যশোর প্রতিনিধি।
যশোরের মাঠজুড়ে এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। পাকা ও আধা পাকা ধানের প্রাচুর্যে কৃষকের মুখে হাসি ফুটলেও, বৈশাখী ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কায় তারা এখন দ্রুত ধান কেটে ঘরে তোলার জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, ইতোমধ্যে জেলার ২০ শতাংশ জমির ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে এবং আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে আরও বেশিরভাগ ধান কাটা শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তবে, কিছু এলাকায় দেরিতে ধান রোপণ করার কারণে সেখানে ধান কাটতে আরও কিছুটা সময় লাগতে পারে।
অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর জেলায় গতবারের তুলনায় তিন হাজার হেক্টর বেশি জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। মোট এক লাখ ৬০ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে, যার মধ্যে এক লাখ ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) এবং বাকি জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান রয়েছে। গত বছর আবাদের পরিমাণ ছিল এক লাখ ৫৭ হাজার ৮৮০ হেক্টর।
কৃষি বিভাগ আশা করছে, এবার জেলায় উৎপাদিত ধান থেকে প্রায় সাত লাখ ২৮ হাজার মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে, যার বর্তমান বাজারমূল্য আনুমানিক সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা।
সদর উপজেলার কৃষক রেজাউল জানান, তিনি দুই বিঘা জমিতে ব্রি-২৮ জাতের ধান চাষ করে বেশ ভালো ফলন পেয়েছেন। প্রতি কাঠায় তিনি দেড় মন ধান পেয়েছেন এবং তার জমির ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ শেষ হয়েছে।
বাঘারপাড়ার কৃষক আব্দুর রহমান পাঁচ বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন এবং ইতোমধ্যে ধান কাটা শুরু করেছেন। তিনি বলেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বড় ধরনের ঝড়-বৃষ্টি না হলে এবং বাজারে ধানের ভালো দাম থাকলে কৃষকরা লাভবান হবেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোশাররফ হোসেন জানান, সম্ভাব্য ঝড়-বৃষ্টির ক্ষতি এড়াতে কৃষকদের ৮০ শতাংশ ধান পাকলেই কেটে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। দ্রুত ধান কাটা ও মাড়াইয়ের জন্য রিপার ও হার্ভেস্টার ব্যবহারের পাশাপাশি প্রয়োজনে অন্য জেলা থেকে শ্রমিক আনার কথাও বলা হয়েছে।
ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ বোরোর বাম্পার ফলনের পেছনে বিনামূল্যে বীজ ও সার সরবরাহ, কৃষকদের প্রশিক্ষণ, ধানের বাজার স্থিতিশীল থাকা এবং কৃষি বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানের ভূমিকা উল্লেখ করেন।