1. bdtelegraph24@gmail.com : বিডিটেলিগ্রাফ ডেস্ক :
  2. suma59630@gmail.com : ফাতেমা আকতার তোয়া : ফাতেমা আকতার তোয়া
  3. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  4. tarim7866@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
  5. wasifur716@gmail.com : Wasifur Rahaman : Wasifur Rahaman
৪২ বছর আগে আজকের এই দিনে পবিত্র ক্বাবাঘর বেদখল হয়েছিল ! - বিডিটেলিগ্রাফ | Bangla News Portal, Latest Bangla News, Breaking, Stories and Videos
শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:৪৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
কক্সবাজারে ট্রেনের ধাক্কায় সিএনজি: নিহত ৫ ‘যে গাছে ফরহাদের ছবি আছে, সেই গাছের নিচে শপিং ব্যাগে টাকা রেখে যাবি’ জুলাই গণহত্যার বিচারের দাবিতে পঞ্চগড় জেলা ছাত্রশিবিরের “জুলাই দ্রোহ” বাঘারপাড়া ডিগ্রি কলেজের সভাপতি হিসেবে প্রথম সভা করলেন নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ শেরপুর–মৌলভীবাজার মহাসড়কে বাসের ধাক্কায় যুবক নিহত ‘কিলার গ্যাং’ প্যাডে ৫ লাখ টাকার চাঁদা দাবি, পুলিশের হাতে ৫ জন প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা ‘বৈষম্যমূলক’ নয়, ব্যাখ্যা দিল মন্ত্রণালয় ফ্লাইট এক্সপার্ট হঠাৎ বন্ধ, মালিক দেশত্যাগের অভিযোগ অভয়নগরে বিএনপির উদ্যোগে যৌথ প্রস্তুতিমূলক সভা এক বছর ম্যাচই খেলেননি, তিনিই বর্ষসেরা ক্রিকেটার

৪২ বছর আগে আজকের এই দিনে পবিত্র ক্বাবাঘর বেদখল হয়েছিল !

  • সর্বশেষ আপডেট : রবিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২১
  • ৪২২ জন খবরটি পড়েছেন

৪২ বছর পূর্বে, ১৯৭৯ সালের এইদিনে (২০ নভেম্বর) মুসলিম জাহান স্থম্ভিত হয়ে গিয়েছিল। পুরো ২ সপ্তাহ বেদখল ছিল বাইতুল্লাহ আর ক্বাবাঘর। একটানা ১৫টি দিন বাইতুল্লাহ তাওয়াফ হয়নি, হারাম শরীফে আজান ও জামাত হয়নি। শিয়া আর ইখওয়ানের সেই তাণ্ডব আজও দুঃস্বপ্নে তাড়া করে ফেরে।.

২০ নভেম্বর ১৯৭৯, ১ মুহাররম ১৪০০ হিজরি সাল। জিলহজ্জ মাস শেষ হয়ে গেলেও তখনও অনেক হাজী মক্কায় রয়ে গেছেন। মসজিদুল হারামে জামাত অনেক বড় হচ্ছিল। ফজরের জামাতে প্রায় এক লক্ষ মুসল্লি উপস্থিত থাকতেন।.সেদিন ফজরের জামাত শুরুর একটু পূর্বে কয়েকটি লাশ নিয়ে আসা হলো। প্রতিদিনই লাশ আসত; তবে, ঐদিন একটু বেশি এলো। এটা নিয়ে কেউ অবশ্য সন্দিহান হয়নি। ফরজ সালাতের পরে জানাজা হবে।

ইমামতিতে এগিয়ে এসেছেন শেখ মোহাম্মাদ আল-সুবাইল। কিন্তু লাশ বহনকারীরা এসে তাঁকে সরিয়ে দিল এবং স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র বের করে শূণ্যে গুলি ছুঁড়লো। হারাম শরীফে গুলিতে সকলে স্তম্ভিত হয়ে গেলেন। কিংকর্তব্যবিমূঢ় সকলে।.এরই মাঝে একজন চিৎকার করে ঘোষণা করল- “ইমাম মাহদি আবির্ভূত হয়েছেন”। তখন অস্ত্রধারীরা কফিনের ঢাকনা খুলে ফেলল। দেখা গেল- লাশ নয়, সেখানে ভর্তি আগ্নেয়াস্ত্র।

ঐসব অত্যাধুনিক অস্ত্র সৌদি আরবে পরিচিত নয়।.লাশবাহীরা অস্ত্র নিয়ে হারাম শরিফের বিভিন্ন অংশে অবস্থান নিলো এবং গেটগুলো শিকল দিয়ে আটকে দিলো। বাঁধা দিতে গিয়ে নিরস্ত্র দুজন পুলিশ সদস্য গুলিতে নিহত হলেন। হতবিহ্বল মুসল্লিরা কিছু বুঝে উঠতে পারার আগেই জিম্মি হয়ে গেলেন!.

ক্বাবার সামনে দাঁড়িয়ে জুহাইমান আল ওতাইবি ভাষণ দিলেন। তিনি নিজ ভগ্নিপতি মুহাম্মাদ কাহতানিকে “ইমাম মাহ্‌দি” হিসেবে উপস্থাপন করলেন এবং সকলের সামনে তার কাছে বায়াত গ্রহণ করলেন। এরপর অস্ত্রধারীরা সমবেতভাবে তার কাছে বায়াত গ্রহণ করলো এবং মুসল্লিদেরকে যোগ দিতে আহ্বান জানালো।.

দখলদাররা হারাম শরিফের মাইক ব্যবহার করে তাদের বক্তব্য ও দাবী দাওয়া পেশ করতে থাকে- “যেহেতু ইমাম মেহেদী আবির্ভূত হয়েছে, তাই সৌদ বংশের রাজত্ব শেষ।” মাহদীর হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে সৌদদের চলে যেতে হবে।.হাদিসে ইমাম মাহ্‌দির যে পরিচয় পাওয়া যায়, তা ঐ ব্যক্তির সাথে মোটামুটি মিলে গিয়েছিল। তার নাম ও পিতার নাম এবং নবী (সঃ) এর নাম ও পিতার নামে ছিল।

এছাড়া, প্রতি শতাব্দির শুরুতে একজন মুজাদ্দিদ আবির্ভূত হবেন বলে বর্ণনা রয়েছে; সেই দিনটাও ছিল, হিজরি নতুন শতাব্দী শুরুর দিন!.বাইতুল্লাহ কেউ এসে অস্ত্রের জোরে দখল করবে- এটা কেউ ভাবতে পারেনি। আবার, হারাম শরীফে অস্ত্র বহন করা নিষেধ, তাই পুলিশরাও অস্ত্র ছাড়া ডিউটি করতেন।

মাইকে দখলকারীদের ঘোষণা শুনে পুলিশের বড় একটি দল দখলমুক্ত করতে যান, কিন্তু দখলকারীদের স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের তোপে তাঁরা ছিন্নভিন্ন হয়ে যান।.মক্কা থেকে সবাইকে সরিয়ে দেয়া হয়, ইন্টারন্যাশনাল টেলিফোন সার্কিট অফ করে দেয়া হয় এবং ঘটনা গোপন রেখে উদ্ধার অভিযান শেষ করার পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু সকাল না হতেই ওয়াশিংটন থেকে এই ঘটনা প্রকাশিত হয়ে যায়!

সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে বিশ্বের দেশে দেশে মুসলিমরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।.সন্দেহের তীর ছুটে যায় আমেরিকার দিকে। ইরানের সদ্য সফল শিয়া বিপ্লবের নেতা আয়াতুল্লাহ্‌ খামেনি তাৎক্ষণিক ভাষণে আমেরিকাকে দায়ী করেন। পাকিস্থানে যুক্তরাষ্ট্রের দুতাবাস ভেঙ্গে ও পুড়িয়ে মাটিতে মিশিয়ে দেয়া হয়। লিবিয়াতেও আমেরিকার দুতাবাস পুড়িয়ে দেয়া হয়।

এদিকে হারাম শরীফে রক্তপাত যেহেতু নিষিদ্ধ, উদ্ধার অভিযানে নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। সৌদী কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্তের জন্যে আলেমদের শরণাপন্ন হন। অনির্বচনীয় এক ঘটনায় ফতোয়া দিতে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে আলেমদের বেগ পেতে হয়।.কারণ- জুহাইমান আল ওতাইবি নিজে অনেক বড় মাপের আলেম ছিলেন। তিনি ভয়ঙ্কর অন্যায় করে ফেলেছেন বটে, কিন্তু এতবড় একজন আলেম একদম না বুঝে কিছু করার কথা নয়- এই চিন্তায় সিদ্ধান্ত দিতে আলেমরা বিচলিত ছিলেন।

অবশেষে আলেমরা সিদ্ধান্ত দিলেন- দখলদারদেরকে আত্মসমর্পনের জন্য যথেষ্ট আহ্‌বান জানাতে হবে এবং সুযোগ দিতে হবে। দখলদাররা যদি সম্মত না হয়, তাহলে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যাবহার করে রক্তপাতের ঝুঁকি নেয়া যেতে পারে। তবে, যতটা সম্ভব কম রক্তপাতে কাজটি সারা যায়- সেদিকে জোর দিতে হবে।.

