ডেস্ক নিউজ।
যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি ধ্বংস না-হয়ে কেবল কয়েক মাস পিছিয়েছে বলে দাবি করেছে ফাঁস হওয়া একটি মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্ট। যদিও প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এবং তার প্রশাসন এই রিপোর্টকে ‘ভুয়া’ আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
শনিবার ইরানের ফরদো, নাতানজ এবং ইস্ফাহান পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে বাংকার বাস্টার বোমা দিয়ে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউজ দাবি করে, এই অভিযানে ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছে। তবে গোপন গোয়েন্দা তথ্য বলছে, ইরানের সেন্ট্রিফিউগুলোর বড় একটি অংশ অক্ষত আছে এবং স্থাপনাগুলোর গভীর ভূগর্ভস্থ কাঠামো রয়ে গেছে অক্ষুণ্ণ।
যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যমতে, হামলার আগেই ইরান তাদের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ সরিয়ে ফেলেছিল। কয়েকটি স্থাপনায় প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হলেও, মূল কাঠামো এতটাই গভীরে যে সেগুলোর ওপর হামলার কার্যকারিতা ছিল সীমিত।
এই তথ্য ফাঁসের প্রতিবাদে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যালে নিউ ইয়র্ক টাইমস ও সিএনএন-কে একহাত নিয়ে বলেন, “ইতিহাসের সবচেয়ে সফল সামরিক হামলাগুলোকে হেয় করার ষড়যন্ত্র চলছে।” তার দাবি, “ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছে।”
ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গোয়েন্দা রিপোর্টকে “বিশ্বাসঘাতকতা” বলে অভিহিত করেন এবং এর তদন্তের দাবি জানান। তিনি ফক্স নিউজকে বলেন, হামলায় স্থাপনাগুলো ধ্বংস হয়েছে, এতে তার কোনো সন্দেহ নেই।
এর আগে ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে ১২ দিনের যুদ্ধের পর মঙ্গলবার একটি নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। যুদ্ধ শেষে উভয় পক্ষই নিজেদের বিজয় দাবি করে। ইরানের রাজধানী তেহরানে উদযাপনে জনতা রাস্তায় নেমে আসে। অন্যদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, “এই বিজয় প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”
যুদ্ধে ইরানে নিহত হয়েছেন অন্তত ৬১০ জন, যার মধ্যে ১৩ জন শিশু রয়েছে। আহত হয়েছেন ৩ হাজারেরও বেশি মানুষ। ইরানের পাল্টা হামলায় ইসরাইলে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৮ জন। যুদ্ধবিরতির শর্ত ভাঙায় ক্ষুব্ধ ট্রাম্প ইসরাইলকে বোমা হামলা বন্ধ করতে এবং যুদ্ধবিমান দেশে ফিরিয়ে আনতে বলেন।