1. bdtelegraph24@gmail.com : Bdtelegraph Bangla :
  2. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  3. islam.azizul93@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
পালাগান রচয়িতা প্রখ্যাত লোকশিল্পী শালিখার বিরেন্দ্রনাথ রায় - টেলিগ্রাফ বাংলাদেশ
মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:০০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
দেবহাটা উৎসবমুখর পরিবেশে সরস্বতী পূজা পালিত শফিকুল আলমের শাস্তি দাবি: মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সরব প্রতিবাদ গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা শুরু, হামাসের প্রস্তুতি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণায় শ্যামনগরে আনন্দ মিছিল কুড়িগ্রামে হত্যা মামলায় আওয়ামীলীগ নেতা সাজু গ্রেফতার জেপিসি কমিটির বিরুদ্ধে মুসলিমসহ ভিন্নমত দমনের অভিযোগ মহাকুম্ভে পুণ্যার্থীদের জন্য মসজিদ-মাদ্রাসা ও ইমামবাড়ীর দরজা খুলে দিলেন মুসলিমরা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির লড়াইয়ে রণক্ষেত্র ফুসরা গ্রাম, আহত ৮ ফাঙ্গিও-মসের চালানো মার্সিডিজ স্ট্রিমলাইনার বিক্রি হলো ৬৫০ কোটি টাকায় দাবি না মানলে রেললাইন ছাড়ব না, শিক্ষার্থীদের হুঁশিয়ারি

পালাগান রচয়িতা প্রখ্যাত লোকশিল্পী শালিখার বিরেন্দ্রনাথ রায়

  • সর্বশেষ আপডেট : শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৭২ জন খবরটি পড়েছেন

।। লক্ষ্মণ চন্দ্র মন্ডল।। মাগুরার শালিখা উপজেলার নিম্ন প্লাবিত অঞ্চল বরইচারা গ্রামে ১৯৩২ সালের ৪ এপ্রিল বিরেন্দ্রনাথ রায় জন্মগ্রহন করেন। তার পিতার নাম প্রিয়নাথ রায় ও মাতা জ্ঞানদা রায়। পিতা মাতা দুইজনই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। তিনি নিজেও ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী বুধবার রাত ১১টায় নিজবাড়ি বরইচারা গ্রামে সকলকে কাদিঁয়ে পরপারে চলে যান। ১৬ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার তারঁ শেষ কৃত অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

তিনভাই তিন বোনের মধ্যে বিরেন্দ্রনাথ রায় ছিলেন সকলেরই বড়। গরীব অসহায় হতদরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহন করলেও শত অভাব অনটনের মধ্যেও গ্রামবাংলার সাড়া জাগানো লোকসংগীতকে তিনি হারিয়ে যেতে দেননি। অভাবের সংসারে কোন রকম খেয়ে না খেয়ে ভাবনহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে তিনি নবম শ্রেনী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছিলেন। যে বয়সে তিনি স্কুলে লেখাপড়া করবেন ঠিক সেই বয়সে তিনি হাতে তুলে নিয়েছিলেন শিল্প সাধনার কলম।

লিখতে থাকেন মানুষের আনন্দ উপভোগের জন্য অষ্টক গান ও জনপ্রিয় যাত্রা পালার বই। নিজ হাতে গড়ে তোলেন একাধিক অষ্টক গান ও যাত্রা পালার দল। রাতের পর রাত বিভিন্ন মঞ্চে অভিনীত হয়েছে তার সেই সব সাড়া জাগানো অষ্টক ও যাত্রা পালা। যে পালা দেখার জন্য ভারত ও বাংলাদেশের গ্রাম বাংলার সাধারন খেটে খাওয়া মানুষ ঘুম হারাম করে উপভোগ করে হৃদয় জুড়ায়ে তৃপ্ত হয়েছিলেন। তার লেখা বইয়ের মধ্যে রয়েছে বন্ধনা, চন্ডিদাস রজকিনী,মানভঞ্জন, খুদিরামের ফাঁসি, সীতা হরন, ধরাদ্রনো, অচৈতন্য ভগবান, প্রহ্লাদ চরিত্র, কৃষ্ণ কালী, সুজন মাঝি, রাম বনবাস সহ ৩২টি অষ্টক পালা গানের বই। যাত্রাপালা গানের বইযের মধ্যে রয়েছে কর্নফুলী, বেদের মেয়ে জোস্না, তুলসীবনের বাঘ, রামকৃষ্ণ অপেরা, দস্যু কালোকোকিল, হরি যাত্রা, পুস্পবর্ণ কলি সহ ২৮টি বই।