সৌদী সরকার অন্য একটি কাজ করেছিল। সময়ক্ষেপণ করে ওদেরকে ক্ষুধায় কাতর করার চেষ্টা করা হলো। কিন্তু দেখা গেল- তারা ব্যাপক পরিমাণ খেজুর নিয়ে প্রবেশ করেছিল এবং জমজম কূপ তাদের দখলেই ছিল। ফলে, এই প্রচেষ্টা ব্যার্থ হয়েছিল।.সৌদী বাহিনী কয়েকটি অভিযানও চালিয়েছিল; কিন্তু বিশেষত মিনারগুলো থেকে দখলদারদের স্নাইপার আক্রমণে সেসব অভিযান ব্যার্থ হয়ে যায়।

তাদের সুবিধা ছিল- একমাত্র গেটের ভিতরে অসংখ্য জিম্মি নিয়ে তারা অবস্থান করছিল। ফলে, তাদের উপর অ্যাটাক করা ছিল অসম্ভব।.সরকার অতি গোপনে বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর কাছে কৌশলগত সহযোগিতা চাইল। ফ্রান্সের GIGN কমান্ডো এগিয়ে এলো। কিন্তু পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে নিশ্চিত ব্যাপক মৃত্যুর শঙ্কায় তারা বিরত থাকল। তারা সুইসাইডাল কমান্ডো দিয়ে অভিযান পরিচালনা করতে মর্মে পরামর্শ দিল, যেটা তারা নিজেরা পারবে না।.

বিশ্বের এতগুলো মুসলিম থাকতে ক্বাবা উদ্ধারে “মরার জন্য প্রস্তুত” কমান্ডো হাজির করল একমাত্র পাকিস্থান ! মেজর (পরবর্তী জেনারেল) পারভেজ মুশাররফ এর নেতৃত্বে পাক SSG কমান্ডোরা এসে দমকলের সাহায্যে ভিতরে প্রচুর পানি নিক্ষেপ করল এবং তাতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে অনেককে হতাহত করে ফেলল।.

তারপর তারা হারাম শরীফের অভ্যান্তরে চেতনানাশক গ্যাস ছুঁড়ে দিল। যদিও সন্ত্রাসীরা গ্যাস মাস্ক নিয়ে প্রবেশ করেছিল, তবে এতে অনেক লোক অচেতন হয়ে গেল। এতে একটা মামুলি সুযোগ তৈরি হলো। কমান্ডোরা দুর্দান্ত অভিযান চালিয়ে দ্রুততম সময়ে হারাম শরীফ দখলমুক্ত করে ফেলেন।

অভিযানে দখলদার মারা যায় ২৫৫ জন, আর আহত হয় ৫৬০ জন। মিলিটারি থেকে মারা যান ১২৭ জন, আর আহত হন ৪৫১ জন। কথিত ইমাম মাহদি গুলিতে নিহত হয়। মাস্টারমাইন্ড জুহাইমান ৬৭ জন ফলোয়ারসহ আরেস্ট হয়। তাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।

সব ঘটনার শেষে যাচাই করে একটা বিস্ময়কর ফলাফল পাওয়া গেল। দেখা গেল যে, দখলদারদের দুই-তৃতীয়াংশের বেশি লোক ছিল ইরানী শিয়া আর অবশিষ্টরা ছিল ইখওয়ান সংগঠনের সদস্য।.

ঘটনাটি এত ছোট এবং সহজ ছিল না। এত বড় ঘটনা দানা বেঁধে উঠতে অনেক কিছু ব্যাপার ছিল। ঘটনার প্রতি পরতে পরতে হিমশীতল উত্তেজনায় আপনাকে গ্রাস করবে।

তথ্যসুত্র- ohammad Salimullah.এই লিংকে মিলিটারি আসপেক্ট থেকে বিবরণ পাবেন- https://www.globalsecurity.org/…/war/mecca-mosque-1979.htm, https://www.kjreports.com/the-1979-siege-of-makkah, www.bbc.com/news/stories-50852379, http://www.linkedin.com/…/pakistan-stunned-world…

লেখক- কাজী অরেছুল ইসলাম,দুবাই

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2025
Theme Customized By BreakingNews