শামীম আরা খানম
আমাদের দেশে নারী ও পুরুষের হার বর্তমানে প্রায় সমান। আমরা সমান
অধিকার পেয়েছি অনেক ক্ষেত্রে। চাকরী, ব্যবসা, কর্মক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ
প্রযুক্তিতে পুরোপুরি সমান অধিকার না পেলেও অনেকটা পেয়েছি কিন্তু‘ একটি
জায়গায় ব্যতিক্রম। সেটি হল পরিবহন সেক্টরে। সেখানে মেয়েদের সম অধিকার
কোথায়? হ্যাঁ? পুরুষের মতো মেয়েরাও একই ভাঢ়া দেয় কিন্তু মেয়ে কন্ট্রাক্টর,
ড্রাইভার ও হেলপার নিয়োগ দেয়া হয় না। আচ্ছা যদি এমন হতো- একটি বাসে
ড্রাইভার-হেলপার ও কন্ট্রাক্টর সকলেই মেয়ে। বাসটি শুধু মেয়েদের জন্য এবং ১০ বছরের
কম বয়সী ছেলেরা উঠতে পারবে তার মায়ের বোনের সাথে। তাহলে কেমন
হতো……ঘরে মায়ের ছায়ায় যেভাবে নিরাপত্তাবোধ করে ওই গাড়ীতেও সে মায়ের
আঁচলে নিরাপদে থাকতে পারবে। বর্তমানে মেয়েদের একা চলতে হয়, রাতে অফিস
করতে হয়, স্কুল,কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে একা যেতে হয়। কেমন হয় যদি মায়ের আঁচল
পরিবহনে মেয়েকে উঠিয়ে দিলাম। যেখানে নেই কোন বখাটেদের উৎপাত, নেই
কোন ইভটিজিং, নেই কোন দানবরুপী পুরুষের হাত। আমরা মেয়েরা বেশি
হয়রানির শিকার হই হেলপার ও কন্ট্রাক্টর দ্বারা। সেখানে যদি মেয়েরা দায়িত্ব পায়
তাহলে কী হয়রানি বন্ধ হবে না। আমি শুধু চাচ্ছি কিছু বাস কিছু রেলের কামরা
মেয়েদের জন্য বরাদ্দ করা হোক। এমন পরিবহন থাকবে যেটা শুধু মেয়েদের জন্য।
যেখানে মায়েরা এবং বাবারা, তাদের প্রাণের মেয়েটিকে পাঠিয়ে নিশ্চিন্তে
থাকতে পারবে। ভাইয়েরা আদরের বোনটিকে নিয়ে আতংকে থাকবে না। এক সময়ে
ছিল যখন পুরুষেরা মেয়েদের, বৃদ্ধদের, মোয়ের কোলে শিশুকে জায়গা ছেড়ে বসতে
দিতো কিন্তু এখন তেমন হয়না বললেই চলে। তাছাড়া এখন যেভাবে দ্রুত এবং
এলোমেলো গাড়ি চালানো হয় ড্রাইভারের মনে থাকে না যে গাড়িতে গর্ভবতী
অসুস্থ মেয়ে আছে, বৃদ্ধ মহিলা আছে। আমি জানি দেশের আপামর জনসাধারণ
আমার সাথে এই বিষয়ে একমত হবেন। আমরা মুসলিম দেশ, আমাদের দেশে
মেয়েদেন হেফাজত করতে কে না চাইবে? মসজিদে মেয়েদের আলাদা ব্যবস্থা আছে,
তবে গাড়ীতে রেলে কেন থাকবে না? আসুন স্বাধীন বাংলাদেশে আমরা সবাই
এক হই দাবি করি নিরাপদ যাতায়াতের ব্যবস্থা করি মায়ের আঁচলে।
লেখক- সহকারি শিক্ষক,নওয়াপাড়া শংকরপাশা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়,অভয়নগর, যশোর।