ডেস্ক নিউজ।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন শিনাওয়াত্রার পদত্যাগের দাবিতে রাজধানী ব্যাংককে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে হাজার হাজার মানুষ। সম্প্রতি কম্বোডিয়ার সাবেক নেতা হুন সেনের সঙ্গে থাই প্রধানমন্ত্রীর একটি ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর থেকেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে।
শনিবার (২৮ জুন) স্থানীয় সময় সকালে ব্যাংককের বিজয় স্মারক চত্বরে দেশটির পতাকা হাতে জড়ো হন হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ মানুষ। তারা প্রধানমন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান। বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী তার ফোনালাপে থাইল্যান্ডের সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।
ফাঁস হওয়া ফোনালাপে পেতংতার্ন শিনাওয়াত্রা কম্বোডিয়ার নেতার উদ্দেশে জানতে চান, “তিনি কী চান?”—এবং এক পর্যায়ে বলেন, থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনীর একজন শীর্ষ কমান্ডার সরকারের পক্ষেই নেই। এই বক্তব্য নিয়ে দেশজুড়ে তৈরি হয় ব্যাপক বিতর্ক।
এক বিক্ষোভকারী বলেন, “থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে আগেও অনেক বিরোধ ছিল। প্রধানমন্ত্রী একজন সামরিক কমান্ডারকে অবমাননা করেছেন এবং বিদেশি নেতার কাছে নিজেদের অবস্থান দুর্বল করে তুলেছেন। এটা আমাদের দেশের স্বাধীনতার অবমাননা।”
বিক্ষোভ আহ্বানকারী সংগঠন ‘ইউনাইটেড ফোর্স অব দ্য ল্যান্ড’ জানায়, এই সমাবেশ মূলত শিনাওয়াত্রা পরিবারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক বিরোধেরই অংশ। সংগঠনটি গত দুই দশক ধরে পেউ থাই পার্টির বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
যদিও বিক্ষোভকারীরা সরকারের পদত্যাগ দাবি করছেন, তারা সেনা হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করছেন। একজন আন্দোলনকারী বলেন, “আমরা চাই না সেনাবাহিনী আবার রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করুক। অতীতেও সেনা অভ্যুত্থান দুর্নীতি দূর করতে পারেনি।”
২০২৩ সালে পেউ থাই পার্টি সরকার গঠনের পর এটিই সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী সমাবেশ বলে মনে করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন বর্তমানে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ, জোট সরকারের টানাপোড়েন এবং আসন্ন অনাস্থা ভোটের চাপে রয়েছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে অতীতে এমন বিক্ষোভের জেরে সেনা হস্তক্ষেপ বা আদালতের মাধ্যমে ক্ষমতা বদলের নজির রয়েছে। এবারও সেই শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।