1. bdtelegraph24@gmail.com : Bdtelegraph Bangla :
  2. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  3. islam.azizul93@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
রাস্তাকে মৎস্য ঘেরের ভেড়িবাঁধ হিসেবে ব্যবহার, সরকারি উন্নয়ন হচ্ছে ধ্বংস - টেলিগ্রাফ বাংলাদেশ
সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৬:১১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ফাঙ্গিও-মসের চালানো মার্সিডিজ স্ট্রিমলাইনার বিক্রি হলো ৬৫০ কোটি টাকায় দাবি না মানলে রেললাইন ছাড়ব না, শিক্ষার্থীদের হুঁশিয়ারি শেখ হাসিনাকে এক শ কোটি টাকা ঘুষ দেয়া, সিমিন রহমানের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর তথ্য লেখনী ও চিত্রে বাংলা ভাষা আন্দোলন ও অমর একুশ রুপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের গ্রাহকদের মাঝে চেক বিতরণ খালেদা জিয়াকে চিঠি দিলেন শাহবাজ শরিফ—কী লিখেছেন তিনি? জানাজার আধা ঘণ্টা আগে স্বামীর মৃত্যু, একই কবরে দাফন মা-ছেলেসহ ৪ জনের প্রাণ গেল সিলেটে সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া আওয়ামী লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিলেন সমর্থকরা রাস্তাকে মৎস্য ঘেরের ভেড়িবাঁধ হিসেবে ব্যবহার, সরকারি উন্নয়ন হচ্ছে ধ্বংস

রাস্তাকে মৎস্য ঘেরের ভেড়িবাঁধ হিসেবে ব্যবহার, সরকারি উন্নয়ন হচ্ছে ধ্বংস

  • সর্বশেষ আপডেট : রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৭ জন খবরটি পড়েছেন

প্রতিনিধি, শ্যামনগর (সাতক্ষীরা)।
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে সরকারি রাস্তাকে বেড়িবাঁধ হিসেবে ব্যবহার করে মৎস্য ব্যবসায়ীরা ঘের করায় উপজেলার শতাধিক প্রধান ও গ্রামীণ সড়কের বিভিন্ন অংশ ধসে পড়েছে। ফলে সরকারের অবকাঠামো উন্নয়ন ভেস্তে যেতে বসেছে। ঐসব সড়ক দিয়ে পথচারী ও ছোট-বড় যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছে।

নব্বই দশকে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা উপজেলার বিভিন্ন খালবিল, নদীর অববাহিকা দখল করে মাছ চাষ শুরু করেন। শুরু থেকেই ঘের মালিকরা গ্রামীণ প্রধান সড়কগুলো ঘেরের বেড়িবাঁধ হিসেবে ব্যবহার করতে থাকেন। পরে ওইসব ঘেরে মাছের খাদ্য হিসেবে রাসায়নিক সার ব্যবহার করায় এবং ঘেরের পানির কারণে মাটি ধসে সড়কের বিভিন্ন অংশ ঘেরের মধ্যে বিলীন হতে থাকে। এ ছাড়া রাসায়নিক সারের কারণে মাটি নরম হয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর বিভিন্ন অংশ ভেঙে যাচ্ছে । এ ব্যাপারে বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযোগ উঠলেও প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করে আসছে।

সরেজমিনে শ্যামনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার প্রধান সড়কসহ গ্রামীণ শতাধিক পাকা ও ইটের সোলিং সড়ক মাছের ঘেরের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে। এর মধ্যে কাশিমাড়ি-ঘোলা খেয়াঘাট সড়কসহ সোয়ালিয়া-নূরনগর সড়ক, ঈশ্বরীপুর এ সোবহান মাধ্যমিক বিদ্যালয়-ঝাপালি সড়ক, নকিপুর ভুলোর মোড়-নওয়াবেঁকী সড়ক, কলবাড়ি-নীলডুমুর সড়ক, নাওয়াবেকী-কলবাড়ি সড়ক, গোপালপুর-সোয়ালিয়া সড়ক, মানিকখালি-রমজাননগর ফুটবল মাঠ, পদ্মপুকুর ইউনিয়নের পাখিমারা-চৌদ্দরশি কেয়ার রাস্তাসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার পিচের পাকা সড়ক ও ইটের সোলিং সড়ক ধসে নষ্ট হয়ে গেছে। যার কারণে এসব সড়ক দিয়ে পথচারী ও ছোট-বড় যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে স্থানীয়রা বলছেন, অপরিকল্পিতভাবে ঘের বা পুকুর কেটে মাছ চাষ করছেন চাষিরা। এসব চাষি তাদের ঘের বা পুকুরের ১টি বা ২টি পাড় হিসেবে সরকারি রাস্তা ব্যবহার করছেন। বাতাসে ঘেরের পানিতে ঢেউ সৃষ্টি হচ্ছে। এ ঢেউ আছড়ে পড়ছে সড়কে। এতেই মাছের ঘেরে ভেঙে পড়ছে সড়ক।

