1. bdtelegraph24@gmail.com : বিডিটেলিগ্রাফ ডেস্ক :
  2. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  3. tarim7866@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
দাবিগুলো কি জুলাইয়ের সাথে গাদ্দারী? - টেলিগ্রাফ বাংলাদেশ
সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ০৮:৩৬ অপরাহ্ন

দাবিগুলো কি জুলাইয়ের সাথে গাদ্দারী?

  • সর্বশেষ আপডেট : রবিবার, ২৫ মে, ২০২৫
  • ৫২ জন খবরটি পড়েছেন

মোঃ মাসুম বিল্লাহ।
বাংলাদেশ একটা সংকটকালীন সময় পার করছে। বর্তমান দেশের সংকটের মূল কারণ হচ্ছে জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তীতে একটা সরকার ব্যবস্থা ভেঙে যাওয়ার ও পরে নতুন একটা সরকার কাঠামো গড়ে তোলা। আর এই সমস্যাটাকে মোকাবেলা করতে গিয়ে আরও তিনটি সমস্যা উদ্ভূত হয়েছে। তার মধ্যে একটা হচ্ছে দ্রুত নির্বাচন দাবি করা। দুই নাম্বার হচ্ছে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে ছাত্রদের বিতাড়িত করা বা বাদ দেওয়া। তিন হচ্ছে দেশকে অস্থিতিশীল করে কোন একটা বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থ হাসিল করা এবং সরকারের ইমেজ নষ্ট করে সরকার কে ব্যর্থ করা। মোটা দাগে প্রথম যে দাবিটি সেটা একটা বিশেষ দল ছাড়া অন্য কোন দলকে করতে দেখা যাচ্ছে না এবং সেখানে প্রভাব বিস্তার করছে।

সশস্ত্রবাহিনীর কর্তা ব্যক্তি তার কথাবার্তায় নির্বাচনে বিষয়টিকে তিনি অনেক বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। বিএনপি শুধু গুরুত্ব দিচ্ছেনা বরং তারা দ্রুত নির্বাচনের জন্য চাপ দিচ্ছেন। এমনকি তারা এটা নিয়ে বেশ অসন্তোষ দেখাচ্ছেন। যদি নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে না হয় তাহলে তারা সরকারকে আর সহযোগিতা করতে পারবেন না বলে হুমকি দিচ্ছে। এরপরে আরেকটা বিষয় হচ্ছে যে, ছাত্র উপদেষ্টা হিসেবে যে দুজন রয়েছেন সেই প্রতিনিধি দুইজনকে এনসিপির অঙ্গীভূত মনে করে তাদের পদত্যাগ দাবি করেছেন। একই সাথে বিদেশ থেকে আগত আমাদের নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান তাকে এদেশের জন্য হুমকি মনে করে তারও পদত্যাগ দাবি করেছেন। এটিও মূলত বিএনপি’র থেকে আগত অভিযোগ। এর বাইরে আরেকটা মূল কারণ বা মূল সমস্যা বিরাজ করছে। দেশের ভিতরে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য কোন একটা গোষ্ঠী নিজের স্বার্থের জন্য সবকিছু করতে পারে
বা নিজেদের ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত করতে যা করণীয় সে সকল পদক্ষেপ তারা নিচ্ছেন।

প্রথম কথা হচ্ছে জুলাই নতুন পরিস্থিতির জন্মদাতা অর্থাৎ জুলাই একটা নতুন প্রেক্ষাপট সৃষ্টি করেছে।যে প্রেক্ষাপটে নির্বাচন দ্রুত দিতে হবে এরকম কোন দাবি ছিল না। অর্থাৎ জুলাইয়ের দাবি ছিল না যে নির্বাচন দ্রুত দিয়ে একটা নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে। বরং জুলাইয়ের একটা চেতনা ছিল আমরা বৈষম্য বিরোধী সমাজ গড়ে তুলবো সাম্যের ভিত্তিতে। আমাদের রাষ্ট্র পরিচালিত হবে সততা, নিষ্ঠা, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে। যারা দ্রুত নির্বাচন নির্বাচন জপ তুলছেন তারা মূলত জুলাইয়ের চেতনার বিরোধী কাজ করছেন। অর্থাৎ জুলাইয়ের চেতনা কখনো নির্বাচন কেন্দ্রিক ছিল না। নির্বাচন সম্পর্কে যারা বারবার তাদের মত দিচ্ছেন তারা জুলাইকে বিশ্বাস করেন না। এজন্য তারা বারবার নির্বাচনের কথা বলে জুলাইকে অস্বীকার করছেন। বরং এমন কর্মকান্ড জুলাই জনতার
অপমান। সর্বাগ্রে আপনাদের জুলাই জনতার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। কেন জুলাই সমগ্র জনতা এ সরকারকে সেই মেন্ডেট দিয়েছিল তা মনে রেখে মন্তব্য করতে হবে। যারা শুধু নির্বাচন চাচ্ছে তাদের প্রতিনিধি হয়ে এ সরকার আসেনি। বরং তাদের ব্যার্থতা থেকে পরিত্রাণ দাতা হিসাবে এসেছেন। এ সরকার একমাত্র এসেছে জুলাই জনতার প্রতিনিধি হয়ে। সুতরাং আপনারা জুলাই জনতার ইচ্ছা,জুলাই জনতার স্বপ্ন যেদিন বাস্তবায়ন করতে পারবেন সেদিনই নির্বাচন অনুষ্ঠিত করবেন।

