যশোরের শিল্প ও বাণিজ্য শহর নওয়াপাড়ার প্রাণকেন্দ্রে গড়ে ওঠা অভয়নগরবাসীর স্বপ্নের ভৈরব সেতু থেকে খসে পড়ছে এ্যাপ্রোস ঢাল। তাছাড়া সেতু বরাবর এ্যাপ্রোস ঢালের গোড়ায় দেখা দিয়েছে ফাঁটল। যেকোন মুহুর্তে এ ঢালটি সম্পূর্ণরুপে খসে পড়ে সেতুটির চরম ক্ষতির সম্ভাবণা দেখা দিতে পারে এমনটাই আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
রোববার বিকালে সরেজমিনে ভৈরব সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেতুর পূর্বপাড়ে ব্রিজের একটি অংশে খসে পড়ছে এ্যাপ্রোস ঢাল। হঠাৎ করেই প্রায় ৪০-৫০হাত জায়গা জুড়ে গত ৪-৫দিন আগেই ভারি বর্ষণের পরপরই তা খসে পড়ে। স্থানীয়রা বলছেন সেতুটির পুরো এ্যাপ্রোস ঢাল জুড়েই এ ফাঁটল স্পষ্টরূপে দেখা দিয়েছে। ফাঁটলের কারণে সেতুতে বসানো পিলারগুলো নড়বড়ে হয়ে গেছে বলে এলাকাবাসী দাবি করেন। ফলে এলাকাবাসী ও পথচারীদের মাঝে একধরণের আতংক বিরাজ করছে। তাদের আশংকা এ্যাপ্রোস ঢাল খসে পড়ে সেতুটিকে দূর্বল ও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলতে পারে।
ইতোমধ্যে এলজিইডি’র উর্ধতন কর্মকর্তারা সেতুটি পরিদর্শণ করেছেন। তাদের দাবি স্লোব বেশি খাঁড়া হওয়ায় এ্যাপ্রোস ঢালে ফাঁটল দেখা দিতে পারে এবং তা খসেও পড়তে পারে। যত দ্রুত সম্ভব প্রধান কার্যালয়ের ডিজাইন সেল থেকে ডিজাইন বিশেষজ্ঞ এনে নতুন ডিজাইন করে তা পুনরায় স্থাপন করা হবে। ভৈরব সেতুর পশ্চিমপাড় এলাকার বাসিন্দা আজিম চৌধুরী বলেন, দায়সারা ভাবে এ্যাপ্রোস ঢাল স্থাপন করায় এবং ঠিকমতো পুডিং না দেওয়ায় সেতুটির বেহাল দশা দেখা দিয়েছে। তিনি আশংকা করেন যেকোন মুহুর্তে পুরো এ্যাপ্রোস ঢাল খসে পড়ে সেতুটি অধিক ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। যার ফলে স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।
এ ব্যাপারে এলজিইডির অভয়নগর উপজেলা প্রকৌশলী শ্যামল কুমার বসু বলেন, এ্যাপ্রোস ঢাল খসে যাওয়ার খবরে সম্প্রতি এলজিইডির যশোর জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম আনিসুজ্জামান ও খুলনাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রতন কুমার দাস সেতুটি পরিদর্শন করেছেন। ইতোমধ্যে ঢাকা থেকে ডিজাইনার চাওয়া হয়েছে। ডিজাইনার এনে নতুন করে সঠিকভাবে ডিজাইন তৈরী করে পুনরায় এ্যাপ্রোস ঢাল স্থাপন করা হবে।
জানতে চাইলে এলজিইডির যশোর জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম আনিসুজ্জামান বলেন, এ্যাপ্রোস ঢাল খসে পড়ায় প্রধান কার্যালয়ের ডিজাইন সেলে ডিজাইনার চাওয়া হয়েছে। ডিজাইনার এলে নতুন করে ডিজাইন তৈরী করে তা স্থাপন করা হবে।
প্রকাশ থাকে যে, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত এই ভৈরব সেতুটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে নির্মাণ করা হয়। ৭০২ দশমিক ৫৫মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৮ দশমিক ১ মিটার প্রস্থের এ সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৭৮কোটি ৩৯লাখ টাকা। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান হিসাবে সেতুটির নির্মাণ কাজটি সম্পন্ন করে ম্যাক্স গ্রুপের ম্যাক্স র্যাংকিং জয়েন্ট ভেঞ্চার নামক প্রতিষ্ঠানটি।