1. bdtelegraph24@gmail.com : বিডিটেলিগ্রাফ ডেস্ক :
  2. suma59630@gmail.com : ফাতেমা আকতার তোয়া : ফাতেমা আকতার তোয়া
  3. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  4. tarim7866@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
  5. wasifur716@gmail.com : Wasifur Rahaman : Wasifur Rahaman
ইসলামে ইমাম ও মুয়াজ্জিনের মর্যাদা - বিডিটেলিগ্রাফ | Bangla News Portal, Latest Bangla News, Breaking, Stories and Videos
মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:৩৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কুষ্টিয়া সীমান্তে ৮ কোটি টাকার অবৈধ জাল জব্দ ক্ষমতায় গেলে শক্তিশালী রাষ্ট্র গড়বে বিএনপি,দুর্গাপুরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনায় নেতারা জীবিকার তাগিদে ডাকাত আতঙ্ক উপেক্ষা করে সুন্দরবনে জেলেদের প্রবেশ শ্যামনগরে বেড়িবাঁধের অবৈধ নাইন্টি পাইপ অপসারণ করায় পাউবো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হুমকি পাকিস্তানে সেনা হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে পাঁচ সেনা নিহত ৩৮ লাখ টাকার বিনিময়ে নথি হস্তান্তর, চাকরি হারালেন কর কমিশনার মিতু একই প্রতিষ্ঠানে টানা দু’বারের বেশি সভাপতি হতে পারবেন না কেউ সেনাবাহিনীর অভিযানে খাগড়াছড়িতে অপহৃত শিক্ষার্থী আল রাফি উদ্ধার ডাকসু নির্বাচন স্থগিত শ্রীনগরে মাদকাসক্ত ছেলেকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করলেন বাবা

ইসলামে ইমাম ও মুয়াজ্জিনের মর্যাদা

  • সর্বশেষ আপডেট : বুধবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ২৪৩২ জন খবরটি পড়েছেন

ইসলামের দৃষ্টিতে ইমামতি একটি মহান দায়িত্ব। সুন্দর ও সম্মানজনক পদ। আমাদের নবী (সা.) নিজে ইমামতি করেছেন। সাহাবায়ে কেরাম এই মহান দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের পরবর্তী মুসলমানদের সর্বোত্তম পর্যায়ের ব্যক্তিরা সমাজের ইমামতি করেছেন। নবী করিম (সা.) ইমামের মর্যাদাকে গুরুত্ব দিয়েছেন এবং সঙ্গে সঙ্গে এই মহান দায়িত্ব পালনে ইমামদের সতর্কও করেছেন। বিভিন্ন হাদিসে তাদের অনেক ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে।

ইমামের জন্য নবীজির (সা.) দোয়া : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘মসজিদের ইমাম হলো মুসল্লিদের জন্য জিম্মাদার এবং মুয়াজ্জিন আমানতদারস্বরূপ। হে আল্লাহ! তুমি ইমামদের সৎপথ প্রদর্শন কর এবং মুয়াজ্জিনদের ক্ষমা কর।’ 

” باب مَا جَاءَ أَنَّ الإِمَامَ ضَامِنٌ وَالْمُؤَذِّنَ مُؤْتَمَنٌ حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، وَأَبُو مُعَاوِيَةَ عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ الإِمَامُ ضَامِنٌ وَالْمُؤَذِّنُ مُؤْتَمَنٌ اللَّهُمَّ أَرْشِدِ الأَئِمَّةَ وَاغْفِرْ لِلْمُؤَذِّنِينَ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ وَسَهْلِ بْنِ سَعْدٍ وَعُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ رَوَاهُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَحَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ وَرَوَى أَسْبَاطُ بْنُ مُحَمَّدٍ عَنِ الأَعْمَشِ قَالَ حُدِّثْتُ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ 

 

আবু ঈসা বলেনঃ এ অনুচ্ছেদে আয়িশাহ সাহল ইবনু সা’দ ও উকবা ইবনু আমির (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু হুরাইরার হাদীসটি আমাশের সূত্রে একাধিক রাবী বর্ণনা করেছেন। এটা আবু সালিহ হতে আয়িশাহ (রাঃ)-এর সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে। আবু ঈসা বলেনঃ আমি আবৃ যুর’আকে বলতে শুনেছি, আবু হুরাইরার নিকট হতে বর্ণিত হাদীসটি বেশি সহীহ। কিন্তু ইমাম বুখারী আয়িশাহ নিকট হতে বর্ণিত হাদীসটিকে বেশি সহীহ বলেছেন। কিন্তু ‘আলী ইবনুল মাদীনী এর কোনটিকেই শক্তিশালী মনে করেন না।

