।। লক্ষ্মণ চন্দ্র মন্ডল।।
১৯৪৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি বরেণ্য এই মুক্তিযোদ্ধা যশোর সদরের ইছালী গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা : মো. শামসের আলী মোল্যা। মাতা রাহেলা বেগম। পিতা মাতার ১০ সন্তানের মধ্যে তিনি ২য়। তিনি নিজ গ্রামের স্কুলে লেখাপড়া শুরু করে ৮ম শ্রেণি শেষ করেন।
১৯৬৩ সালে তিনি ২০ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। চট্টগ্রাম সেনানিবাসে ট্রেনিং এর পর পাকিস্তানের পেশোয়ার জেলার বান্নু সেনানিবাসে পাঠানো হয়। ১৯৬৫ সালে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হলে প্রথম বেঙ্গল রেজিমেন্টকে অর্ডার দিলে বিভিন্ন সেক্টরে তিনি যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। ঐ যুদ্ধে ফিল্ড মার্শাল আয়ূব খান তার কাজের প্রসংশা করে লাহোরে ৩ একর জমি দেবার সিদ্ধান্ত নিলে নিজ দেশ ছেড়ে লাহোরে জমি নিতে অস্বীকার করায় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান নিজ এলাকায় ৩ একর জমি সরকারি ভাবে তাকে প্রদান করা হয়। ১৯৬৮ সালে তাঁকে পাকিস্তান থেকে যশোর সেনানিবাসে স্থানান্তর করা হয়।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধ ঘোষণা দেবার পর যশোর সেনানিবাস থেকে যুদ্ধ করতে করতে ভারতের বনগাঁ জেলায় অবস্থান নেন। তারপর ভারত থেকে ৩১ শে জুলাই হানাদার বাহিনীর উপর আক্রমন চালান। ঐ আক্রমণে তিনি আহত হলে তাকে গৌহাটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিতসার পর পুনরায় সিলেট জেলায় এমসি কলেজের সামনে পাকহানাদার বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হন। ১৪ই ডিসেম্বর সকাল ৮টায় ঐ যুদ্ধে তাঁর পায়ে গুলি লাগে। পুনরায় তাঁকে গৌহাটি হাসপাতলে তাঁকে নেওয়া হয়। ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে গৌহাটি হতে তিনি বাংলাদেশে আসেন। ১৯৮৭ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি তার সৈনিক জীবন থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদানের জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ”বীরবিক্রম” উপাধীতে ভ্থষিত করেন। বর্তমান বীর বিক্রম নুরুল হক কৃষিকে আশ্রয় করে জীবন কাটিয়ে যাচ্ছেন। আমরা তাঁর দীর্ঘায়ু ও সুস্থ্যতা কামনা করি।
২০১২ সালের ৯,১০ও ১১ই মার্চ খাজুরা এম এন মিত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে “গাইদঘাট কৃষি প্রযুক্তি বাস্তবায়ন কেন্দ্র“ আয়োজিত গ্রামীন জীবনযাত্রা ও কৃষি প্রযুক্তি তথ্য,বীজ মেলার অনুষ্ঠান হয়। এই অনুষ্ঠানে দেশ তথা অত্র অঞ্চলের ৩০ জন গুনীজনের সম্মাননা প্রদান করা হয়। ্ওই সময় জীবদ্দশায় গুনীজন সম্মাননার মধ্যে গর্বিত বরেণ্য মুক্তিযোদ্ধা : বীরবিক্রম নুরুল হক ছিলেন অন্যতম একজন।