লক্ষ্মণ চন্দ্র মন্ডল,বাঘারপাড়া(যশোর)থেকে।
হোয়াইট ফ্লাই‘বা সাদামাছি পোকার আক্রমনে সারাদেশের নারিকেলের উৎপাদন মাত্রাতিরিক্ত হারে কমে গেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে নারিকেল গাছে ব্যাপক আকারে সাদা মাছি পোকার আক্রমন দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে খুলনা,যশোর,নড়াইল,সাতক্ষিরা,বাগেরহাট,ঝিনাইদহ,ফরিদপুর জেলায় এর আক্রমনে রাতারাতি পাতা সাদা হয়ে যাচ্ছে। নারিকেলের আকার ছোট হচ্ছে ও ভিতরের পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নারিকেল শিল্প ধবংস হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীদের মতে ইকোলজিক্যাল ভারসাম্য ক্ষতিগ্রস্থ হওয়াই পোকা মাকড় আবাসস্থল হারাচ্ছে। প্রতিটি অঞ্চলের নারিকেল গাছে এখন আর আগের মত ডাব/নারিকেল দেখা মেলে না। সব অঞ্চলের নারিকেল গাছে এখন ব্যাপকহারে হোয়াইট ফ্লাই বা সাদামাছি পোকা‘র আক্রমন লক্ষ্য করা যায়।
সাম্প্রতিক কালে সারা দেশে নারিকেলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সমন্বিত ফসল ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি উদ্ভাবন প্রকল্প,আইডি নং ০২৬ পিআইইউ- বিএআরসি,এনএটিপি ২য় পর্যায় এর অর্থায়নে ,সোসাইটি ফর
সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ফর দি রুরাল এন্ড আরবান এরিয়া (সার্ডা)র বাস্তবায়নে যশোরের বাঘারপাড়ার গাইদঘাট,কেষ্টপুর এবং সাতক্ষিরার বাকাল ও কলারোয়া অঞ্চলের মোট ৩৬ জন চাষীর সর্বমোট ২০১টি গাছের উপর দু‘বছর ধরে এই নারিকেলের ফলন বৃদ্ধির গবেষনা কর্মকান্ড চালানোর পর বাঘারপাড়ার কেষ্টপুর
গ্রামে গত বছর সমন্বিত ফসল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নারিকেলের ফলন বৃদ্ধি শীর্ষক
মাঠ দিবসও অনুষ্ঠিত হয়।
এ অনুষ্ঠানে যশোর আঞ্চলিক কৃষি গবেষনা কেন্দ্রের (আরএআরএস)ফল বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আশরাফুল আলম এর সভাপতিত্বে বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউট গাজীপুর এর উদ্যানতত্ত গবেষণা কেন্দ্রের ফল বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও কোঅর্ডিনেটর (কোকোনাট আইসিএম প্রোজেক্ট) ড. বাবুল চন্দ্র সরকার প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে নারিকেলের ফলন বৃদ্ধির গবেষনা কর্মকান্ডে বছরে প্রতিটি ধরন্ত নারিকেল গাছের গোড়ায় যে পরিমান জৈব ও রাষায়নিক সার ২কিস্তিতে ব্যাবহার করা হয়েছে এবং ২ কিস্তিতে যে সকল মাকড় নাশক ও কীট
নাশক গাছের মাথায় স্প্রে করা হয়েছে, সেবিষয়ে বিস্তারিত বর্ননা দিয়া হয়। সারা দেশের নারিকেল চাষীদের দোর গোড়ায় এই গবেষনা কর্মকান্ড পৌঁছে দেয়ার জন্য নারিকেলের গবেষনার উপর ছোট পুস্তিকা/হাত বই প্রকাশ করে সকল কৃষকের হাতে পৌছানোর জন্য কৃষকদের পক্ষ থেকে আহবান জানানো হয়। কিন্তু আজও তা বাস্তবায়িত হয়নি।
তবে ঐ সময়ের গবেষনার বিষয়টি বর্তমান যেন ফলপ্রসু হচ্ছে না। যে কারনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নারিকেল শিল্প বাঁচাতে গেলে এবং নারিকেলের উৎপাদন ধরে রাখতে গেলে সারা দেশে নারিকেলের উপর ব্যাপক গবেষনা দরকার বলে কৃষক, কৃষিবিদ ও কৃষি বিজ্ঞানীগন মন্তব্য করেছেন।