1. bdtelegraph24@gmail.com : Bdtelegraph Bangla :
  2. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  3. islam.azizul93@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি কিশোরের হত্যার দৃশ্য ভুলতে পারছেন না ভিল্ক - টেলিগ্রাফ বাংলাদেশ
শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৬:১৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
অভয়নগরে ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে ইফতার  বিতরণ  শ্যামনগরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে সেনাবাহিনীর হাতে আটক-৩ সুন্দরবনের গাছের ডাল থেকে এক বৃদ্ধাকে উদ্ধার করলো দুই জেলে অভয়নগরে সহপাঠির সাথে মারামারি,মাদ্রাসা ছাত্রের আত্মহত্যা মাগুরায় শিশু ধর্ষনে অভিযুক্তদের বাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দিলো ক্ষুব্ধ জনতা কালীগঞ্জে পরিষদে ৩ যুবককে পেটানো চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মানববন্ধন বাঘারপাড়ায় বিএনপির দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত আজ ঢাকায় আসছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বিচার শুরুর আগেই না ফেরার দেশে মাগুরায় ধর্ষিতা সেই শিশুটি চট্টগ্রামে বাস চাপায় অটোরিকশার ভাই-বোনসহ তিনজন নিহত

নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি কিশোরের হত্যার দৃশ্য ভুলতে পারছেন না ভিল্ক

  • সর্বশেষ আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৪৭ জন খবরটি পড়েছেন

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলা দীর্ঘ ১৫ মাসের যুদ্ধে বিরতি দিতে একমত হয়েছে হামাস ও ইসরায়েল। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী রোববার (১৯ জানুয়ারি) থেকে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে পারে।
গাজার যুদ্ধ চালিয়ে নেয়ার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন যারা, তাদের মধ্যে ইসরায়েলি সেনারাও আছেন। তাদেরই একজন ইয়োতাম ভিল্ক। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাদের হাতে নিরস্ত্র এক ফিলিস্তিনি কিশোরের হত্যার দৃশ্যটি কিছুতেই ভুলতে পারছেন না ভিল্ক।

ভিল্কের তথ্যানুসারে, গাজায় ইসরায়েল–নিয়ন্ত্রিত বাফার জোনে অননুমোদিত ব্যক্তি প্রবেশ করলেই তাকে গুলি করার নির্দেশ দেয়া আছে। তিনি কমপক্ষে ১২ জনকে এভাবে হত্যার শিকার হতে দেখেছেন। তবে ওই কিশোরকে হত্যার দৃশ্যটি এখনো তাঁর চোখের সামনে ভাসছে।

গাজায় চলা বর্বরতার বিরুদ্ধে থাকা এসব ইসরায়েলি সেনারা ইতোমধ্যে গাজায় লড়াই চালিয়ে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। কারণ হিসেবে সেনারা বলেন, তারা এমন কিছু দেখেছেন বা করেছেন, যা নৈতিকতার সীমারেখাকে ছাড়িয়ে গেছে। অবশ্য এই অগ্রগতির আগেই কিছুসংখ্যক ইসরায়েলি সেনা যুদ্ধ বন্ধের জন্য তৎপরতা শুরু করেন। যেমন প্রায় ২০০ ইসরায়েলি সেনা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, সরকার যদি যুদ্ধবিরতিতে না পৌঁছায়, তবে তারা লড়াই করা বন্ধ করে দেবেন। একে ‘সূচনাপর্ব’ বলে উল্লেখ করা হয়।

গাজায় লড়াই চালিয়ে যেতে রাজি না হওয়া ইসরায়েলের সাত সেনাসদস্য বার্তা সংস্থা এপির সঙ্গে কথা বলেন। ফিলিস্তিনিদের কীভাবে নির্বিচার হত্যা করা হচ্ছে, তাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস করা হচ্ছে, সেই ভয়াবহ কাহিনী বর্ণনা করেছেন তারা। সেনাদের কেউ কেউ বলেন, তাদের এমন কিছু ঘরবাড়ি পুড়িয়ে ও গুঁড়িয়ে দিতে বলা হয়েছিল, যেগুলো আসলে হুমকি ছিল না। পাশাপাশি তারা সেনাদের লুটপাট করতে এবং বাড়িঘরে ভাঙচুর চালাতেও দেখেছেন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এপিকে বলেছে, সেনাদের দায়িত্ব পালনে অস্বীকৃতির নিন্দা জানায় তারা। কেউ দায়িত্ব পালনে অস্বীকৃতি জানালে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে নেয়। ব্যক্তিপর্যায়ে প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা হয়। দায়িত্ব পালন না করতে চাইলে সেনাদের কারাগারে যেতে হতে পারে। তবে এই স্বাক্ষর গ্রহণ কর্মসূচির আয়োজকেরা বলেন, চিঠিতে সই করা কোনো সেনাকে এখন পর্যন্ত আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি।

