ভারতের ঝাড়খণ্ডে সরকারি হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক থেকে নেওয়া রক্তে সংক্রমিত হয়ে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত পাঁচ শিশু এইচআইভি পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। তাদের সবার বয়স আট বছরের নিচে।
শনিবার (৮ নভেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, পশ্চিম সিংভূম জেলা সদর হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত নেওয়ার পর এই পাঁচ শিশুর মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণ ধরা পড়ে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট চন্দন কুমার। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর চাইবাসার সিভিল সার্জন, এইচআইভি ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন প্রতি পরিবারকে দুই লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন। তবে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এই অঙ্কে একটি শিশুর জীবনের মূল্যায়ন সম্ভব নয়।
সংক্রমিত শিশুদের পরিবারগুলো গভীর দুশ্চিন্তা ও সামাজিক বৈষম্যের মুখে পড়েছে। আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে সাত বছর বয়সী শশাঙ্ক, দিব্যা ও শ্রেয়া (সব নাম ছদ্মনাম) রয়েছেন। কারও পরিবারকে বাড়ি ছাড়তে বলা হয়েছে, কারও সন্তানকে দূর থেকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
তদন্তে জানা গেছে, রক্ত পরীক্ষায় পুরনো ‘প্রি-কিট’ ব্যবহারের ফলে সংক্রমণ শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। স্বাস্থ্য বিভাগের বিশেষ সচিব ডা. নেহা অরোরা জানিয়েছেন, এখন থেকে পুরনো কিট ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ২৫৯ জন রক্তদাতা রক্ত দিয়েছেন, যাদের মধ্যে ৪৪ জনকে শনাক্ত করা গেছে এবং ৪ জন এইচআইভি পজিটিভ ছিলেন। এদিকে, রাজ্যের ৯টি ব্লাড ব্যাংকের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হলেও কার্যক্রম চলছিল, যার ব্যাখ্যা চেয়েছে ঝাড়খণ্ড হাইকোর্ট।
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, লাইসেন্স নবায়ন ও মাননিয়ন্ত্রণের অভাবই এই বিপর্যয়ের মূল কারণ। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে আবাসন, রেশন ও শৌচালয়সহ সরকারি সুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।