ডেস্ক রিপোর্ট,
ওড়িশার বালেশ্বর জেলার এক কলেজ ছাত্রী যৌন হেনস্তার অভিযোগে প্রতিকার না পেয়ে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। সোমবার (১৫ জুলাই) রাতে ভুবনেশ্বরের এমস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ২০ বছর বয়সী ওই ছাত্রী।
শনিবার কলেজ অধ্যক্ষের কক্ষে গিয়ে নিজের গায়ে আগুন দেন তিনি। গুরুতর অবস্থায় প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ও পরে ভুবনেশ্বরের এমসে নেওয়া হয়। তবে শরীরের ৯০ শতাংশ দগ্ধ হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে বাঁচাতে পারেননি।
নিহত ছাত্রী বালেশ্বরের একটি স্বায়ত্তশাসিত কলেজের বিএড বিভাগের ছাত্রী ছিলেন। তিনি বিভাগের প্রধান অধ্যাপকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে যৌন হেনস্তার অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন। অভিযোগ ওঠে, কলেজের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি অভিযুক্ত শিক্ষককে ‘ক্লিন চিট’ দেয়। এরপরই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছাত্রী আগুন দিয়ে আত্মাহুতি দেন।
তার বাবা জানিয়েছেন, ছয় মাস ধরে ওই অধ্যাপক তার মেয়েকে হেনস্তা করছিলেন। ছাত্রী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিষয়টি প্রকাশ করেছিলেন। সহপাঠীরাও জানান, ছাত্রীটিকে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়া ও পরীক্ষায় বসতে না দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল।
পুলিশ ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত অধ্যাপক ও কলেজ অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে। উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদেরও তদন্তে যুক্ত করা হয়েছে বলে জানান বালেশ্বরের পুলিশ সুপার।
ছাত্রীর মৃত্যুতে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এটিকে ‘সংগঠিত হত্যা’ বলে অভিহিত করেছেন। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেছেন, একটি সংবেদনশীল ঘটনাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার করা অনুচিত।
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু হাসপাতালে গিয়ে ছাত্রীটির খোঁজ নিয়েছিলেন। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি মৃত ছাত্রীর পরিবারকে আশ্বস্ত করেছেন যে, অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে।