জহুরুল হক, দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার ওসি নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের সঙ্গে রুঢ় আচরণের অভিযোগ উঠেছে। তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজনে যোগাযোগ করলে তিনি দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অবমাননাকর ভাষা ব্যবহার করেন বলছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। এমনি এক ঘটনার ভুক্তভোগী দৈনিক আজকের পত্রিকার দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি তামিম আদনান।
গত শুক্রবার উপজেলার চক কৃষ্ণপুর গ্রামে সংঘর্ষ, লুটপাট ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। রোববার (১৩ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে সেই ঘটনার বিষয়ে মুঠোফোনে আইনি ব্যবস্থা নিয়ে তথ্য জানতে চাইলে তামিমের সঙ্গে অসদাচরণসহ অবমাননাকর ভাষা ব্যবহার করেন ওসি। এর আগেও একই আচরণ অন্যান্য সাংবাদিকদের সাথেও তিনি করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
সাংবাদিক তামীমের সঙ্গে কথোপকথনে কল রিসিভ করেই বিরক্তিকর কন্ঠে ওসিকে বলতে শোনা যায়,“আবার এই শালা ফোন দেয়” পরে সালাম বিনিময় করলেও তিনি রাগান্বিত হয়ে বলেন,“আমি জানি না আসলে কী হয়েছে। কেউ বলে চাঁদা চেয়েছে, কেউ বলে চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়ায় এই ঘটনা।”
এদিকে ঘটনাটিকে চরম অপেশাদার এবং দায়িত্বহীন আচরণ মন্তব্য করে সাংবাদিক তামীম আদনান বলেন, “আমি একটি গুরুতর ঘটনার তথ্য নিশ্চিত হতেই ফোন করেছিলাম। একজন দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তার এমন ভাষা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।” গণমাধ্যমে কাজের সুবাদে তার সাথে প্রায় কথা বলার প্রয়োজন হয় আমার। কিন্তু তার এই অপেশাদার আচরণ কাম্য নয়।
এ ঘটনার পর স্থানীয় সাংবাদিকরা ক্ষোভ জানিয়েছেন। তারা বলছেন,পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে এই ধরনের অশালীন আচরণ ও তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এসব বিষয় আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
এবিষয়ে সমকাল পত্রিকার দৌলতপুর প্রতিনিধি আহমেদ রাজু বলেন,ওসির আচরণের কারণে আমি তাকে এড়িয়ে চলি। তিনি বরাবরই অপমানজনক ও বিরূপ আচরণ করেন। ৫ আগস্টের পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমন আচরণ অগ্রহণযোগ্য।
মানবজমিন পত্রিকার শরিফুল ইসলাম বলেন, গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সদাচরণ করা উচিত। একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে ওসির এমন আচরণ কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
তবে, দৌলতপুর থানার ওসি নাজমুল হুদা এমন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,আমি কোন সাংবাদিকের সঙ্গে অসদাচরণ করেছি এই অভিযোগ ঠিক না। অনেক সময় হয় ব্যস্ত থাকার কারণে কল রিসিভ করতে পারি না। কিন্তু পরে কল ব্যাক করে কথা বলি।
এবিষয়ে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, হয়তো তিনি অন্য কারো সঙ্গে কথা বলছিলেন, এমনও হতে পারে। তবে তার রুক্ষ আচরণের বিষয়টি আমি গুরুত্বসহকারে নিচ্ছি। আমি তাকে বলব যেন তিনি আরও বিনয়ী ও পেশাদার আচরণ করেন।