 

*ব্যাখ্যা:* আলোচ্য হাদীসে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইমাম ও মুয়াযযিনের দায়িত্বের পরিধি ও ফাযীলাতের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইমাম যামিনদার। ‘আল্লামা জাফরী (রহঃ) বলেন, ইমাম যামিনদার এ কথার উদ্দেশ্য হলো ইমাম সাহেব সলাতকে দায়িত্ব ও কর্তব্যের সাথে যত্ন সহকারে সম্পাদন করবেন।

কেননা, ইমামই সলাতকে সংরক্ষণ করেন। কারণ তার নেতৃত্বে সকলে সলাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে। অপর এক বর্ণনায় বলা হয়, ইমামের সলাতের শুদ্ধতার উপর মুক্তাদীর সলাতের শুদ্ধতা নির্ভরশীল। অর্থাৎ- ইমামই সকল বিষয় যত্ন সহকারে হিসাব রাখেন। যেমন কত রাক্‘আত সলাত আদায় করা হলো ইত্যাদি।

এ হাদীসে আরো বলা হয়েছে যে, মুয়াযযিন বিশ্বস্ত ব্যক্তি। এ কথার উদ্দেশ্য হলো, লোকেরা সলাত, সওম ও অন্যান্য ‘ইবাদাতের ক্ষেত্রে মুয়াযযিনের ওপর নির্ভরশীল। মুসলিম সমাজের লোকেরা মুয়াযযিনের উপর তাদের ‘ইবাদাতের সময়ের ব্যাপারে নির্ভরশীল। ইবনু মাজার মধ্যে ‘আবদুল্লাহ ইবনে ‘উমার (রাঃ) থেকে মারফূ‘ সূত্রে বর্ণিত হাদীসে পাওয়া যায়- মুসলিমদের দু’টি বিষয়, মুয়াযযিনের ওপর ন্যাস্ত, আর তা হলো তাদের সলাত ও সওম।

আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণীঃ হে আল্লাহ! তুমি ইমামদের সঠিক পথ দেখাও। এর অর্থ, ‘ইলমের ব্যাপারে সঠিক পথ দেখাও। আর তার ‘ইলমের মধ্যে শার‘ঈ মাস্আলাহ্-মাসায়িলের সঠিক জ্ঞান থাকা আবশ্যক।

রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন, হে আল্লাহ! তুমি মুয়াযযিনদেরকে ক্ষমা কর। এ কথার উদ্দেশ্য হলো, আল্লাহ যেন মুয়ায্যিনদের দায়িত্ব যেমন সলাত ও সওম। এর ক্ষেত্রে কোন প্রকার আগপিছ করা ভুলের অপরাধ ক্ষমা করে দেন।

(তিরমিজি : ২০৭)।সহীহ। মিশকাত- (৬৬৩), ইরওয়া- (২১৭), সহীহ আবু দাউদ- (৫৩০)।

*সঠিক সময়ে নামাজ পড়ানোর সওয়াব :*

 উকবা ইবনে আমের (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি রাসুল (সা.) কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি সঠিক সময়ে লোকদের নিয়ে জামাতে নামাজ আদায় করছে এ জন্য সে (ইমাম) নিজে ও মুকতাদিরাও পরিপূর্ণ সওয়াবের অধিকারী হবে। অপরপক্ষে যদি কোনো সময় ইমাম সঠিক সময়ে নামাজ আদায় না করে তবে এজন্য সে দায়ী হবে; কিন্তু মুকতাদিরা পরিপূর্ণ সওয়াবের অধিকারী হবে।(হাসান সহীহ।)

 باب فِي جِمَاعِ الإِمَامَةِ وَفَضْلِهَا حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ الْمَهْرِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ حَرْمَلَةَ، عَنْ أَبِي عَلِيٍّ الْهَمْدَانِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ عُقْبَةَ بْنَ عَامِرٍ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏”‏ مَنْ أَمَّ النَّاسَ فَأَصَابَ الْوَقْتَ فَلَهُ وَلَهُمْ وَمَنِ انْتَقَصَ مِنْ ذَلِكَ شَيْئًا فَعَلَيْهِ وَلَا عَلَيْهِمْ ‏”‏ ‏.‏ حسن صحيح

(আবু দাউদ : ৫৮০)।[1] ইবনু মাজাহ (অধ্যায়ঃ ইকামাত, অনুঃ ইমামের উপর যা ওয়াজিব, হাঃ ৯৩৬), আহমাদ (৪/১৪৫, ২০১), ইবনু খুযাইমাহ (১৫১৩) সকলে আবূ ‘আলী আল-হামদানী সূত্রে। 

*নামাজ সংক্ষিপ্ত করা :*

 ইমামের মূল দায়িত্ব হলো, নামাজ পড়ানো। এজন্য নামাজের যাবতীয় দিক খেয়াল রাখা একজন ইমামের জন্য অবশ্য কর্তব্য। তন্মধ্যে একটি হলো, জামাতের নামাজ সংক্ষিপ্ত করা। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ লোকদের ইমামতি করলে সে যেন (নামাজ) সংক্ষেপ করে। কেননা তাদের মধ্যে ছোট বালক, দুর্বল ও অসুস্থ লোক থাকতে পারে। যখন সে একাকি নামাজ আদায় করে, তখন নিজ ইচ্ছামতো (দীর্ঘ করে) আদায় করতে পারে।’ (বোখারি : ২৩৬)।

প্রাকৃতিক প্রয়োজনের বেগ নিয়ে নামাজে না দাঁড়ানো : সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবীজি (সা.) বলেন, ‘প্রাকৃতিক প্রয়োজনের বেগ নিয়ে কেউ যেন নামাজে না দাঁড়ায়।’ (তিরমিজি : ৩৫৭)।

*কাতার সোজা হওয়ার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ :* 

কাতার ঠিক করা ওয়াজিব। এটি নামাজ পরিপূর্ণ করার অন্তর্ভুক্ত। ইমাম সাহেবের বিষয়টি খেয়াল করতে হবে। 

নুমান ইবনু বাশীর (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাতারসমূহ সমান করে দিতেন। একদিন তিনি (ঘর হতে) বের হয়ে এসে দেখলেন, এক ব্যক্তির বুক কাতারের বাইরে এগিয়ে রয়েছে। তিনি বললেনঃ তোমরা তোমাদের সারিগুলো সোজা করে দাড়াবে, অন্যথায় আল্লাহ তা’আলা তোমাদের মুখমণ্ডলে বিভেদ সৃষ্টি করে দেবেন। —সহীহ।

এ অনুচ্ছেদে জাবির ইবনু সামুরা, বারাআ, জাবির ইবনু আবদুল্লাহ, আনাস, আবু হুরাইরা ও আয়িশাহ (রাঃ) হতেও বর্ণনাকৃত হাদীস রয়েছে। আবু ঈসা বলেনঃ নুমান ইবনু বাশীরের হাদীসটি হাসান সহীহ। নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেনঃ কাতার ঠিক করা নামায পরিপূর্ণ করার অন্তর্ভুক্ত।

উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি কাতার ঠিক করার জন্য একজন লোক নিযুক্ত করতেন। যে পর্যন্তনা তাকে জানানো না হত যে, কাতার সোজা হয়েছে সে পর্যন্ত তিনি তাকবির (তাহরীমা) বলতেন না। উসমান এবং আলী (রাঃ) এদিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখতেন এবং তারা বলতেন, তোমরা সোজা হও। আলী (রাঃ) তো নাম ধরেই বলতেন, অমুক একটু আগাও, অমুক একটু পিছাও।”

” باب مَا جَاءَ فِي إِقَامَةِ الصُّفُوفِ حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُسَوِّي صُفُوفَنَا فَخَرَجَ يَوْمًا فَرَأَى رَجُلاً خَارِجًا صَدْرُهُ عَنِ الْقَوْمِ فَقَالَ ‏”‏ لَتُسَوُّنَّ صُفُوفَكُمْ أَوْ لَيُخَالِفَنَّ اللَّهُ بَيْنَ وُجُوهِكُمْ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ وَالْبَرَاءِ وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ وَأَنَسٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَعَائِشَةَ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ ‏.‏ وَقَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ ‏”‏ مِنْ تَمَامِ الصَّلاَةِ إِقَامَةُ الصَّفِّ ‏”‏ ‏.‏ وَرُوِيَ عَنْ عُمَرَ أَنَّهُ كَانَ يُوَكِّلُ رِجَالاً بِإِقَامَةِ الصُّفُوفِ فَلاَ يُكَبِّرُ حَتَّى يُخْبَرَ أَنَّ الصُّفُوفَ قَدِ اسْتَوَتْ ‏.‏ وَرُوِيَ عَنْ عَلِيٍّ وَعُثْمَانَ أَنَّهُمَا كَانَا يَتَعَاهَدَانِ ذَلِكَ وَيَقُولاَنِ اسْتَوُوا ‏.‏ وَكَانَ عَلِيٌّ يَقُولُ تَقَدَّمْ يَا فُلاَنُ تَأَخَّرْ يَا فُلاَنُ ‏.‏

