আজ দুপুরে গোপালগঞ্জ পৌর পার্কে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশস্থলে অতর্কিত হামলা চালানো হয়েছে। হেলমেট পরা ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ সমর্থকদের বিরুদ্ধে সাউন্ড গ্রেনেড, ককটেল ও দেশীয় অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এ সময় বৃষ্টি চলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে তেমন উপস্থিত ছিল না। সুযোগ বুঝে হামলা চালিয়ে তারা মঞ্চের ডায়াজ ও চেয়ার ভাঙচুর করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এনসিপির সমাবেশ চলাকালে হঠাৎ করেই হেলমেট পরা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করে। তারা সাউন্ড গ্রেনেড ও ককটেল নিক্ষেপ করে এলাকায় চরম আতঙ্ক সৃষ্টি করে। হামলাকারীরা মঞ্চের ডায়াজ ও চেয়ার ভাঙচুর করে।
হামলার আকস্মিকতায় এনসিপি নেতাকর্মী, পুলিশ এবং সাধারণ মানুষ দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। এই সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্লিপ্ততা দেখা গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করেছেন। হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
পরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। একইসাথে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে পড়া এনসিপি নেতা-কর্মীরা আবারও একত্রে অবস্থান নিতে শুরু করে। এসময় সমাবেশের স্টেজ থেকে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে কর্মী ও সমর্থকদের উজ্জীবিত রাখার চেষ্টা করতে দেখা যায়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, এ ঘটনার পর এনসিপি নেতারা সমাবেশ স্থলে পৌছান এবং বক্তৃতা রাখেন। সমাবেশ শেষ হলে সেখান থেকে গাড়িবহর নিয়ে তারা মাদারীপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলে, গাড়িবহরে হামলা চালায় ছাত্রলীগ-আওয়ামীলীগ সমর্থকেরা। পুলিশ তৎক্ষনাত হাসানাত-সারজিসসহ এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয় এবং শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তারা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন। জানা যায় সেখানে ছাত্রলীগ-আওয়ামীলীগ হামলা চালায়। এসময় সেনাবাহিনী সেখানে সাজোয়া যান নিয়ে অবস্থান করে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেয়।
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরে গোপালগঞ্জে এনসিপির ‘জুলাই পদযাত্রা’ কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর আগে আজ সকালেই সদর পুলিশের গাড়িতে আগুনের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম রকিবুল হাসানের গাড়িবহরে হামলা-ভাঙচুর করেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
বুধবার সকালে সদর উপজেলার উলপুর এলাকায় পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালের সমর্থকদের দায়ী করেন গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মির মো. সাজেদুর রহমান। আজকের এই হামলা চলমান উত্তেজনারই অংশ বলে ধারণা করা হচ্ছে।