ডেস্ক নিউজ।
দেশের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্র বিবিয়ানার গ্যাস মজুত দ্রুত ফুরিয়ে আসছে বলে জানিয়েছে জ্বালানি খাতের সর্বশেষ সরকারি ও বিশেষজ্ঞ পর্যবেক্ষণ। খনিটির অধিকাংশ কূপ থেকে ৮০ শতাংশ বা তার বেশি গ্যাস ইতিমধ্যে উত্তোলিত হয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, নতুন কূপে গ্যাস না মিললে কয়েক বছরের মধ্যেই বড় ধরনের জ্বালানি সংকটের মুখে পড়তে পারে বাংলাদেশ।
৩০ জুন পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী, ওইদিন দেশের মোট ১৮৩৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহের মধ্যে বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র থেকে এসেছে ৯২৭ মিলিয়ন ঘনফুট—যা দেশের মোট সরবরাহের অর্ধেকেরও বেশি (৫০.৪৬%)। ফলে খনিটির ওপর দেশের গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থার ভার এখনও অনেকটা নির্ভরশীল।
হাইড্রোকার্বন ইউনিটের প্রতিবেদন বলছে, বিবিয়ানার প্রমাণিত ও সম্ভাব্য মজুত ছিল ৫৩২১.৪ বিসিএফ, যার মধ্যে ইতোমধ্যে উত্তোলন হয়ে গেছে ৪৫৩১ বিসিএফ। ফলে অবশিষ্ট রয়েছে মাত্র ৭৮৯.৭ বিসিএফ গ্যাস। বর্তমানে ২৬টি কূপের মধ্যে ১১টি কূপ থেকে গ্যাস তোলা হচ্ছে, যার মধ্যে অনেকগুলোতেই গ্যাসচাপ কমে গেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে। অধ্যাপক ম. তামিম বলেন, “বিবিয়ানার মজুত দ্রুত কমে যাচ্ছে। দু-এক বছরের মধ্যে উৎপাদন আরও হ্রাস পাবে। আমাদের আমদানি সক্ষমতা সীমিত হওয়ায় শুধুমাত্র এলএনজি আমদানির ওপর নির্ভর করে চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে না।”
অন্যদিকে, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ শামসুল আলম বলেন, “বিবিয়ানা নিয়ে বহু আগে থেকেই শঙ্কা ছিল, এখন সেটা বাস্তব হুমকিতে পরিণত হয়েছে। সরকারের নানা পরিকল্পনা থাকলেও কার্যকর পদক্ষেপের ঘাটতি রয়েছে। দীর্ঘমেয়াদে দেশীয় গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোই একমাত্র টেকসই সমাধান।”
সরকারের পক্ষ থেকে নতুন অনুসন্ধান কূপ খননের উদ্যোগ নেয়া হলেও এখনো উল্লেখযোগ্য সাফল্য আসেনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিকল্প উৎস খোঁজা এবং আমদানি সক্ষমতা বাড়ানো না হলে সামনে জ্বালানি নিরাপত্তা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।