ভিল্ক গাজায় ঢোকেন ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে। এই ইসরায়েলি সেনা কর্মকর্তা জানান, তিনি ভেবেছিলেন, প্রাথমিকভাবে বল প্রয়োগ করে দুই পক্ষকে আলোচনার টেবিলে বসানো যাবে। কিন্তু যুদ্ধ যত দীর্ঘায়িত হতে থাকল, তিনি ততই দেখতে থাকলেন যে মানুষের জীবন কতটা মূল্যহীন।

ভিল্ক বলেন, গত বছরের আগস্টে ওই ফিলিস্তিনি কিশোর নিহত হয়। সেদিন ইসরায়েলি সেনারা ওই কিশোরকে থামতে বলেছিলেন। সতর্ক করতে তার পায়ে গুলি করা হয়েছিল। তবু ওই কিশোর থামছিল না। নেতজারিম করিডরের বাফার জোনে দিকে হেঁটে আসা অন্যদেরও গুলি করা হয়। নেতজারিম করিডর হলো গাজার উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলকে বিভক্তকারী সড়ক। ভিল্ক স্বীকার করেন, লোকজনের কাছে অস্ত্রশস্ত্র আছে কি না, তা নির্ধারণ করা কঠিন। তবে তিনি মনে করেন, ইসরায়েলি সেনারা অনেক বেশি দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে ফেলেন।

ইসরায়েলি সেনাদের কেউ কেউ এপিকে বলেন, গাজা উপত্যকায় তারা যা দেখেছেন, তা হজম করতে তাদের সময় লাগবে। অন্যরা বলেছেন, তাঁরা এতটাই ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন যে তাৎক্ষণিকভাবে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সাবেক চিকিৎসাকর্মী ইয়ুভাল গ্রিন বলেন, গাজায় প্রায় দুই মাস কাটানোর পর গত বছরের জানুয়ারিতে তিনি পদত্যাগ করেন। যুদ্ধক্ষেত্রে যা দেখছিলেন, তা মেনে নিতে পারছিলেন না বলে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

২৭ বছর বয়সী গ্রিন বলেন, সেনারা জরুরি চিকিৎসার কাজে ব্যবহৃত মার্কারের কালি দিয়ে দেয়াললিখন লিখে বাড়িঘর অপবিত্র করছেন ও লুটপাট চালিয়েছেন। গ্রিন আরও একটি ঘটনার উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, তার কমান্ডার একটি বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার জন্য সেনাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, হামাস এটা ব্যবহার করুক, তা তিনি চান না।

গ্রিন বলেন, তিনি সেদিন একটি সামরিক গাড়িতে বসেছিলেন। পোড়া প্লাস্টিকের গন্ধের মধ্যে তার দম বন্ধ হয়ে আসছিল। তার মতে, প্রতিশোধমূলকভাবে ওই আগুন দেওয়া হয়েছিল। কারণ, তিনি মনে করেন,ফিলিস্তিনিরা ইতিমধ্যে অনেক কিছু হারিয়েছে। তাদের কাছ থেকে আর বেশি কিছু কেড়ে নেওয়ার নেই। গ্রিন তাদের কাজ শেষ হওয়ার আগেই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন।

এপির সঙ্গে কথা বলা ইসরায়েলি সেনাদের কেউ কেউ বলেন, তারা অনুশোচনা বোধ করছেন। দ্বন্দ্বের মধ্যে আছেন, যা দেখেছেন, তা নিয়ে বন্ধুবান্ধব ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে নিজেদের শান্ত করার চেষ্টা করছেন। ট্রমা থেরাপি বিশেষজ্ঞ টুলি ফ্লিন্ট বলেন, অনেক সেনাসদস্য তাদের ‘নৈতিক জায়গায় আঘাত’ পেয়েছেন। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত শত শত সেনাসদস্য তার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছেন।

ফ্লিন্ট বলেন, মানুষ যখন তাদের বিশ্বাসের বাইরে গিয়ে কিছু করেন বা দেখেন, তখন এমন পরিস্থিতি হয়। এতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। বারবার সে দুঃসহ দৃশ্য চোখের সামনে ভেসে উঠতে পারে। ওই ব্যক্তি নিজেকে অযোগ্য মনে করতে পারেন। তবে ফ্লিন্ট মনে করেন, এসব নিয়ে কথাবার্তা বললে এবং পরিবর্তন আনার চেষ্টা করলে ভুক্তভোগী ব্যক্তি সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারেন।

সাবেক এক পদাতিক সেনা এপিকে বলেন, তিনি অপরাধবোধে ভুগছেন। ২০২৩ সালের শেষের দিকে প্রায় ১৫টি বাড়িঘর অযথা পুড়িয়ে দিতে দেখেছেন তিনি। সাবেক এই সেনা বলেন, ‘আমি দেশলাই জ্বালাইনি, তবে আমি বাড়ির সামনে পাহারা দিয়েছিলাম। আমি যুদ্ধাপরাধে শামিল হয়ে গেলাম।’ নাম প্রকাশিত হলে প্রতিশোধের মুখে পড়তে পারেন, এমন আশঙ্কায় সাবেক এই ইসরায়েলি সেনা তার নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘আমরা যা করেছি, তার জন্য আমি দুঃখিত।’ চ্যানেল ২৪

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2024
Theme Customized By BreakingNews