্তু আমার পূর্বে যে ফোর্স ছিল এখনো সে পরিমাণে ফোর্স রয়ে গেছে কিন্তু যানবহন দিন দিন বাড়ছেই। থ্রি হুইলার গুলো অনুমোদন দেয় বিআরটিএ। তাদের কিছু বাধ্যবাধকতা থাকে। অটোরিকশা গুলো অনুমোদন দেয় পৌরসভা এগুলো পৌরসভার দেখভাল করা দরকার।