২০২৫ সালের জুনে ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে ইরানের তৈরি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘কাসেম বাসির’। শহীদ কাসেম সোলাইমানির নামে নামকরণ করা এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রথমবার পরীক্ষা করা হয় গত ১৭ এপ্রিল এবং আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করা হয় ৪ মে।
যুদ্ধ চলাকালে ইরান প্রতিদিন গড়ে ৪০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করলেও একদিন মাত্র একটি—‘কাসেম বাসির’—ব্যবহার করা হয়। সেটি সরাসরি দখলকৃত হাইফায় আঘাত হানে এবং ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে যায়। এমনকি বিলিয়ন ডলারের মার্কিন ‘থাড’ ও ‘প্যাট্রিয়ট’ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও তা প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হয়। এতে প্রমাণিত হয়, ইরানের দাবি অনুযায়ী এই ক্ষেপণাস্ত্র জিপিএস ছাড়াই নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম।
ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজিজ নাসিরজাদে বলেন, “কাসেম বাসির ইরানের সবচেয়ে নির্ভুল ক্ষেপণাস্ত্র, প্রয়োজনে এটি হবে আমাদের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র।” বিশ্লেষকরা মনে করেন, ক্ষেপণাস্ত্রটির উন্মোচন যুদ্ধের আগেই ছিল এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক কৌশল, যার মাধ্যমে তেহরান দেখাতে চেয়েছে তাদের হাতে আঞ্চলিক শক্তির ভারসাম্য পাল্টে দেওয়ার মতো অস্ত্র রয়েছে।
কাসেম বাসির কঠিন জ্বালানিচালিত হওয়ায় এটি দ্রুত উৎক্ষেপণের উপযোগী। পাল্লা ১২০০ থেকে ১৪০০ কিলোমিটার। এতে রয়েছে উন্নত নেভিগেশন ও থার্মাল ইমেজিং ব্যবস্থা। জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহার না করায় এটি ইলেকট্রনিক যুদ্ধেও কার্যকর এবং শত্রুর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এড়িয়ে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ক্ষেপণাস্ত্রের আবির্ভাব মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে এবং ইসরায়েলের নিরাপত্তা কৌশলকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।