সূনান আত তিরমিজী [তাহকীককৃত]হাদিস নম্বরঃ ২২৭ইবনু মাজাহ– (৯৯৪), বুখারী ও মুসলিম। 

*ইমাম মুসল্লিদের প্রতিনিধি*

ইমাম তার অধীন লোকদের পক্ষ থেকে আল্লাহর দরবারে প্রতিনিধিত্ব করেন। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা তোমাদের মধ্যকার উত্তম ব্যক্তিকে তোমাদের ইমাম নিয়োগ করবে। কারণ তিনি হবেন তোমাদের পক্ষে তোমাদের প্রতিপালকের প্রতিনিধি।’ (দারাকুতনি : ১৮৮১)।

*ইমাম দায়িত্বের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে*

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো কওমের ইমাম নিযুক্ত হয়, সে যেন আল্লাহকে ভয় করে এবং জেনে রাখে যে, সে তার দায়িত্বের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে। যদি সে তার দায়িত্ব সুচারুরূপে আঞ্জাম দেয়, তবে তার পশ্চাৎবর্তী মুসল্লির সমপরিমাণ সওয়াব সে লাভ করবে। কিন্তু তাদের সওয়াব সামান্যও কম করা হবে না। তবে নামাজে যদি কোনো ত্রুটি হয়, তবে তার দায়িত্ব তারই।’ (মুজামুল আওসাত : ৭৭৫৫)।

*মুসল্লিদের খোঁজখবর নেওয়া*

মুসল্লিদের খোঁজখবর নেওয়া একজন আদর্শ ইমামের কর্তব্য। এ প্রসঙ্গে খুব চমৎকার বলা হয়েছে হাদিসে। 

আবু সুলাইমান মালেক ইবনে হুয়াইরিস (রা.) বলেন, ‘আমরা কয়েকজন সমবয়সী যুবক নবী করিম (সা.) এর খেদমতে হাজির হলাম এবং ২০ দিন পর্যন্ত তাঁর খেদমতে থাকলাম। তিনি যখন অনুভব করলেন যে, আমরা ঘরে ফিরতে উদ্গ্রীব হয়ে উঠেছি, তখন তিনি আমাদের বাড়ির লোকজন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। আমরা নিজ বাড়ির অবস্থা তাঁর কাছে বর্ণনা করলাম। তিনি অত্যন্ত কোমল হৃদয় ও দয়ালু ছিলেন। বললেন, আচ্ছা, এবার তোমরা নিজেদের পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরে যাও! তাদের গিয়ে (এখানে যা শিখে গেলে তা) শেখাও এবং সৎকাজে আদেশ কর এবং আমাকে যেভাবে নামাজ পড়তে দেখলে, সেরূপ নামাজ পড়। যখন নামাজের সময় হবে, তখন তোমাদের মধ্যে একজন উঠে আজান দেবে এবং তোমাদের মধ্যে যে সবার বড়, সে ইমামতি করবে।’ (আদাবুল মুফরাদ : ২১৩)।

আর শুধু নামাজ পড়ালেই হবে না; বরং মুসল্লিদের নামাজ শুদ্ধ হচ্ছে কি না খেয়াল রাখতে হবে। যারা নামাজ পড়ে না, তাদের বুঝিয়ে-শুনিয়ে মসজিদে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। নবীজি (সা.) তো হাটেবাজারে, অলিতে-গলিতে, বাড়িতে বাড়িতে ঘুরে ঘুরে মানুষকে নামাজের দাওয়াত দিয়েছেন। আল্লাহর দিকে ডেকেছেন। তাহলে ইমামদের এতে লজ্জা হবে কেন? আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, ইমামের জন্য ফরজের আগে-পরের সুন্নত নামাজের প্রতি বিন্দুমাত্র অমনোযোগিতা খুবই দৃষ্টিকটু। এটা মুসল্লিদের ওপর প্রভাব পড়ে। তাই একজন ইমামের জন্য শুধু সুন্নতে মুয়াক্কাদা নয়; বরং নফলের প্রতিও গুরুত্বারোপ করা উচিত।

