বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে আসছেন আগামী ২২ সেপ্টেম্বর। এরপর ২৬ সেপ্টেম্বর সকালে সাধারণ অধিবেশনে তার ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাইড লাইনে বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে বলে কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে। ৫ দিনের এই সফরে ব্যস্ত সময় কাটাবেন তিনি।
ড. ইউনূসের এই সফর নিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ দূতাবাস ও জাতিসংঘস্থ বাংলাদেশ মিশনের তত্ত্বাবধানে তাকে নাগরিক সংবর্ধনা দেয়ার প্রস্তুতি চলছে। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে ম্যানহাটনস্থ ম্যারিয়ট মারকুইস হোটেলে এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে নিউইয়র্কে কর্মরত একজন কূটনীতিক বলেন, ‘আমরা যা করছি ঢাকার নির্দেশে। তাদের আদেশেই এই সংবর্ধনার আয়োজন করা হচ্ছে। আমাদের হাতে দ্বিতীয় কোনো অপশন নেই। আর তা যদি হয়, সেটাও আসতে হবে ঢাকা থেকে।’
এদিকে সাবেক স্বৈরাচারী সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট কূটনীতিক ও কর্মকর্তাদের আয়োজনে সংবর্ধনা সভায় প্রবাসীরা যাবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
গত শনিবার প্রবাসী নাগরিক সমাজের ব্যানারে আয়োজিত সভায় বেশ কয়েকজন বক্তা বলেছেন, স্বৈরাচারের দোসর কূটনীতিকদের আয়োজনে আমরা শরিক হতে পারি না। তারা কয়েকদিন আগেও জয়বাংলা, জয় হাসিনা বলে বিভিন্ন জায়গায় বক্তব্য দিতেন। আমরা ছিলাম নিষিদ্ধ।
মিশন ও কনস্যুলেট ছিলো স্বৈরাচারদের দলীয় অফিস। তারা নাগরিক সংবর্ধনার নামে সাবোটাজ করতে পারে। ড. ইউনূসকে বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন করতে পারে। সার্বজনীন একটি নাগরিক সংবর্ধনা দেবার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা।
বক্তারা বলেন, ড. শওকত আলী, সাইয়িদ তারেক ও আবু তাহেরের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। তারা বলেন, একটি সমন্বয় কমিটি করে নাগরিক সংবর্ধনার আয়োজন করুন।
ড. শওকত আলী বলেন, আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। হল বুক দেয়া আছে। তবে প্রধান উপদেষ্টার অফিস কীভাবে চান তা দেখতে হবে। আমরা যোগাযোগ রাখছি। দু একদিনের মধ্যে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারবো।
কমিউনিটির মাদার সংগঠন বাংলাদেশ সোসাইটি এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মুহাম্মদ ইউনূসকে সংবর্ধনা দেবার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টার অফিসে আগ্রহ ব্যক্ত করে ই-মেইল করেছে তারা। কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদার সাথে সাক্ষাতে আগ্রহের কথা জানিয়েছেন সোসাইটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রব মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বলেন, ড. ইউনূস নির্দলীয় সরকার প্রধান। বাংলাদেশ সোসাইটিই নিরপেক্ষ ও সার্বজনীন একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের বৃহৎ প্ল্যাটফর্ম। আমরা তাকে উপযুক্ত সন্মান ও মর্যাদা দিতে প্রস্তুত।
এ দিকে জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনে কর্মরত একজন কর্মকর্তা বলেন, নাগরিক সংবর্ধনাটি সম্পূর্ণ সরকারি খরচে অনুষ্ঠিত হবে। এতে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের আর্থিক সহায়তা গ্রহণ করা হবে না। আমাদের লক্ষ্য একটি নিখুঁত সুন্দর অনুষ্ঠান সবার সহযোগিতায় মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাকে উপহার দেয়া। ঠিকানা