এবার দ্বিতীয় প্রসঙ্গটি হচ্ছে ছাত্র উপদেষ্টা দুজনসহ খলিলুর রহমান নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদত্যাগ। নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদত্যাগের বিষয়ে সরকার ভালো মনে করে তাকে এনেছেন; সে বিষয়ে সরকারি আমাদের থেকে হয়তো ভালো বুঝবেন। কিন্তু এটাতে যারা বহির্বিশ্ব থেকে আসা মানুষ মনে করে নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করছেন তারাও বিভিন্ন সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রে অবস্থান করে দেশে এসেছেন। এমনকি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়রম্যান দীর্ঘ সময় বাইরে আসেন। তথাপি তার কথায় দেশের একটা দল চলে। সে বিষয়ে বিবেচনা করলে বিষয়টি রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের একটা কৌশল ছাড়া আর কিছু না। তাছাড়া তিনি আসার পরে ভারতের সাথে কিছু চুক্তি অন্ধকারে তরিয়ে যাওয়ার ভয়ে অনেকে তার বিরোধিতা করছেন। ভারত থেকে আগত যুদ্ধাস্ত্রসহ অন্যান্য কেনাকাটার বিরোধিতা থেকে তার বিরুদ্ধে অবস্থান করছে কিছু দেশের স্বার্থ ব্যাহত করার কুচক্রি মহল। অন্যদিকে দুজন উপদেষ্টা রয়েছেন যারা ছাত্র প্রতিনিধি।

মূলত জুলাই হয়েছিল ছাত্রদের জন্য। এ ছাত্ররা জুলাইয়ের একমাত্র ক্রেডিট দাবি করতে পারে। তারা একমাত্র উত্তরাধীকারী শক্তি। এছাড়া বিগত সময়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যার্থতার ইতিহাস একটা ক্ষেত্র তৈরি করেছে মাত্র। কিন্তু তারা সফল হতে পারেনি। এজন্য জুলাই সম্পর্কে তাদের বিভিন্ন বক্তব্য আমরা এর আগেও দেখেছি যা জুলাই চেতনা পরিপন্থী। মূলত জুলাই তাদের নিয়ে যারা জুলাইয়ের শক্তি ছিল, যারা জুলাইয়ে পঙ্গুত্ববরণ করেছে, হয়েছে
শহীদ। তাদের জীবনের আত্ম ত্যাগের বিনিময়ে আমাদের দেশটাকে উদ্ধার করেছে। সেই প্রতিনিধি যদি না থাকে তবে এই সরকারের কোন ভিত্তি থাকে না। আমাদের নতুন দেশ দিয়েছে এই ছাত্ররা। আর সেখানে তারা প্রতিনিধিত্ব করবে না এটা জুলাইয়ের সাথে বেঈমানী। তাদের বাদ দিয়ে অন্য কোন রাজনৈতিক দলের এখানে প্রতিনিধিত্ব করার কোন সুযোগ নেই। সুতরাং এই ছাত্র উপদেষ্টাদের বাদ দাও মানে জুলাইকে অস্বীকার করা, মুছে ফেলা, পুরানো বন্দোবস্তে ফিরে যাওয়া।

তিন নাম্বার যে সমস্যাটি সেটা হচ্ছে দেশে অস্থিতিশীল একটা অবস্থা সৃষ্টি করে দেশটাকে কিভাবে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া যায়। এ সরকারকে কিভাবে ব্যর্থ করা যায় সে জন্যদেশি বিদেশি ষড়যন্ত্রকারী তৎপর। বিশেষ একটা রাজনৈতিক গোষ্ঠী এবং বিশেষ করে আমাদের একটা নেতৃত্ব স্থানীয় প্রধান বেশ কথা বলছেন। একই সাথে বাংলাদেশ বিরোধী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মৃত প্রায় পুরানো প্রেম যেমন ফিরে পাওয়া যায় না তেমনি পুরানো প্রেমের প্রতি মায়া রাখাটাও দুর্বলতা। তাই সে মায়া কাটিয়ে উঠতে হবে। আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে। আমাদের প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে দায়িত্ব ও পেশাদারিত্বের পরিচয় দিতে হবে। যারা আজকে জুলাইকে ধারণ করে না বিশ্বাস করে না শুধু তারাই দেশকে অস্থিতিশীল করে একটা সংকটময় মুহূর্ত তৈরি করে ক্ষমতায় যেতে ব্যস্ত। আর যারা এটা করছে তারা জুলাইয়ের গাদ্দার।

জুলাইকে যারা অস্বীকার করে তারা এই দেশকে ধারণ করে না। তাদের থেকে আমাদের দূরে থাকতে হবে এবং তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে। জুলাই যদি সত্য হয় তাহলে এই উপদেষ্টাদের পদত্যাগ কখনো গ্রহণযোগ্য নয়। দেশের এই সংকট মোকাবেলা করতে গেলে উপদেষ্টা পরিষদকে এবং সরকারকে এটা মনে রাখতে হবে তারা কেন এসেছে। তারা কোন প্রতিশ্রুতি নিয়ে এসেছে। তারা কোন প্রেক্ষাপটে এসেছে। তারা কাদের জন্য এসেছে। তাদের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা পূরণ করতে হবে। কোন কারণে অন্য কোন দল নেতা বা কোন গোষ্ঠীর কাছে মাথা নত করা যাবে না। দেশকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে গেলে কঠোর হস্তে এরকম বিরোধিতা দমন করতে হবে। ভারতের সুরে কথা বলা বাদ দিতে হবে। তবেই বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2024
Theme Customized By BreakingNews