নির্বাচনের সময়ে প্রার্থীরা সবাই এখানে সাঁকোর পরিবর্তে ব্রীজ নির্মানের আশ্বাস দেন কিন্তু নির্বাচন শেষ হলে আমাদের কথা কেউ মনে রাখে না।
মোঃ ইলিয়াস হোসাইন
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়নের কিসমতপুর গ্রামের মো. খোকন খন্দকার বাড়ির সামনে পাঁচকরি খালের ওপর ঝুঁকিপূর্ন বাশেঁর সাঁকো পারাপারে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। যুগের স্রোতে বিভিন্ন জনপদের চেহারা পাল্টালেও প্রায় একযুগেও এখানে বাঁশের সাঁকোটির স্থানে নির্মিত হয়নি কোন ব্রীজ।
সম্প্রতি কিসমতপুর খাটাসিয়া গ্রামীন সড়কটি পাঁকা হলে যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত হলেও একটি ব্রীজের অভাবে কেওয়াবুনিয়া, ভয়াং, ঝোপখালী, চালিতাবুনিয়া ও কিসমত খাটাসিয়াসহ ৫টি গ্রামের মানুষের ভোগান্তি¥র যেন শেষ নেই। একটি সেতুর জন্য দ্বিখন্ডিত হয়ে আছে দক্ষিন কেওয়াবুনিয়া ও কিসমত খাটাশিয়াসহ ৫ গ্রামের সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থা। এতে বর্ষার সময়ে সাঁকো দিয়ে চলাচলে ভোগান্তি¥তে পড়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরাসহ প্রায় পাঁচ গ্রামের পথচারীদের।
খালের উপর সংযোগ সেতু না থাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়,মাধ্যমিক স্কুল,কলেজ ও মাদ্রসার শিক্ষার্থী এবং
জনসাধারন চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবীর পরও বিদ্যালয় সংলগ্ন পাচকড়ি খালের উপর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সংযোগসেতু নির্মানের উদ্যোগ গ্রহন করেনি। বর্তমানে জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে বাঁশের তৈরী সাকোঁ দিয়ে শিক্ষার্থীসহ জনসাধারনকে চলাচল করতে হচ্ছে।
খালটি প্রস্থের দিক দিয়ে এতটা বড় না হলেও বর্ষা মৌসুমে ঠিকই খরস্রোতা নদীতে রূপান্তি¥ত হয়। ফলে বর্ষা মৌসুমে কোন মতেই সাঁকো দিয়ে চলাচল করা সম্ভব হয় না। বাঁশের সাঁকো পার হয়ে শিংবাড়ি, কাকড়াবুনিয়া, গাবুয়া ও গাজীপুরা বাজারে, কিসমত খাটাশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,দেলোয়ার হোসেন কলেজ, পশ্চিম কাকড়াবুনিয়া গালর্স স্কুল, গাবুয়া জনতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উপজেলা সদর হাসপাতালে এই বাঁশের সাঁকো দিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে শিক্ষার্থী সহ এলাকাবাসীদের।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কিমপতপুর গ্রামের পাঁচকরী খালের উপর গ্রামবাসীদের উদ্যেগে সুপারি ও বাঁশ দিয়ে সাঁকোটি নির্মাণ করা হয় প্রায় এক যুগ বছর আগে। এর আগে ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার হত এ এলাকার মানুষ। উপজেলার কিমত খাটাসিয়া গ্রামের পাঁচকড়ি খালের ওপর ব্রিজ না থাকায় দুথপারের মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয় মো. জাহিদ হোসেন ও নয়ন কবিরাজ বলেন, এ গ্রামে পাঁকা সড়ক নির্মান হয়েছে। কিন্তু এখানে ব্রীজটি নির্মান না হওয়ার অভাবে শিক্ষা, চিকিৎসা ও কৃষি ক্ষেত্রেও গ্রামের লোকজনকে নানা সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। এ নড়বড়ে সাকোঁ দিয়ে প্রতিদিন স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী,কৃষক, ব্যবসায়ী, চাকরীজীবি,হাট-বাজারের লোকজন পারপার হচ্ছে।
কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক মহিলা মেম্বর মোসাঃ ফারজানা ইয়াসমিন বলেন, পাঁচকরি খালের উপর সাঁকো দিয়ে বিভিন্ন গ্রামের মানুষ চলাচল করে থাকে। অনেক সময়ে পথচারীরাসহ কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সাঁকো পারাপারে পা ফসকে খালে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়।
নির্বাচনের সময়ে প্রার্থীরা সবাই এখানে সাঁকোর পরিবর্তে ব্রীজ নির্মানের আশ্বাস দেন কিন্তু নির্বাচন শেষ হলে আমাদের কথা কেউ মনে রাখে না। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে লোকজন এসে ৭-৮ বছর আগে পরিদর্শন করেন এবং সাকোঁটি মেপে গেছেন। অথচ কয়েক বছর ফুরিয়ে গেলেও ব্রীজ আর নির্মান হয়নি। এখানে একটি ব্রীজটি নির্মিত হলে এ এলাকার মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আশিকুর রহমান জানান, সাঁকো পারাপার ঝুঁকিপূর্ন। তবে সরেজমিনে পরিদর্শন করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।