ডেস্ক নিউজ
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা সহ দেশের প্রায় সব এলাকায় টানা বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে এই বৃষ্টি শুরু হয় এবং তা আগামী সপ্তাহজুড়ে অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে নোয়াখালীর মাইজদীকোর্টে, যেখানে ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে গভীর নিম্নচাপটি উপকূল অতিক্রম করে স্থলভাগে উঠে আসে এবং শুক্রবার সকালে এটি টাঙ্গাইল অঞ্চলে অবস্থান করছিল।
আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন, ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ এলাকায় আজও বৃষ্টি থাকবে, তবে কোথাও ভারী, কোথাও হালকা হতে পারে। বিশেষ করে ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উপকূলীয় নদীবন্দরগুলোতে দুই নম্বর ও অন্য স্থানে এক নম্বর সংকেত জারি করা হয়েছে।
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। অন্যত্র ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজারের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের ঝুঁকি রয়েছে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এছাড়া ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে, যার কারণে সাধারণ মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
এদিকে, বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টির কারণে দেশের ছয় জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা রয়েছে। এসব জেলা হলো—ফেনী, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, সিলেট ও নেত্রকোনা।
ফেনীর মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে জানানো হয়েছে। একইভাবে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের নদ-নদীর পানি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে—সারিগোয়াইন, যাদুকাটা, মনু, ধলাই, খোয়াই ও সোমেশ্বরী।
তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার নদীর পানি বাড়তে পারে এবং তিস্তার পানি সতর্কসীমায় পৌঁছাতে পারে। যদিও ব্রহ্মপুত্র-যমুনার পানি সাময়িকভাবে স্থিতিশীল থাকলেও পরবর্তী চার দিন তা বাড়তে পারে। পদ্মা ও গঙ্গার পানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকলেও তা বিপৎসীমার নিচে থাকবে।
উপকূলীয় জেলাগুলোর নদীতেও স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু জোয়ারের পূর্বাভাস রয়েছে। সব মিলিয়ে আগামী কয়েক দিন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।