1. bdtelegraph24@gmail.com : বিডিটেলিগ্রাফ ডেস্ক :
  2. suma59630@gmail.com : ফাতেমা আকতার তোয়া : ফাতেমা আকতার তোয়া
  3. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  4. tarim7866@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
  5. wasifur716@gmail.com : Wasifur Rahaman : Wasifur Rahaman
মির্জাগঞ্জে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ - বিডিটেলিগ্রাফ | Bangla News Portal, Latest Bangla News, Breaking, Stories and Videos
শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:৫২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
নরসিংদীর রায়পুরায় পুলিশের অভিযানে অস্ত্র, ককটেল ও গোলাবারুদ উদ্ধার বর্ষায় ঠান্ডা লেগে ঘন ঘন জ্বর আসছে, কাশি কমছেই না, কিসের লক্ষণ? প্রকৌশল পদ ও ‘বিসিএস ক্যাডার’ সমমানের পদোন্নতি নিয়ে সংকট শ্যামনগরে ভিমরুলের কামড়ে মধ্যবয়সী এক ব্যক্তির মৃত্যু পঞ্চগড়ে জুলাই দ্রোহ করবে ছাত্রশিবির দৌলতপুরে মাইলষ্টোন কলেজের নিহত অভিভাবক রজনীর কবরে বিমান বাহিনীর শ্রদ্ধা নিবেদন ভোমরা সীমান্তে ১০ হাজার ইয়াবাসহ দুই যুবক গ্রেপ্তার শাহবাগ ছাড়লেন ‘জুলাই যোদ্ধা’রা, পুলিশের লাঠিচার্জে অবরোধ প্রত্যাহার শাহবাগ মোড়ে জুলাই যোদ্ধাদের ২ গ্রুপের সংঘর্ষ ক্ষমতায় এলে ‘ফ্যামিলি কার্ড’ মায়েদের নামে: টুকু

মির্জাগঞ্জে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ

  • সর্বশেষ আপডেট : শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২
  • ২৮৮ জন খবরটি পড়েছেন

মোঃ ইলিয়াস হোসাইন।

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে এক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কলেজের অর্থ আত্মসাৎ, কর্মচারীকে মারধর, সহকারী শিক্ষককে লাঞ্ছিত ও প্রাণনাশের হুমকসহ নানাবিধ অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার সুবিদখালী সরকারি কলেজর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ আসাদুজ্জামান আজাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে।

প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করাতে ওই কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক মোঃ শামিম গত ১২ আগস্ট মির্জাগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।যাহার নং- ৪৩৫।এছাড়া ইসমাইল হোসেন নামে কলেজের এক অফিস সহায়ককে অন্যায়ভাবে ঝাড়ু দ্বারা বেধরক মারপিটের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ইসলামাইল হোসেন চাকুরি হারানোর ভয়ে নিরবে অধ্যক্ষের অন্যায়, শারীরিক নির্যাতন মেনে চুপ থাকেন, তারপরেও জাতীয়করণে পদসৃজনের সুপারিশের ভিতরে রাখা হয়নি তাকে।

অর্থ আত্মসাৎতের বিষয়ে কলেজের বর্তমান সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায়। কলেজের অধ্যক্ষের সেচ্ছাচারিতা ও অর্থ আত্মসাৎতের বিষয়ে গত ২২ জুন জেলা প্রশাসক বরাবর এ প্রতিবেদন পাঠান। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকতাদের যার অনুলিপি দেওয়া হয়।

প্রতিবেদন আলোকে জানা যায়, কলেজের নিজস্ব ১২ টি দোকান ঘর রয়েছে। যার আয়-ব্যয়ের সুনির্দিষ্ট কোন হিসেবে নেই। দোকান ভাড়ার টাকা নেই কোন একাউন্টেও। এছাড়া ব্যয়ের বিবরণ দাখিল করলেও আয়ের কোন যৌক্তিক বিবরণী দাখিল করতে পারেননি তিনি। এমনকি বিভিন্ন স্তরের/বর্ষের শিক্ষার্থী ভর্তি, ফরম ফিলাপ এবং পরীক্ষা সংক্রান্ত আয়-ব্যয়ের হিসেব অধ্যবদি দাখিল করতে পারেননি। নির্ধারিত ফি এর অতিরিক্ত ফি আদায়েরও অভিযোগ রয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও জানাযায়, প্রতিষ্ঠানের আর্থিক স্বচ্ছলতার ক্ষেত্রে সকল উৎস হতে আয়ের অংশ নির্দিষ্ট একাউন্টে জমা হবে এবং নিরিক্ষা কমিটির মাধ্যমে ব্যয় অনুমোদনপূর্বক উত্তোলন করা যাবে। অথচ নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে অধ্যক্ষ নামে মাত্র কিছু শিক্ষক নিয়ে একের পর এক কমিটি করে প্রতিষ্ঠানের অর্জিত আয় সমুহ খরচ করে থাকেন শুধু সরকারি নির্ধারিত আংশ ফান্ডে জমা করেন। ২০১৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারীতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে শুরু হয় তার রামরাজত্ব।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, কলেজ থেকে অবৈধ পন্থায় হাতিয়ে নেওয়া অর্থ দিয়ে তিনি পটুয়াখালী শহরে পাঁচতলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন এবং ২৬লক্ষ টাকার গাড়ি কিনে নিজে ও পরিবারের জন্য ব্যবহার করেন। এদিকে তার বিরুদ্ধে দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

কলেজের বিভিন্ন শিক্ষক –কর্মচারী ও অভিভাবক সূত্র জানাযায়, এইচএসসি শ্রেণিতে সরকার ধার্য্যকৃত ফি ১ হাজার হলেও তিনি এক্ষেত্রে ২ হাজার ৭০০ টাকা নির্ধারন করেন। একই ভাবে ডিগ্রীতে ভর্তি ফি ৪৮৪ টাকার স্থলে ২ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়েছে। অন্যদিকে অনার্সের ভর্তি ফি ৪৮৫ টাকার পরিবর্তে ৪ হাজার ৬০০ টাকা নেওয়া হয়ে থাকে। কেবলমাত্র কলেজের ভর্তির ক্ষেত্রেই নয় তার ফি বানিজ্য চলে অন্যান্য ক্ষেত্রেও। যেমন এইচএসসি (বিএম) ফরম পূরণ ফি সরকার নির্ধারিত ৭০০ টাকা হলে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকা আদায় করেন। অনার্স ১ম বর্ষ থেকে ৪র্থ বর্ষ পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ফরম ফিলাপ ফি ৮০০,১৩০০, ১৬০০,ও ২,৮০০ টাকা হলেও সুবিদখালী সরকারি কলেযে আদায় করা হয় যথাক্রমে ৫,১০০,৬,০০০, ৬,২০০-ও ৭,১০০ টাকা। একইভাবে ডিগ্রীর ১ম বর্ষ থেকে ৩য় বর্ষ পর্যন্ত ফরম ফিলাপ ফি পর্যায়ক্রমে ৪০০, ৮০০ ও ১২০০ টাকার জায়গায় আদায় করা হয় ৪,০০০, ৫,২০০ ও ৬,০০০ টাকা।অন্যদিকে অনার্স শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন ৮০ টাকার জায়গায় আদায় করা হয় ৫০০ টাকা। কোন প্রকার মানি রিসিভ বা রশিদ ছাড়া গরিব অসহায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কিছু টাকা শিওর ক্যাশ এবং কিছু টাকা নগদ আদায় করা হয়। নগদ টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তা আত্মসাৎ করেঝেছন বলে অভিযোগ রয়েছে।

দূর্নীতির স্বার্থে অবৈধ নিয়োগে জাল কাগজপত্রের সাহায্যে এবং নিয়ম বিধি ভঙ্গ করে যে সব শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন, তাদের সাহায্যে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া কলেজের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্মচারীদের মাষ্টার রুলে নিয়োগ দেওয়ার নিয়ম না থাকলেও তা মানছেন না। কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অফিস সহকারী আব্দুল মান্নানকে নিয়োগ দিয়ে তার মাধ্যমে কলেজের বিভিন্ন বিভাগের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। মাষ্টার রুলে রুনা লায়লা নামের এক মহিলাকে নিয়োগ দিয়ে কলেজের অধ্যক্ষ ভবনে তুলে কলেজের টাকায় বাজার সদয় করে অর্থ অপচয় করার অভিযোগ রয়েছে। বিনা ভাউচারে নির্বাহী অফিসারের কাছে ভূয়া নোট দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

ফ্রি-স্টাইলে অর্থ আত্মসাৎ– সুবিদখালী সরকারি কলেজের ইসলাম শিক্ষা বিভাগের ৫০ হাজার টাকা সোনালী ব্যাংকের সুবিদখালী শাখা থেকে নিয়ম বর্তিভুতভাবে ভাঙ্গিয়ে তা আত্মসাৎ করেছেন বলে জানাগেছে। কলেজের পূর্ববর্তী অধ্যক্ষ চলে যাওয়ার সময় কলেজে সাধারণ তহবিল, সংরক্ষিত তহিবল ও এফডিআর সহ মোট ২৭,০০,০০০ টাকার ফান্ড রেখে যান। ২০১৯ সালের ৪ জুলাইতে দেখাযায়, জনতা ব্যাংকে কলেজের ৯০নং অ্যাকাউন্টে মাত্র ১,৬৯,০০০ টাকা রয়েছে। অথচ এই ফান্ন্ড সাড়ে চার লক্ষ টাকার নিচে নামার নিয়ম নেই। এই নিয়ম ভাঙ্গলে কলেজের স্বীকৃতি বাতিল হয়ে যাওয়ার কথা। নিয়ম ভেঙ্গে তিনি একাউন্ট থেকে ২,৫০,০০০ টাকা এবং পটুয়াখালী জেলা পরিষদের ২,০০,০০০ টাকা তুলেছিলেন কলেজের পুরাতন ভবন রংয়ের কাজ ও মেরামত করাবেন বলে। আজ পর্যন্ত সে কাজ হয়নি। রূপালী ব্যাংকের শাখায়শিওর ক্যাশের একাউন্ট এবং অগ্রনী ব্যাংকের সুবিদখালী শাখায় উপবৃত্তির টিউশন ফি অ্যাকাউন্টে থেকে নিজেই স্বাক্ষর দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলেছেন। এক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষরের বিধান থাকলেও তিনি তা মানেনি। তিনি বিভিন্ন ইয়ারের প্রমোশন বাবদ ১ হাজার ও প্রশংসা ফি বাবদ ৫০০ টাকা প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আদায় করে সে অর্থ ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজে আত্মসাৎ করেছেন। কলেজের পুরাতন ইট, টিন, কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ ও ফ্যানসহ বিভিন্ন মালামাল বিক্রি করে আত্বসাত করেন।

এদিকে, ১০-১৫ লক্ষ টাকায় গড়া অধ্যক্ষ ভবনে বিনা রেজুলিউশনে বাসা ভাড়া কর্তন না করে ব্যবহার করছেন। অনার্স থেকে অর্জিত টাকা ফান্ডে জমা না দিয়ে হাতে হাতে নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন এমনকি সম্মানী বাবদ ২০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। কমিটি তাকে ভারপ্রাপ্তের দায়িত্ব দিলেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অথবা মাউশির অনুমতি প্রয়োজন হয়, কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও মাউশির অনুমতি গ্রহণ না করে অবৈধভাবে তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

নির্যাতনের স্বীকার অফিস সহায়ক মোঃ ইসলাম হোসেনের সাথে কথা বললে, তিনি বলেন, আমি গরীব মানুষ। ১ বছর চাকুরী আছে। কিছু বললে চাকরিটা থাকবে না। কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক মোঃ শামিম বলেন, কলেজ জাতীয় করন বিষয়ে এক জরুরি সভায় অধ্যক্ষ বলেন আমার একক সিদ্ধান্তে সব হবে। যেভাবে বলবো তাই হবে। এতে আমি প্রতিবাদ করলে অপমান করে রুম থেকে বাহির ও প্রাণনাশের হুমকি দেন।

অভিযুক্ত সুবিদখালী সরকারি কলেজর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, এসব বিষয়ে আমার জানা নাই। আমি কোন ধরনের নিয়ম ভঙ্গ ও অর্থ আত্মসাৎ করিনি।

সাধারণ ডায়েরি বিষয়ে মির্জাগঞ্জ থানার ওসি আনোয়ার হোসেন তালুকদার বলেন, ঘটনা তদন্ত করে দেখা হবে।

কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাঃ তানিয়া ফেরদৌস বলেন, আমার বক্তব্য প্রতিবেদন আকারে জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেনই বক্তব্য।

পটুয়াখালী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মুহাঃ মুজিবুর রহমান বলেন, প্রতিবেদনটি ভালোভাবে দেখা যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ( শিক্ষা) নঈম উদ্দীন জানান, আমি ৩ দিন হয় এ বিভাগের দায়িত্ব গ্রহন করছি। রবিবার অফিসে যেয়ে প্রতিবেদনটি দেখে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2025
Theme Customized By BreakingNews