‘শক্তিশালী ডিম: প্রাকৃতিক পুষ্টিতে ভরপূর’ শীর্ষক প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বর্ণিল আয়োজনের মধ্যে দিয়ে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস অনুষদের আয়োজনে বিশ্ব ডিম দিবস উদযাপিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯ টায় একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে অনুষদের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। এ সময় শিক্ষার্থীরা সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সাধারণ মানুষদের বিনামূল্যে একটি করে ডিম খাওয়ানো হয়।
গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী রায়হান খান বলেন, ‘ডিম সল্পমূল্যের অন্যতম প্রোটিনের উৎস। সাধারণ মানুষকে ডিমের যে গুণাগুন সেই বিষয়টি অবগত করার জন্য দিবসটি পালন করা হয়। জনসাধারণের পূষ্টির চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ডিমের উৎপাদনের পাশাপাশি বাজারদর ও মূল্যস্ফীতির দিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিশেষ নজরদারি রাখতে হবে।’
ডিমকে আদর্শ্য খাদ্য উৎপাদন আখ্যা দিয়ে ভেটেরিনারি অনুষদের প্রি-ক্লিনিক্যাল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সজীবুল হাসান বলেন, ‘ডিমের উৎপাদন বৃদ্ধি করে চাহিদা পূরণের জন্য কাজ করা ভেটেরিনারিয়ান হিসেবে আমাদের দায়িত্ব। আর্থিকভাবে অসচ্ছল মানুষদের জন্য ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, যাতে সকলে তাদের চাহিদা পূরণ করতে পারে। ডিম ছাড়া দৈনন্দিন খাদ্যাভাস আমরা চিন্তা করতে পারি না, ভেজালে ভরা বাজারে ডিম একমাত্র আদর্শ খাদ্য উপকরণ। ডিমে সহজে কোন ধরনের ভেজাল যুক্ত করা যায়।’
বিশ্ব ডিম দিবসের সফলতা কামনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডীনস কমিটির সভাপতি ও ভেটেরিনারি অনুষদের অধিকর্তা অধ্যাপক ড. মো. জহিরুল ইসলাম খান বলেন, ‘ডিম ব্যালেন্স প্রোটিন সমৃদ্ধ একটি খাদ্য উৎপাদন। ডিম খাওয়া নিয়ে সমাজে নানান ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে, কিন্তু ডিম প্রতিদিন এক/দুইটা খাওয়া যায়, এটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। আশির দশকের ডিম সহজলভ্য ছিল না, গ্রামে গঞ্জে ডিম ছিল উৎকৃষ্ট খাবারগুলোর মধ্যে একটি। মেহমানদারিতে ডিমের ব্যবহার ছিল চোখে পড়ার মত। তবে বর্তমান সময়ে দেশে ছোট বড় প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক খামার রয়েছে, যা দেশের মানুষের পুষ্টির চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি গ্রাজুয়েটরা ডিমের অর্থাৎ পোল্ট্রি প্রোডাকশন বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছে।’
উল্লেখ্য, ডিমকে বিশ্বে একটি উন্নতমানের ও সহজলভ্য আমিষজাতীয় খাদ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশন (আইইসি) স্থাপিত হয় ১৯৬৪ সালে। বর্তমানে এই সংস্থার সদস্যসংখ্যা ৮০। সংস্থাটি প্রাণিজ আমিষের চাহদিা পূরণ, স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি গঠন এবং সর্বোপরি ডিমের গুণাগুণ সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় প্রথম ‘বিশ্ব ডিম দিবস’ পালনের আয়োজন করে, যা পরবর্তী সময়ে প্রতিবছর অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার পালিত হয়ে আসছে।