1. bdtelegraph24@gmail.com : বিডিটেলিগ্রাফ ডেস্ক :
  2. suma59630@gmail.com : ফাতেমা আকতার তোয়া : ফাতেমা আকতার তোয়া
  3. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  4. tarim7866@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
  5. wasifur716@gmail.com : Wasifur Rahaman : Wasifur Rahaman
প্রগতির ফুলঝুরি ও মূল্যবোধের ভাঙ্গন - বিডিটেলিগ্রাফ | Bangla News Portal, Latest Bangla News, Breaking, Stories and Videos
শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:৩৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
কক্সবাজারে ট্রেনের ধাক্কায় সিএনজি: নিহত ৫ ‘যে গাছে ফরহাদের ছবি আছে, সেই গাছের নিচে শপিং ব্যাগে টাকা রেখে যাবি’ জুলাই গণহত্যার বিচারের দাবিতে পঞ্চগড় জেলা ছাত্রশিবিরের “জুলাই দ্রোহ” বাঘারপাড়া ডিগ্রি কলেজের সভাপতি হিসেবে প্রথম সভা করলেন নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ শেরপুর–মৌলভীবাজার মহাসড়কে বাসের ধাক্কায় যুবক নিহত ‘কিলার গ্যাং’ প্যাডে ৫ লাখ টাকার চাঁদা দাবি, পুলিশের হাতে ৫ জন প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা ‘বৈষম্যমূলক’ নয়, ব্যাখ্যা দিল মন্ত্রণালয় ফ্লাইট এক্সপার্ট হঠাৎ বন্ধ, মালিক দেশত্যাগের অভিযোগ অভয়নগরে বিএনপির উদ্যোগে যৌথ প্রস্তুতিমূলক সভা এক বছর ম্যাচই খেলেননি, তিনিই বর্ষসেরা ক্রিকেটার

প্রগতির ফুলঝুরি ও মূল্যবোধের ভাঙ্গন

  • সর্বশেষ আপডেট : রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪
  • ২৬৬ জন খবরটি পড়েছেন

।। মোঃ মাসুম বিল্লাহ।।
প্রগতিশীল কথাটা নিয়ে কথা না বললেই নয়। বিশ্বায়নের বিষময় বিষয়ে পরিণত হয়েছে শব্দটি। ধর্ম নিয়ে যে যত বেশি গলাবাজি করতে পারে সে ততো বেশি প্রগতিশীল। তবে সেখানে কম যায় না নারী শব্দটি। পারিবারিক, সামাজিক এমনকি ব্যক্তিগত মূল্যবোধ যে কি তা প্রগতির গতিতে উড়ে চলে যাচ্ছে। আজ প্রগতির সংজ্ঞা বদলাচ্ছে। মানুষ সভ্য হচ্ছে, তাই দিন দিন আদিম মানুষের পোশাক আমাদের শরীরকে স্টাইলিস্ট, আধুনিক, রুচিশীল, ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যের অবস্থানকে দৃঢ় করছে!

প্রাগৈতিহাসিক যুগে পোশাক ছিল না বলে মানুষ উলঙ্গ থাকত, আর এখোন পোশাক পরে মানুষ উদোম দেখাতে।
প্রগতি শব্দের অর্থ জ্ঞানে বা কর্মে এগিয়ে চলা। অন্য ভাবে বলা যায় নতুন ধারা বা পদ্ধতি, যুগের চাহিদা, সামনে ধাবমান নীতি। আর প্রগতিশীল শব্দের অর্থ ক্রমে উন্নততর অবস্থা প্রাপ্ত হওয়া, যার স্বভাব এমন। যে ব্যক্তি সময়ের সাথে পরিবর্তনের ধারায় নিজেকে মানিয়ে চলতে পারে, যে আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্বাস করে ও ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যকে প্রাধান্য দেয় সেই প্রগতিশীল।

প্রগতি আর প্রগতিশীলের সাথে আর একটি শব্দের একটু ব্যাখ্যা না দিলে লেখাটা অধরা থেকে যাবে। আর সেটা হচ্ছে শালীনতা। উইকিপিডিয়া তথ্য মতে, শালীনতা হলো পোশাক ও আচারণের একটি ধরণ, যার উদ্দেশ্য অপরকে শারীরিক ও যৌন আকর্ষণে উৎসাহিত করণ থেকে বিরত থাকা। তবে এর মানদণ্ড ভৌগোলিক সীমানার সাথে বিচিত্র। তবু আজ থেকে ৫০ বছর পিছনে তাকালে প্রায় সমগ্র পৃথিবীর আসল চিত্র চোখে পড়বে। ১৯৬৮ সালে হারপাস বাজারে বয়সের সাথে সাথে মেয়েদের স্কার্টের ডায়াগ্রাম দেখানো হয়েছে।

পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, মুমিনদের (শব্দটি ব্যাখ্যা মুলক বিষয়) বলুন তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে ও লজ্জা স্থানের হিফাজত করে। এতে তাদের জন্য পবিত্রতা আছে। নিশ্চয়ই তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন ( সূরা – নূর।) রাসূল সঃ এর সম্মুখে একজন অন্ধ সাহাবী এলেন আর তখনি রাসূল সঃ তার স্ত্রীকে ঘরে যেতে বলেন। স্ত্রী জিজ্ঞাসা করেন, তিনি তো চোখে দেখেন না? রাসূল সঃ বললেন, তুমি তো দেখ। রামায়ণেও রাম চন্দ্র স্ত্রী সীতাকে এমনি নির্দেশ দিয়েছেন।

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলে শালীনতা বিষয়ে একটি নোটিশ দেওয়া হয়েছে,” সকল আবাসিক ছাত্রীদের জানানো যাচ্ছে যে, হলের অভ্যন্তরে দিনের বেলা অথবা রাতের বেলা কখনো অশালীন পেশাক( সালোয়ারের ওপর গেঞ্জি) পরে ঘোরা ফেরা অথবা হলের অফিসে প্রবেশ করা যাবে না। অন্যথায় শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য হল কর্তৃপক্ষ বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আদেশক্রমে কর্তৃপক্ষ” (সূত্র- প্রথম আলো, ২৪ আগস্ট ২০১৭ খ্যিঃ)। অথচ আজ প্রগতির নামে ছেলে মেয়েদের উদোম চলাফেরাকে ব্যক্তি স্বাধীনতা বলে মৌলিক অধিকারের পর্যায়ে নিতে ব্যস্ত।

আজকাল প্রগতি সীমাবদ্ধ; ধর্মকে সেকেলে বলে; না বুঝে ভুল বের করাটা আজ প্রগতি, নারীর উদোম স্বাধীনতাতে বিশ্বাস আজ প্রগতি, বেঁচে থাকার জন্য সততা বির্সজন প্রগতি, ক্যাফে রেস্টুরেন্টে জন্মদিন এনগেজমেন্ট পার্টি প্রগতি, বাবা মা আর বৃদ্ধাশ্রম প্রগতি, রেল রাস্তায় ইট, রডের বদলে বাঁশ, বালিশ কলমে আজ প্রগতি। প্রগতির লেজুড়বৃত্তি সিনেমার নায়ক এখোন বাসের ধর্ষক, থানার মধ্যে গুমরে কাঁদা মা মেয়ের সম্ভ্রম, সস্তায় যৌনতার স্বাদ নেওয়া ছা-পোষা দিনমজুর।

রিজেন্ট শাহেদ, ভেনন্টন টেরন্ট, চাল চুরি মাতব্বর, সুদখোর, ঘুসখোর পাতি মাতব্বর থেকে সোনারগাঁও হোটেলের বার ড্যান্সার, লাস ভেগাস, তসলিমা নাসরিন আর শেফুদা প্রগতির ধারক বাহক। তবে ইদানিং নতুন নতুন প্রগতি আর পাতিশিয়াল (প্রগতিশীলদের) চোখে পড়ছে। এখোন নব্য প্রগতি একটা মেয়ে বাইক চালিয়ে গাঁয়েহলুদ অনুষ্ঠানে এন্টি দিয়েছে। আর সাথে সাথে তার পিছনে লেগে গেল ধর্মভীরু, কাপুরুষ একদল লোক। যেখানে ধর্ম যার যার উৎসব সবার সেখানে জীবন যার যার ইচ্ছা তার হওয়া বাঞ্ছনীয় নয় কেন? জীবনে বিয়ে বারবার আসে না। কারো একবার কারো কারো আবার দুইবার তবে পাশ্চাত্যে তাও নেই। তাই বিশেষ দিনটিকে নতুনত্ব দিয়ে সাজাতে মানুষের চেষ্টার কোন কমতি নেই।

তাহলে কেন মানুষের এতো গাঁ জ্বলে। আমি মুকখো শুকখো মানুষ বাপু কিছুই বুঝি না (নচিকেতা)। মানুষ আজো সেকেলেই রয়ে গেল আধুনিক হতে পারলো না। আচ্ছা সত্যি কী মেয়েটা যা করেছে সেটা কী ব্যক্তি স্বাধীনতার মধ্যে পড়ে? আমরা কী কেউ পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রের বাইরে বাস করি যে সেটা ব্যক্তিগত হয়ে গেল। তবে কেন পড়েছি, no man can live alone. মানুষ সামাজিক জীব।

মনে পড়ে সেই রুপলালের ব্যক্তিগত গল্পটি, রুপলাল একবার একা থাকতে পরিবার ছেড়ে জঙ্গলে গিয়ে বাস করতে শুরু করলো। পরে ইঁদুর মারতে বিড়াল এভাবে সেখানে পরিবার গড়ে তুললো। ব্যক্তিগত কি তার সংজ্ঞা হার্টবার স্পেন্সার দিয়েছেন,” স্বাধীনতা মানে নিজের পছন্দমতো কাজ করা অন্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ না করে।” রাস্তা দিয়ে চলা আপনার ব্যক্তিগত কিন্তু আর এক জনের পথ ব্লক করে নয়।
আপনার রুমের মধ্যে আপনি ব্যক্তিগত, কিন্তু এখোন রুমও ব্যক্তিগত নেই,। সেখানে বউ নামক অব্যক্তিগত জিনিসও থাকে, থাকে তার পছন্দ অপছন্দ। সুতারং ব্যক্তিগত আর রুমেও নেই৷ কেননা কিছুদিন থেকে স্ত্রীর অনিচ্ছায় শারীরিক সম্পর্ক সেটাও নাকি ধর্ষণ। তাইলে কি আর থাকলো ব্যক্তিগত!

লেবু বেশি চটকালে নাকি তিতা হয়ে যায়। তাই আর না চটকায়। মোদ্দা কথা এই যে মেয়েটি ব্যক্তিগত মনে করে যা করেছে তা একটা নজির। যেমন ভারতে বাসে রেপ হলো কিছু দিন পরে আমাদের দেশে বাসে একইভাবে রেপ হলো। এমন নজির যা মানুষ নতুনত্ব শিখলো শুধু না, অ্যাপ্লাই করা শুরু করলো। এখানে ব্যক্তি ইচ্ছা অনিচ্ছা বড় নয় সামাজিক ম্যাসেজটা বড় করে দেখা উচিৎ। আর একজন কি সে পথে হাঁটবে, না কি এটা এক সময় রীতিতে পরিণত হবে। সানি লিওনকে দেখতে যাদের ভালো লাগে কিন্তু তাদেরি আবার নিজের মা, বউ, বোন, কন্যাকে সানি লিওন বানাতে ঘেন্না করে। আমরা ভালো না লাগা গ্রুপের মানুষ আর যারা ভালো লাগা গ্রুপে তাদের বলবো সানি লিওনেরও মা বাপ স্বামী আছে। তবে কোনটা সঠিক? আমরা যদি উত্তর কোরিয়ার দিকে তাকাই তবে কি দেখি, কিম জং উন তার ব্যক্তিগত দর্শন দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করে সেখানে কেবল তার ব্যক্তিগত বিষয় আছে আর কারো নেই। তাকে ফ্যাসিবাদী স্বৈরশাসক বলা হচ্ছে, কেন ব্যক্তিগত বলা হলো না? আজ যে কাজটি মেয়েটি করছে তা হয়তো তার জন্য আনন্দের কিন্তু তার দেখা দেখে আর যে কেউ করবে না তার গ্যারান্টি কী? হ্যাঁ, ধরলাম তার ব্যক্তিগত, তাহলে যারা সমালোচনা করছে সেটাও তার ব্যক্তিগত নয় কী?

ভয় হয়, নাজানি আবার নতুন কোন ঐশীর জন্ম হয়! কেন তবে আমাদের পিতারা এক পিতার জন্য উদ্বিগ্ন থাকবে? আমার মেয়ের এমন আবদার রাখতে সামাজিক মূল্যবোধের স্থান কোথায় ধোঁয়াশা হয়ে যাচ্ছে? এখানে প্রগতি কি আমাদের সাংস্কৃতি ভাঙ্গনের মধ্য দিয়ে পাশ্চাত্য সাংস্কৃতির জাগরণ। যদি তাই হয়, তবে তার ঘোর বিরোধিতা করা ছাড়া নিজের অস্তিত্ত্ব টেকে না।

লেখক-প্রভাষক (বাংলা), গাজিপুর রউফিয়া কামিল মাদ্রাসা, অভয়নগর, যশোর।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2025
Theme Customized By BreakingNews