কাশিমাড়ী ইউনিয়নের ঘোলা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মাছের ঘেরওয়ালাদের জন্য রাস্তা টিকছে না। মাছের ঘেরের পানির ঢেউয়ে রাস্তার মাটি, পিচ (বিটুমিন) পর্যন্ত ভেঙে পড়ছে। রাস্তার যে অবস্থা, তাতে আমাদের এলাকায় কোন যানবহন আসতে চায় না।
যাদবপুর এলাকার কামরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নিয়মনিতির তোয়াক্কা না করে সড়ককে বেড়িবাঁধ হিসেবে ব্যাবহার করে বছরের পর বছর মাছ চাষ করে আসছেন এলাকার কিছু প্রভাবশালী। এতে সরকারি অর্থে নির্মিত সড়কের ক্ষতি হচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তুষার মজুমদার বলেন, সরকারি সড়ক মাছের ঘেরের বেড়িবাঁধ হিসেবে ব্যবহার করায় রাস্তা ধসে পড়ার বিষয়টি একাধিকবার উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় উত্থাপন করা হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ জাকির হোসেন জানান, ঘের মালিকরা সড়ক অবৈধভাবে বেড়িবাঁধ হিসেবে ব্যবহার করে মাছ চাষ করার ফলে সড়কের ঢাল ও সোল্ডারসহ পিচের রাস্তা ভেঙে গেছে। বিধি অনুযায়ী সড়ক থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বে পৃথক বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে মাছ চাষের জন্য পত্র দেওয়া হলেও ঘের মালিকরা তা অমান্য করে সড়ককেই বেড়িবাঁধ হিসেবে ব্যবহার করে সড়কের ক্ষতি করে চলেছেন।

এছাড়াও এলজিইডির এ প্রকৌশলী জানান, গ্রামীণ সড়ক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অন্যতম কারণ অতিরিক্ত পণ্যবোঝাই যানবাহন চলাচল। উপজেলা সড়ক ও ইউনিয়ন সড়কে ৮ দশমিক ২ টন এবং গ্রামীণ সড়কে ৫ টনের বেশি পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ। কিন্তু বাস্তবে এর চেয়ে অধিক ওজনের যানবাহন চলাচল করছে। ফলে সড়ক দ্রুত নষ্ট হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছাঃ রনী খাতুন বলেন, সামনে শুস্ক মৌসুমে রাস্তা ছেড়ে ঘেরের জন্য পৃথক বেড়িবাঁধ নির্মাণে ঘের মালিকদের ইতিমধ্যে জানানো হয়েছে। এছাড়াও যেসব ঘেরের রেজিস্ট্রেশন করা হয় যে সকল ঘের মালিকদেরকে বেড়িবাঁধ নির্মাণে আউট ড্রেন রাখার জন্য বলা হয়েছে। অন্যথায় ঘেরের রেজিস্ট্রেশন দেয়া হচ্ছে না বলে জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে গবেষক তানজির কচি বলেন, আউট ড্রেন না রেখে গ্রামীণ সড়ককে ঘেরের বেড়ি হিসেবে ব্যবহার করায় তা দ্রুত ভেঙে চলে যাচ্ছে ঘেরের মধ্যে। এতে সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- যেমন টেকসই হচ্ছে না, তেমনি কোটি কোটি টাকা পানিতে যাচ্ছে। আউট ড্রেন না রাখায় পানি নিষ্কাশনের পথ থাকছে না। ফলে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধ হয়ে পড়ছে গ্রামের পর গ্রাম। এতেও রাস্তাঘাট ধ্বংসপ্রাপ্ত হচ্ছে। মানুষের কাঁচা বাড়িঘর নষ্ট হচ্ছে। ঘেরের লবণাক্ত পানি চুইয়ে আসায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষি প্রাণবৈচিত্র্য। বিপর্যয় ঘটছে পরিবেশের। তাই উপকূলীয় মৎস্য ঘের অধ্যুষিত জেলাগুলোর আর্থসামাজিক উন্নয়ন টেকসই করতে ঘেরের আউট ড্রেন নির্মাণ বাধ্যতামূলক করতে হবে। যা একই সঙ্গে গ্রামীণ সড়কের সুরক্ষা, পানি নিষ্কাশন, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, লবণ পানির আগ্রাসন থেকে কৃষিজমি রক্ষা ও রাস্তার ধোয়ানি রোধসহ নানামুখী ভূমিকা পালন করতে সক্ষম।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2024
Theme Customized By BreakingNews