ইসরায়েলি বাহিনীর সর্বশেষ বিমান হামলায় গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে অন্তত ৩৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ও সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি। মঙ্গলবারের এই হামলা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ১০ অক্টোবর কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর এ অঞ্চলে সবচেয়ে বড় সহিংসতার ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
প্রাথমিকভাবে দুজন নিহতের খবর পাওয়া গেলেও পরবর্তীতে এই সংখ্যা বেড়ে যায়। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দক্ষিণ রাফাহ এলাকায় গোলাগুলিতে এক সেনা আহত হওয়ার পর গাজায় ব্যাপক হামলার নির্দেশ দেন।
গাজার আল–শিফা হাসপাতালের পেছনে একটি ক্ষেপণাস্ত্র পড়লে বড় বিস্ফোরণ ঘটে বলে জানিয়েছেন আল–জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, বিস্ফোরণে হাসপাতাল এলাকায় আতঙ্ক ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।
হামলায় উত্তর গাজার সাবরা এলাকার চারজন ও দক্ষিণের খান ইউনিস অঞ্চলের পাঁচজন নিহত হন। আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে।
হামাসের সামরিক শাখা কাসাম ব্রিগেড অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ভেঙেছে। সংগঠনটি জানিয়েছে, নিখোঁজ দুই ইসরায়েলি জিম্মি—আমিরাম কুপার ও সাহার বারুচের মরদেহ উদ্ধার করা হলেও, হামলার কারণে মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।
এক বিবৃতিতে হামাস জানায়, ইসরায়েলি হামলা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের তত্ত্বাবধানে স্বাক্ষরিত শান্তিচুক্তির “স্পষ্ট লঙ্ঘন” এবং এটি গাজায় জিম্মিদের মরদেহ উদ্ধারের প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত করছে। হামাস নেতা সুহাইল আল–হিন্দি বলেন, “আমরা চুক্তির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ; ইসরায়েলের মিথ্যা অভিযোগ বন্ধ করা উচিত।”
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেছেন, হামাস রাফাহর ঘটনায় দায়ী এবং এর ‘চড়া মাশুল’ দিতে হবে। অপরদিকে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেছেন, “ছোটখাটো সংঘর্ষ হতেই পারে, তবে যুদ্ধবিরতি এখনো কার্যকর আছে।”
গাজার সরকারি গণমাধ্যম জানায়, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় মোট ৯৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।