*মসজিদের ইমাম সমাজেরও ইমাম*

 ইমামতি সাধারণ কোনো পেশা নয়। এর রয়েছে অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য। সেবার মানসিকতা নিয়েই এ পেশায় আত্মনিয়োগ করা উচিত। একজন ইমাম শুধু মসজিদের ইমাম নয়; বরং তিনি সমাজেরও ইমাম। মানুষ, মনুষ্যত্ব ও সমাজ নিয়েও একজন নবীর উত্তরাধিকারী ইমামকে ভাবতে হবে। একজন ইমাম হতে পারেন মানবতার পথপ্রদর্শক। ইমাম বোধসম্পন্ন হলে, তার সংশ্রবে থেকে মুসল্লিরা ভ্রাতৃত্ববোধ ও সহমর্মিতার গুণ শেখে। একজন ইমামই পারেন দিকভ্রান্ত মানুষকে সরল পথে পরিচালিত করতে। আল্লাহর সত্তার সঙ্গে মানুষকে পরিচয় করিয়ে দিতে। ইমামকে সবার আস্থাভাজন হওয়া বাঞ্ছণীয়। যেন সবাই নিজের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, জাগতিক ও ধর্মীয় সব বিষয়ে মতের আদান-প্রদান করতে পারেন। লেনদেন, বিয়ে-শাদি ও অন্যান্য কার্যক্রমে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নির্বাচন করতে পারেন।

مَنۡ یَّشۡفَعۡ شَفَاعَۃً حَسَنَۃً یَّکُنۡ لَّہٗ نَصِیۡبٌ مِّنۡہَا ۚ وَ مَنۡ یَّشۡفَعۡ شَفَاعَۃً سَیِّئَۃً یَّکُنۡ لَّہٗ کِفۡلٌ مِّنۡہَا ؕ وَ کَانَ اللّٰہُ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ مُّقِیۡتًا ﴿۸۵﴾ 

*যে ভাল সুপারিশ করবে, তা থেকে তার জন্য একটি অংশ থাকবে এবং যে মন্দ সুপারিশ করবে তার জন্যও তা থেকে একটি অংশ থাকবে। আর আল্লাহ প্রতিটি বিষয়ের সংরক্ষণকারী।(সূরা ৪.আন-নিসা আয়াত নং ৮৫)*

*যে লোক কোন সুন্দর নীতি অথবা মন্দ নীতি চালু করে এবং যে লোক সঠিক পথের দিকে ডাকে অথবা বিভ্রান্তের দিকে আহবান করে*

*আবু হুরাইরাহ্ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে লোক সঠিক পথের দিকে ডাকে তার জন্য সে পথের অনুসারীদের প্রতিদানের সমান প্রতিদান রয়েছে। এতে তাদের প্রতিদান হতে সামান্য ঘাটতি হবে না। আর যে লোক বিভ্রান্তির দিকে ডাকে তার উপর সে রাস্তার অনুসারীদের পাপের অনুরূপ পাপ বর্তাবে। এতে তাদের পাপরাশি সামান্য হালকা হবে না।*

. باب مَنْ سَنَّ سُنَّةً حَسَنَةً أَوْ سَيِّئَةً وَمَنْ دَعَا إِلَى هُدًى أَوْ ضَلاَلَةٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، وَقُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَابْنُ، حُجْرٍ قَالُوا حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، – يَعْنُونَ ابْنَ جَعْفَرٍ – عَنِ الْعَلاَءِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ مَنْ دَعَا إِلَى هُدًى كَانَ لَهُ مِنَ الأَجْرِ مِثْلُ أُجُورِ مَنْ تَبِعَهُ لاَ يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئًا وَمَنْ دَعَا إِلَى ضَلاَلَةٍ كَانَ عَلَيْهِ مِنَ الإِثْمِ مِثْلُ آثَامِ مَنْ تَبِعَهُ لاَ يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ آثَامِهِمْ شَيْئًا ‏”‏ ‏.‏ 

*সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)অধ্যায়ঃ ৪৮। ইলম [জ্ঞান] (كتاب العلم)হাদিস নম্বরঃ ৬৬৯৭(ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৫৬০, ইসলামিক সেন্টার ৬৬১৪)*

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2025
Theme Customized By BreakingNews