জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতা মো. ইমামুর রশিদের বিরুদ্ধে এক নারী ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিওতে ওই নারী উদ্যোক্তা এনসিপিকে ৪৮ লাখ টাকা ডোনেশনের দাবি করেছেন। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (১৩ জুলাই) ইমামুর রশিদ নিজের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়ে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন।
এর আগে রোববার বিকেলে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক এবং শিক্ষাবিদ ড. এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান এনসিপির এই নেতার অর্থ গ্রহণের একটি ভিডিও পোস্ট করেন।
ইমামুর রশিদ তার পোস্টে উল্লেখ করেন যে, ভিডিওতে যে মহিলার কণ্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে, তিনি গত মে মাসের প্রথম দিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির অস্থায়ী কার্যালয়ে এসে পার্টির আহ্বায়ক ও দুই অঞ্চলের মুখ্য সংগঠকদের সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে তিনি স্বেচ্ছায় পার্টি ফান্ডে ডোনেশন দিতে ইচ্ছা পোষণ করেন।
তিনি আরও জানান, এই নারী এর আগে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনেও আর্থিক অনুদান দিয়েছিলেন, যা পরে যাচাই করা হয়েছিল।
ইমামুর রশিদের ভাষ্যমতে, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ওই মহিলা পার্টি ফান্ডে ১০ লাখ টাকা দেবেন বলে পার্টির পক্ষ থেকে একজনকে পাঠাতে বলেন। ফান্ড সংগ্রহের দায়িত্ব তাকে দেওয়া হয় এবং তিনি সেই ফান্ড কালেক্ট করে কোষাধ্যক্ষের কাছে জমা দেন।
তিনি নিজেকে কেবল অর্পিত দায়িত্ব পালনকারী হিসেবে উল্লেখ করেন। পোস্টে তিনি দাবি করেন, “টুকু জানতে পেরেছি, পরে সেই মহিলা আমাদের পার্টির টপ লিডারদের কাছে তার ব্যক্তিগত কিছু অনৈতিক সুবিধা চেয়েছেন। পার্টির টপ লিডাররা মহিলাটিকে ব্যক্তিগত সুবিধা দিতে রাজি না হলে টপ লিডারদের সঙ্গে তার দূরত্ব বাড়তে থাকে।
যার পরিপ্রেক্ষিতে আজ তিনি এই ভিডিওটা অন্যকে দিয়ে ছড়িয়েছেন।” তিনি এটিকে ‘অসৎ উদ্দেশ্য’ এবং ‘কোনো গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়ন’ করার চেষ্টা বলে মন্তব্য করেন, প্রশ্ন তোলেন, কেন ডোনেশন দেওয়ার ভিডিওটি গোপনে ধারণ করা হয়েছিল।
এনসিপির এই নেতা আরও দাবি করেন, তার পার্টি কখনোই ওই নারীর কাছ থেকে ডোনেশনের জন্য অ্যাপ্রোচ করেনি; বরং ওই নারী নিজেই ডোনেশনের জন্য পার্টিকে অ্যাপ্রোচ করেছেন এবং ডোনেশনের পরিমাণও তিনি নিজেই নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি কখনোই ডোনেশনের বিনিময়ে কোনো কিছু সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেয়নি। তিনি ৪৮ লাখ টাকা ডোনেশনের দাবিকেও ‘মিথ্যা’ বলে উল্লেখ করেন।
ইমামুর রশিদ তার সততার উপর জোর দিয়ে বলেন, “আমি মনে করি, আমার সর্বোচ্চ যোগ্যতা হলো আমার সততা। সেই সততাকে বিসর্জন দিয়ে আমি কোনো অনৈতিক কাজ করেছি এর প্রমাণ দিতে পারলে আমি স্বেচ্ছায় যে কোনো শাস্তি মাথা পেতে নেবো।”
তিনি জানান, এই ঘটনার পরই পার্টির ফান্ড পলিসি এবং ডোনেশনের জন্য একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে।