জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গাঁজা সেবনরত অবস্থায় দুই শিক্ষার্থীকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আটকের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই সহকারী প্রক্টরের সঙ্গে তাদের খারাপ আচরণের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ইমন নামে একজন বহিরাগত পালিয়েছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে।
শনিবার (১২ জুলাই) রাত ৯টা ৫০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্ট অফিসের করিডোরে সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক ও সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ রেজাউল রকিব তাদের আটক করেন।
এসময় আটককৃত এক শিক্ষার্থীর ব্যাগ থেকে প্রায় ৫০ গ্রাম গাঁজা ও গাঁজা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
আটককৃত শিক্ষার্থীরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪৮ ব্যাচের মেহেদী হাসান মিরাজ এবং চারুকলা বিভাগের ৪৮ ব্যাচের তাহমিদ নোবেল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সূত্রে জানা যায়, রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে খবর পেয়ে দুই সহকারী প্রক্টর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করতে যান। সেখানে তারা এই দুই শিক্ষার্থীসহ একজন বহিরাগতকে একসঙ্গে বসে গাঁজা সেবনরত অবস্থায় দেখতে পান। সহকারী প্রক্টরদের দেখে বহিরাগত ইমন পালিয়ে গেলেও, দুই শিক্ষার্থীকে আটক করা সম্ভব হয়। পরে তাদের একজনকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসা হয় এবং তার ব্যাগ তল্লাশি করে গাঁজা ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
প্রক্টর অফিসে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রক্টর অধ্যাপক ড. রাশিদুল আলমের কাছে দুই শিক্ষার্থী নিজেদের দোষ স্বীকার করেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার শর্তে তাদের থেকে মুচলেকা নিয়ে সাময়িকভাবে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে, প্রক্টর জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা বিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযানে অংশ নেওয়া সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনজনকে গাঁজা সেবনরত অবস্থায় পাই। পরে বহিরাগত একজন পালিয়ে গেলেও, দুজন শিক্ষার্থীকে ধরতে সফল হই এবং প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা দোষ স্বীকার করে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকবে বলে জানান।”
তিনি আরও যোগ করেন যে, ভবিষ্যতেও মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. রাশিদুল আলম বলেন, “মাদকের বিরুদ্ধে এই প্রশাসন জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করছে। আমরা প্রক্টোরিয়াল বডির মিটিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা বিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
আপাতত ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার শর্তে তাদের থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে আগামীতে মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের কঠোর অবস্থান জারি থাকবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের কোথাও মাদক সেবনরত অবস্থায় কাউকে পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, আটকের সময় এক শিক্ষার্থী জানান যে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থীর কাছ থেকে গাঁজা কিনেছিলেন। প্রক্টর অফিস জানিয়েছে, আগামী এক মাস মাদকবিরোধী অভিযান জারি থাকবে।