যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসান আলী ও পৌর আওয়ামী লীগের আহবায়ক, পৌর মেয়র কামরুজ্জামান বাচ্চুর বিরুদ্ধে দলীয় প্রত্যয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্রীয় তদন্তের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২২ অক্টোবর) উপজেলার সকল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদের আয়োজনে বিভিন্নস্থানে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এদিন বিকেলে বন্দবিলা ইউনিয়নের ভাটার আমতলায় যশোর-মাগুরা মহাসড়ক, রায়পুর ইউনিয়নের রায়পুর বাজার, নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নের নারিকেলবাড়িয়া বাজার, বাসুয়াড়ি ইউনিয়নের চাড়াভিটা বাজারে যশোর-নড়াইল মহাসড়ক ও ধলগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের পাশে পৃথক পৃথক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে তৃণমূল আওয়ামী লীগের শতশত নেতাকর্মীরা অংশ নেয়।
মানববন্ধন শেষে পথসভায় বক্তব্য রাখেন, জহুরপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার টফি, বন্দবিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মনোনয়ন প্রত্যাশী রুবেল রানা, রায়পুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মনোনয়ন প্রত্যাশী আব্দুল মালেক মন্ডল, সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন, যুবলীগ নেতা মুন্সী মনিরুজ্জামান, নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মনোনয়ন প্রত্যাশী বাবলু সাহা, ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলাম, উপজেলা যুবলীগের সদস্য ফারুক হোসেন, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুরঞ্জিত অধিকারী পলক, বাসুয়াড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মনোনয়ন প্রত্যাশী আমিনুর রহমান সর্দার, সাধারণ সম্পাদক নুর জালাল, যুবলীগ নেতা লিটন সর্দার, ধলগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী সুভাষ দেবনাথ অভিরাম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলীয় প্রত্যয়ন দেওয়ার কথা বলে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাছ থেকে হাসান আলী ও কামরুজ্জামান বাচ্চু মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন। তারা দু’জনে সিন্ডিকেট করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। যে সব প্রার্থীরা টাকা দেননি তাদের প্রত্যয়ন দেওয়া হয়নি। কোন রকমের অর্থ বাণিজ্য ছাড়াই প্রকৃত-যোগ্য নেতাদের দলীয় প্রত্যয়ন ও মনোনয়ন দেওয়ার জোর দাবি জানাই। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করে অভিযুক্ত দু’জনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান বক্তারা।
এর আগে ১৭ অক্টোবর আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনার বরাবর এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগে বন্দবিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী আব্দুস সামাদ মন্ডল বলেন, দলীয় প্রত্যয়ন পত্র দিতে ১৬ অক্টোবর রাতে বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসান আলী ব্যক্তিগত মুঠোফোন (০১৭১৮-৬১৯০১৯) থেকে কল করে আমাকে তার বাসায় যেতে ডাকেন। পরদিন সকালে তার বাসায় গেলে আলাপচারিতার এক পর্যায়ে টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে দলীয় প্রত্যয়ন দেওয়া যাবে না বলে জানান। এদিন বিকেল তিনটা পর্যন্ত টাকা দেওয়ার সময় বেধে দেন তাকে এবং কে কে টাকা দিয়ে প্রত্যয়ন নিয়েছেন তাও জানান। এর আগেও বাঘারপাড়া পৌরসভা নির্বাচনে হাসান আলী দলীয় প্রত্যয়ন বাণিজ্য করেছিলেন বলে অভিযোগ উল্লেখ করেছেন তিনি।
বন্দবিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সামাদ মন্ডল লিখিত অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যয়ন বাণিজ্যে অভিযুক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসান আলীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
এ ব্যাপারে বাঘারপাড়া পৌরসভার মেয়র কামরুজ্জামান বাচ্চু ফোন রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।