ডেস্ক নিউজ।
পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের অভ্যন্তরে অন্তত নয়টি সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে সফলভাবে অভিযান চালিয়েছে ভারতীয় বাহিনী—বুধবার এক ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি। ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের এই অভিযানের মাধ্যমে ভারত ‘প্রত্যাঘাতের অধিকার’ ব্যবহার করেছে বলেও জানান তিনি।
মিশ্রি বলেন, পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর এই অভিযানের লক্ষ্য ছিল সীমান্ত পার হওয়া সম্ভাব্য হামলা ঠেকানো ও সন্ত্রাসবাদী অবকাঠামো ধ্বংস করা। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২৫ এপ্রিলের বিবৃতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ভারতের এই পদক্ষেপকে সেই প্রেক্ষাপটেই দেখতে হবে।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টা ৫ মিনিট থেকে দেড়টা পর্যন্ত চলা অভিযানে ভারতীয় বাহিনী মোট নয়টি সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে আঘাত হানে। এই ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং।
তাঁদের দাবি অনুযায়ী, ভাওয়ালপুরের মারকাজ শুবহান আল্লাহ্-তে জইশ-এ-মহম্মদের ঘাঁটি, কোটলিতে লস্কর-ই-তাইয়েবার শিবির, এবং বিলাল মসজিদে তাদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। এসব ঘাঁটি পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে অবস্থিত।
এছাড়াও শিয়ালকোটের আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ছয় কিলোমিটার ভেতরের সার্জাল ক্যাম্প, হিজবুল মুজাহিদিনের মেহমুনা জোয়া ক্যাম্প এবং লাহোরের কাছে মুরিদকের মারকাজ তৈয়্যেবা ক্যাম্পেও হামলা চালানো হয়েছে। কর্মকর্তারা জানান, এখানেই ২৬/১১ মুম্বাই হামলার সন্ত্রাসীরা প্রশিক্ষণ নিয়েছিল।
ভারতীয় বাহিনীর দাবি, হামলা ছিল বেছে নেওয়া নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুর ওপর, অসামরিক জনগণ বা পাকিস্তানি সেনাঘাঁটিকে লক্ষ্য করা হয়নি। প্রযুক্তির সাহায্যে লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করে আঘাত হানা হয়েছে।
পররাষ্ট্রসচিব মিশ্রি আরও জানান, পেহেলগামের হামলার মাধ্যমে কাশ্মীরের স্বাভাবিকতা ধ্বংস, পর্যটন ও অর্থনীতিতে আঘাত, এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উদ্দেশ্য ছিল। হামলার দায় স্বীকার করেছে টিআরএফ নামের গোষ্ঠী, যা জাতিসংঘ কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত লস্কর-ই-তাইয়েবার একটি শাখা। এদের সম্পর্কে ভারত জাতিসংঘে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছে।
ব্রিফিংয়ে উপস্থিত দুই নারী কর্মকর্তা অপারেশন চলাকালে তোলা সন্ত্রাসী ঘাঁটির ছবি সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন।