আন্তর্জাতিক ডেস্ক।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পর চলমান উত্তেজনা দ্রুত শেষ করতে চায় ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় পরিচালিত এই অভিযানের পর তেহরানের কাছে শান্তির বার্তা পৌঁছে দিতে আরব মিত্রদের ব্যবহার করেছে ওয়াশিংটন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
সোমবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরব ও ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ইসরায়েল এখন সংঘাত বন্ধে প্রস্তুত, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ইরানের ওপর নির্ভর করছে। ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মতে, যদি ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে সরে আসে, তবে হামলা বন্ধ করা যেতে পারে।
ইসরায়েলের টেলিভিশন চ্যানেল-১২ জানায়, ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তেহরানকে পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হুমকি থেকে মুক্ত করতে চায় তেলআবিব। দেশটির ধারণা, খুব শিগগিরই তাদের কৌশলগত লক্ষ্য অর্জিত হবে।
অন্যদিকে, আরব দেশের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইসরায়েল যুদ্ধ বন্ধে প্রস্তুত থাকলেও ইরান এখনই থামতে রাজি নয়—যতক্ষণ না তারা যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণের পূর্ণ জবাব দিতে সক্ষম হচ্ছে।
ইসরায়েলের একজন কর্মকর্তা টাইমস অফ ইসরায়েল-কে বলেন, “যদি একটি চুক্তি হয়, তাহলে আমরা এই অভিযানের ফলাফলে সন্তুষ্ট থাকব। তবে এটি নির্ভর করছে ইরানের সিদ্ধান্তের ওপর।”
চ্যানেল-১২ আরও জানিয়েছে, ইসরায়েলের সামনে দুটি সম্ভাব্য পথ রয়েছে—একতরফাভাবে বিজয়ের ঘোষণা, অথবা যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা। তবে দ্বিতীয় বিকল্পটিকে তুলনামূলক কম গ্রহণযোগ্য মনে করছে ইসরায়েল।
সোমবার তেহরানের সরকার-নিয়ন্ত্রিত বেশ কয়েকটি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল, যা এক ধরনের বার্তা বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ওয়াল্লা। তেহরান যদি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বন্ধ না করে, তবে পরবর্তী হামলা আরও কঠোর হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধ থামানোর পথে প্রধান অন্তরায় হচ্ছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি, যিনি এখনও প্রতিরোধ নীতিতে অনড় রয়েছেন।
ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের আশা, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যৌথ হামলা তেহরানকে আলোচনার টেবিলে ফিরতে বাধ্য করবে। তবে ইরান যদি আবার পারমাণবিক কর্মসূচি শুরু করে, তেলআবিব নতুন করে সামরিক পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না।
রবিবার এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, “আমরা কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনের দ্বারপ্রান্তে। ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে গুরুতর ক্ষতি করা সম্ভব হয়েছে।” তিনি আরও জানান, দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ ইসরায়েল চায় না, তবে প্রয়োজনীয় লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।