প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা মঙ্গলবার এই মন্তব্য করে বলেছেন, ‘বিএনপি জাতীয় নির্বাচন (৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত) বানচাল করতে নেমেছিল। তাদের কিছু (বিদেশী) প্রভু আছে। তারা বাংলাদেশের জনগণকে চেনে না। প্রভুদের পরামর্শে বাংলাদেশে টিকে থাকা সম্ভব হবে না।’
বাসস জানায়, জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ে শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানাতে গণভবনে দলটির নেতা-কর্মীরা জড়ো হলে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে ও প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা তার বড় বোন শেখ হাসিনাকে ফুলের তোড়া উপহার দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কোনো (বিদেশি) প্রভু নেই। বাংলাদেশের জনগণই আমাদের প্রভু ও শক্তি। জনগণের বিশ্বাস ও আস্থাই আমাদের শক্তি।’তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করতে বিএনপি-জামায়াত চক্রের ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। চমৎকার এই নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭ জানুয়ারির নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ১৯৭৫ পরবর্তী নির্বাচনের মধ্যে সদ্য অনুষ্ঠিত এই ৭ জানুয়ারির নির্বাচন ছিল সম্পূর্ণ অবাধ, সুষ্ঠু, সুশৃঙ্খল, অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতামূলক। তিনি বলেন, নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে তাঁরা ভোটের দ্বার উন্মোচন করেছেন। শেখ হাসিনা আরো বলেন, দল মনোনীত অনেক প্রার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছে পরাজিত হয়েছেন, যদিও তারা মনে করেছিলেন তারা জয়ী হবেন।
দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভেদের ফায়দা লোটার জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে উল্লেখ করে-আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেটকে সম্মান দেখিয়ে, সবকিছু ভুলে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করুন।’প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে নারীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের প্রশংসা করে বলেন, এটি নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার ফলাফল।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি। এর আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনাকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নির্বাচন বর্জন করায় তাদের নেতাকর্মীরা এখন হতাশ হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন বানচালের জন্য বিএনপি-জামায়াত চক্র বারবার চেষ্টা করেছে। ‘তবে তারা ব্যর্থ হয়েছে,’ উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় এবারও তাদের ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নির্বাচন বানচাল করার জন্য জনগণকে পুড়িয়ে হত্যা করছে এবং সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তির ক্ষতি করছে। তিনি আরো বলেন, যাদের মনুষ্যত্ব আছে তারা মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করতে পারে না। তিনি বলেন, নির্বাচনে কতিপয় রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ না করা কোন ব্যাপার নয়, জনগণের অংশগ্রহণই গুরত্বপূর্ণ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ যদি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় না চায়, আমরা তাদের ম্যান্ডেট মেনে চলব। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় আসায় জনগণ দেড় মাসের মধ্যে বিএনপি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল। তারা ২০০৬ সালে ভোটার তালিকায় ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার অন্তর্ভুক্ত করার পর কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করেছিল এবং দেশবাসী তাদের চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ কোনো অন্যায়কে কখনোই মেনে নেয় না। আমাদের সময় ডটকম