এসব অষ্টক গান ও যাত্রাপালার বই তিনি দির্ঘকাল ধরে ল্যাম্পের আলোই বসে বসে লিখেছিলেন। প্রতিবেদনে উল্লেখিত সকল বিষয়াদি তঁার জীবদ্দশায় তিনিই বলেছিলেন।

একসময়ে ১ টাকায় কেনা ৩২ পর্দার একটি হারমনি দিয়ে শুরু করেছিলেন তার লেখনীর গান গাওয়া। গান রচনা ও গাওয়ার পাশাপাশি তিনি মানুষের দৈহিক রোগ প্রতিহতের জন্য আজীবন তিনি হোমিও চিকিৎসক হিসাবে কাজ করে গেছেন। তার লেখা অষ্টক গান ও যাত্রা পালার বই গুলি ভারত বাংলার বিভিন স্থানে প্রচলিত থেকে আজও প্রশংশিত হয়ে চলেছে।

জানা যায় ২০১২ সালে বাংলা একাডেমী তার অষ্টক গান ও যাত্রাপালার বইয়ের শ্রেষ্টতম অর্জন হিসাবে বিশেষ সন্মাননা ক্রেষ্ট ও নগদ ৫২ হাজার টাকা প্রদান করে। তার লেখা গান ও যাত্রাপালায় মুগ্ধ হয়ে নড়াইলের কলম সৈনিক পরিষদ ২০১২ সালের ১১ নভেম্বর তাকে শ্রেষ্ট গীতিকার ও নাট্যকার হিসাবে সম্মাননা সনদ প্রদান করে।

বিরেন্দ্রনাথ রায়ের পরিবারের লোকজন বলেন লেখকের অনেক অষ্টক গান ও যাত্রাপালার পান্ডুলিপি গুলি কয়েক বছর আগে মাগুরা সদরের আসবা গ্রামের বিকাশ নামের জনৈক এক ব্যক্তি বিরেন্দ্রনাথ রায়ের নামে প্রকাশ করার উদ্দেশ্যে ঢাকায় নিয়ে যায়। কিন্তু কোনদিন তা প্রকাশও করেনি ফেরতও দেননি। তার লেখা গান ও যাত্রা সারা বাংলাদেশ তথা ভারত বাংলার মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিলেও অর্থাভাবে তিনি নিজেকে কোনদিন প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি। এব্যাপারে গ্রামের লোকজন বলেন কোন সরকারী বা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তার অপ্রকাশিত পান্ডুলিপি গুলি প্রকাশ পেত। এতে বাংলার লোকসাহিত্যের ভান্ডার যথেষ্ট সমৃৃদ্ধ হতো।

২০১২ সালের ৯,১০ও ১১ই মার্চ খাজুরা এম এন মিত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে “গাইদঘাট কৃষি প্রযুক্তি বাস্তবায়ন কেন্দ্র“ আয়োজিত গ্রামীন জীবনযাত্রা ও কৃষি প্রযুক্তি তথ্য,বীজ মেলার অনুষ্ঠান হয়। এই অনুষ্ঠানে দেশ তথা অত্র অ লের ৩০ জন গুনীজনের সম্মাননা প্রদান করা হয়। জীবোদ্দশায় গুনীজন সম্মাননার মধ্যে এই লোক শিল্পী বিরেন্দ্রনাথ রায় ছিলেন অন্যতম একজন।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2024
Theme Customized By BreakingNews