ডেস্ক নিউজ।
গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস শনিবার আরও তিন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা রেডক্রসের মাধ্যমে তাঁদের ইসরায়েলের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এর আগে ইসরায়েল তাদের কারাগার থেকে ৩৬৯ জন ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেয়।
এই তিন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার পূর্বে গাজার খান ইউনিস শহরে একটি মঞ্চের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁদের যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় বাকি জিম্মি ও বন্দী বিনিময় শেষ করার আহ্বান জানাতে বলা হয়। মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের মধ্যে রয়েছেন সাগুই দেকেল চেন, সাশা ত্রুপানভ ও ইয়াইর হর্ন। ইসরায়েলি বাহিনীও তাঁদের ফেরত পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে। জিম্মিদের স্বাগত জানাতে তেল আবিবে জড়ো হন অনেকে। তাঁদের হাতে ছিল ‘যুদ্ধবিরতি পুরোপুরি শেষ করুন’ লেখা পোস্টার।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের কারাগার থেকে ফিলিস্তিনি বন্দীদের নিয়ে একটি বাস পশ্চিম তীরের রামাল্লায় প্রবেশ করে। সেখানে উপস্থিত ফিলিস্তিনিরা বন্দীদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। নেগেভ মরুভূমিতে অবস্থিত ইসরায়েলের একটি কারাগার থেকে কয়েকটি বাসে করে ফিলিস্তিনি বন্দীরা গাজায় পৌঁছান।
দীর্ঘ ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এই পর্যন্ত মোট ১৯ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী প্রথম ধাপে ৩৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার কথা হামাসের।
তবে, শনিবার জিম্মি মুক্তি নিয়ে বড় শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। হামাস ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে জিম্মি মুক্তি স্থগিত করার হুমকি দিয়েছিল। ইসরায়েলও পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে জানায়, এমনটি হলে গাজায় ফের হামলা শুরু করবে তারা। পরে অবশ্য উভয় পক্ষই জানায়, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী শনিবার জিম্মি ও ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে।
গাজায় যুদ্ধবিরতি হবে তিন ধাপে। এর মধ্যে প্রথম ধাপ চলবে ৪২ দিন। হামাসের একজন কর্মকর্তা জানান, দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা কয়েক দিনের মধ্যে শুরু হবে। যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ইসরায়েলে গিয়েছেন।
এদিকে, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ এবং বাসিন্দাদের বিতাড়িত করার মার্কিন পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে। এ নিয়ে আলোচনা করতে আগামী বৃহস্পতিবার রিয়াদে একটি সম্মেলনে যোগ দেবেন মিসর, জর্ডান, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতারা।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায়। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন এবং প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। ইসরায়েলি হামলায় ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত গাজায় ৪৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি।